স্টাফ রিপোর্টার-
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সম্প্রসারিত টিকাদান কমসূচির আওতায় আজ রবিবার রাতে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ভাসমান মানুষদের করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এই টিকা প্রদান করা হয়।
ইপিআইয়ের আওতায় ভাসমান মানুষদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে সিটি করপোরেশন, ব্র্যাক, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন, সাজিদা ফাউন্ডেশন, নারী মৈত্রী, আইআরডিসহ সাতটি সংস্থা। এদের মধ্যে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ভাসমান মানুষদের খাবার প্যাকেট বিতরণ করে।
আজ রবিবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা গেছে, শত শত নারী-পুরুষ টিকা নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছে। তাদের ৯০ ভাগেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলেও তাদের একটি কার্ড করে দিয়ে টিকা দেওয়া হয়। সেই কার্ড দেখিয়ে পরবর্তী টিকাও নিতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।
টিকা নিতে আসা লোকজনের মধ্যে অনেকেই ছিল পঙ্গু। তাদেরকে হুইলচেয়ারে করে নিয়ে আসা হয়। তাদের বেশির ভাগই ভিক্ষুক। এ ছাড়া কুলিসহ বিভিন্ন কাজে জড়িত লোকজন টিকা নিতে আসে। শুধু কমলাপুর স্টেশনই নয়, আশপাশের দরিদ্র মানুষকেও টিকা নিতে আসতে দেখা যায়। টিকা নিতে পেরে তারা আনন্দ প্রকাশ করে। দেখা যায়, ৭০-৮০ বছরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাও টিকা নিতে এসেছেন।
টিকা নিতে আসা সোনিয়া নামের এক ভিক্ষুক জানান, তিনি ও তাঁর মা রাস্তায় থাকেন। ভিক্ষা করেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁদের জানানো হয়, রবিবার সন্ধ্যা থেকে করোনার টিকা দেওয়ার জন্য উপস্থিত থাকতে। এ ছাড়া মাইকিংও করা হয়েছে।
প্রথমে টিকা নেন প্রতিবন্ধী মো. রবিন। তিনি টিকা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যারা আমাকে টিকার ব্যবস্থা কইরা দিছে তাদের জন্য দোয়া করি। ’ এক প্রশ্নের জবাবে রবিন জানান, তিনি কমলাপুর এলাকায় পাঁচ বছর ধরে রাস্তায় থাকেন। ভিক্ষা করে জীবন চালান। তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই।
তিনি বলেন, ‘আমার জাতীয় পরিচয়পত্র নাই। ভাবছিলাম কোনো দিন টিকা নিতে পারুম না। কিন্তু আইজ টিকা নিতে পাইরা খুব ভালো লাগতাছে। ’
ব্র্যাকের কর্মকতা ড. শাহীনুল হক রিপন কালের কণ্ঠকে জানান, ব্র্যাক এই উদ্যোগে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। কমলাপুরে ভাসমান মানুষদের টিকা দেওয়ার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের মানুষকে টিকা দেওয়া হবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট