1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৮ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :

লতা মুঙ্গেশকর স্মরণে

শামসুন নাহার
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
ছবি- সংগৃহীত
আমি যখন খুব ছোট স্কুলেও যাই না তখন আমার আব্বা কেসেট প্লেয়ারে বাজাতেন অন্তরা চৌধুরীর ও লতা মুঙ্গেশকরের গান, রবীন্দ্র সংগীত, দেশাত্মবোধক গান, নজরুল সংগীত। আমিও গাইতাম,“ ইয়ে কন আয়া রওশন হে গেয়ি মেহফিল” , ইয়ে সমা সমা হে ইয়ে পেয়ার কা, বাহারো মেরি জীবন ভি সাওয়ারো, যাব পেয়ার কিয়া তো ডরনা কেয়া…. লতা মুঙ্গেশকরের এই গানগুলো, অর্থতো বুঝতামই না, তবুও এক গভীর বন্ধুত্ব হয়ে যায় এ গানগুলোর সাথে আমার। এমন গানের সুরের মুর্ছনায় হারিয়ে, মিষ্টি সুরের আবেশে মিশে দিনে দিনে আমার বেড়ে উঠা।
বড় হয়ে এখন যখন অর্থ বুঝি তখন মনে হয় এই অমূল্য
গানগুলো আর বই আমার মতো কত কোটি কোটি মানুষের প্রান, যারা স্বস্তি খুঁজে পায় গানের মাঝে, বইয়ের মাঝে, এমন মানুষ খাবার ছাড়া বাঁচতে পারবে কিন্তু এই গানগুলো আর বই ছাড়া হয়তো বাঁচবে না৷ এগুলো তাদের আত্মার খাবার। তাদের খাবার যোগানদাত্রী প্রিয় একজন মানুষ ভারত উপমহাদেশের সুরসম্রাজ্ঞী লতা মুঙ্গেশকর আজ ( ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২২) পাড়ি দিলেন অজানা ভুবনে।
লতা মুঙ্গেশকর (১৯২৯-২০২২), এমন একজন কিংবদন্তী শিল্পী ছিলেন যিনি ৩৬টি ভাষায় ৩০ হাজার গান গেয়ে তার মিষ্টি সুরের আবেশ ছড়িয়ে মানুষের হৃদয়ের গভীরে জায়গা করে নিয়েছিলেন।তিনি শুধু নিজেকে সংঙ্গীত অঙ্গনেই সীমাবদ্ধ রাখেননি তার অসাধারণ প্রেরণাদানকারী, উৎসাহপ্রদানকারী ব্যক্তিত্বকে। তিনি ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা।১৯৮৩ সালে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে বিশ্বকাপ জেতার আগে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য তিনি একটি কনসার্ট করেন এবং সেখান থেকে পাওয়া ২০ লক্ষ রূপী তিনি তুলে দেন ক্রিকেটারদার জন্য। ক্রিকেট তার প্রিয় খেলা ছিল। তাদের উৎসাহ প্রদান, অভিনন্দন দিয়ে তিনি তার জীবদ্দশায় ক্রিকেটের সাথে জুড়ে ছিলেন।তিনি একসময় ভারতের রাজ্যসভার সদস্যও ছিলেন।
গানের ভুবনে তারই উদ্যোগে ভারতে চালু হয়েছিল শ্রেষ্ঠ প্লেব্যাক সিঙ্গার মহিলা ও পুরুষ ক্যাটাগরীতে পুরস্কার প্রদান।নতুন প্রতিভার সন্ধান এবং তাকে তার প্রতিভার সাথে পরিচয় করানো তার একটি অসাধারণ গুণ ছিল। তারই অনুপ্রেরণায় তার সাথে গান করেন খোদ অমিতাভ বচ্চন, তিনি অভিনেতার পাশাপাশি একজন প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে লতা মুঙ্গেশকরের সাথে কাজ করেন। এমন হাজারো শিল্পীদের তৈরী ও প্রেরণাদানকারী ছিলেন আমাদের লতা মুঙ্গেশকর।
বাংলা গানের সাথেও তার ছিল গভীর সম্পর্ক। তার গাওয়া বাংলা গানঃ আকাশ প্রদীপ জ্বলে, নিঝুম সন্ধ্যায় পান্হ পাখিরা,
কি লিখি তোমায়, ও বাঁশি কেন গায়, আষাঢ় শ্রাবণ মানে নাতো মন, ও আমার ময়না গো, সাত ভাই চম্পা জাগোরে, চন্দ্র যে তুই
সূর্য যে তুই, রঙ্গিলা বাঁশিতে কে ডাকে – এ গানগুলো আমার সময়ে বা আমার বাবা মায়ের সময়ে শুনেনি, আর তার সুরের প্রশংসা করেনি, গানপ্রেমীদের মাঝে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুস্কিল হবে।
লতা মুঙ্গেশকরের একটি গান “ এ মেরী ওয়াতন কি লোগো যারা
আঁখ মে ভরলো পানি” কাঁদিয়েছিল ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুকে। তাকে ডেকে সম্মান জানান তিনি। লতা মুঙ্গেশকর ভারতীয় সংগীত অঙ্গনে এক শ্রদ্ধার নাম, এক ঐশ্বরিক প্রতিভার নাম যাকে ভূষিত করা হয় ২০০১ সালে “ভারত রত্ন” পুরস্কারের সম্মানে।তাকে আখ্যা দেয়া হয় নাইটিংগেল অফ ইন্ডিয়া নামে।
কিছু মানুষ এমন হয় তাদের আমরা সরাসরি চিনি না,
তবুও তাদের সাথে আমাদের গভীর পরিচয় থাকে তাদের কাজের মাধ্যমে। তেমনি একজন লতা মুঙ্গেশকর, তার সুললিত কন্ঠস্বর আমাদের আচ্ছন্ন করে রেখেছিল গভীর মুগ্ধতায়। এতদিন তিনি ছিলেন, তার গানও ছিল পাশাপাশি।আজ তিনি নেই তবুও আমাদের জীবনের অংশ হয়ে থাকবে তার অমর সৃষ্টি তার গান গুলো।
আজ আমাদের সবার প্রিয় গানের পাখি লতা মুঙ্গেশকর হারিয়ে গেল। উনার জন্য গভীর শোক ও শ্রদ্ধা। তার জন্য শোক ও শ্রদ্ধা জানাতে উপস্হিত হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিতাভ বচ্চন সহ পুরো ভারতের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি। তার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সহ আরো অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে লক্ষ কোটি শোক বার্তা এই কিংবদন্তীর মহাপ্রয়াণে যিনি গাইতেন “ মেরি আওয়াজ হি পেহচান হে”। তার আত্মার শান্তি কামনা করি যদিও তার সৃষ্টি অমর, তার গানগুলো অমর থাকবে
শ্রোতাদের মুগ্ধ করবে সবসময়, তিনিও বেঁচে থাকবেন সুরের ভুবনে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews