বাইবেলের আদি পুস্তকের ১১: ১-৯-এ টাওয়ার অব বাবেল বা ব্যাবিলনের টাওয়ারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্ণনা অনুযায়ী, মহাপ্লাবনের পরে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ মানবতা, একক ভাষায় কথা বলতো এবং তারা পূর্ব দিকে শিনারের প্রস্থান করে। সেখানে তারা একটি শহর নির্মাণ করে, যেখানে তারা স্বর্গে পৌঁছানোর জন্য একটি উঁচু টাওয়ার নির্মাণ করে। ঈশ্বর, তাদের শহর ও টাওয়ার পর্যবেক্ষণ করে তাদের কথাবার্তাকে বিভ্রান্ত করে দেন যাতে তারা আর একে অপরকে বুঝতে না পারে এবং তারা সারা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
কিছু আধুনিক পণ্ডিতরা একে পরিচিত কাঠামোর সাথে যুক্ত করেছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে এতেমেনাঙ্কি, একটি জিগুরাট যা মেসোপটেমিয়ার ব্যাবিলনের দেবতা মারডুককে নিবেদিত করা হয়েছে।
মহাপ্লাবনের পরে সমস্ত পৃথিবী এক ভাষাতে কথা বলত। সমস্ত মানুষ একই শব্দভাণ্ডার ব্যবহার করত। সেই লোকেরা পূর্ব দিক থেকে ঘুরতে ঘুরতে শিনিয়র দেশে এসে সমতল ভূমি পেল। তারা সেখানে বসবাস শুরু করল।
তারা বলল, “আমরা মাটি দিয়ে ইঁট তৈরী করব, তারপর আরও শক্ত করার জন্যে ইঁটগুলো পোড়াব।” তখন মানুষ পাথরের বদলে ইঁট দিয়ে বাড়ী তৈরি করল। আর গাঁথুনি শক্ত করার জন্যে সিমেন্টের বদলে আলকাতরা ব্যবহার করল।
তারা বলল, ‘এস আমরা আমাদের জন্যে এক বড় শহর বানাই। আর এমন একটি উঁচু স্তম্ভ বানাই যা আকাশ স্পর্শ করবে। তাহলে আমরা বিখ্যাত হব এবং এটা আমাদের এক সঙ্গে ধরে রাখবে। সারা পৃথিবীতে আমরা ছড়িয়ে থাকব না।’
সেই শহর আর সেই আকাশচুম্বী মিনার দেখতে প্রভু পৃথিবীতে নেমে এলেন। মানুষ কী কী তৈরি করেছে সেসব প্রভু দেখলেন।
প্রভু বললেন, ‘সব মানুষ একই ভাষাতে কথা বলছে। আর দেখতে পাচ্ছি য়ে এসব কাজ করার জন্যে তারা ঐক্যবদ্ধ। তারা কী করতে পারে এ তো সবে তার শুরু। শীঘ্রই তারা যা চায় তাই করতে পারবে।
তাহলে এস আমরা নিচে গিয়ে ওদের এক ভাষাকে নানারকম ভাষা করে দিই। তাহলে তারা পরস্পরকে বুঝতে পারবে না।”
সুতরাং প্রভু সমস্ত লোকেদের সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিলেন। ফলে মানুষ আর সেই শহর তৈরির কাজ শেষ করতে পারল না।
এই সেই স্থান যেখানে প্রভু সমস্ত পৃথিবীর এক ভাষাকে অনেক ভাষাতে বিভ্রান্ত করলেন। তাই এই স্থানটির নাম হলো বাবিল বা বাবেল (অর্থ: বিভ্রান্তি)।
এইভাবে প্রভু তাঁদের সেই স্থান থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিলেন।