আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরালোভাবে শুরু করতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের তাগিদ দিয়েছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘অন্যান্য দল যা-ই করুক, আমরা এখন থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দেব। ’
আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, সভায় শেখ হাসিনা নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রস্তুতির ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, কভিডের কারণে দলের তৃণমূলের সম্মেলন যথাযথভাবে করা যায়নি। কভিড পরিস্থিতির কারণে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারি বিধি-নিষেধ চলবে। এরপর দলের তৃণমূলের সম্মেলন শুরু করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা যে সাংগঠনিক জেলাগুলোর দায়িত্বে আছেন, সেখানে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন। সংগঠন গোছানোয় ভূমিকা রাখবেন। ’
শেখ হাসিনা দলের নেতাদের বলেন, তৃণমূলে সম্মেলনের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নেতাদের সামনে আনতে হবে। দলের মধ্যে যেসব আগাছা আছে, তা নির্বাচনের আগেই উপড়ে ফেলতে হবে।
সভার সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আশা করি জনগণ আমাদের ভোট দেবে। কারণ একটা দেশকে আমরা বদলে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে; জনগণের ওপর আমাদের আস্থা আছে। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা সংকটে বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে আমরা স্থিতিশীল রেখেছি। বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৯৪ শতাংশ এবং মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৫৯১ মার্কিন ডলার। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আজ আমরা ক্ষমতায় বলে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে। দেশের কেউ গৃহহীন থাকবে না; শতভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। ’
সভায় অন্যদের মধ্যে বত্তৃদ্ধতা করেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খায়রুজ্জামান লিটন, কামরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান।
সার্চ কমিটির নাম প্রস্তাব
সূত্র জানায়, বৈঠকে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের কাছে নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির কাছে নাম জমা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, মূলত ইসির নাম প্রস্তাবের জন্যই আজকের সভা ডেকেছি। কাজটি দ্রুত শেষ করতে চাই। সভায় উপস্থিত সবাইকে সিইসিসহ ১০টি করে নাম প্রস্তাব করতে বলেন। এ জন্য নেতাদের ৩০ মিনিট সময় দেওয়া হয়।
সভাপতিমণ্ডলীর প্রত্যেক সদস্য কাগজে লিখে ১০টি করে নাম জমা দেন। এ তালিকায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, আমলা, সেনা কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম প্রাধান্য পেয়েছে।
র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞায় ক্ষোভ : সভায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কয়েকজন কর্মকর্তা ও সংস্থাটির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হয়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের নিজেদের দেশেই তো প্রচুর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটে। তারা আমাদের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে না। ’
নাসিক নির্বাচনে দলের নেতাদের ভূমিকার প্রশংসা : সভায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের ভূমিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ হারাতে পারবে না। এই নির্বাচন বিদেশিরা খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। তারা বসে ছিল ভুল ধরার জন্য। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সেলিনা হায়াত আইভী ও শামীম ওসমানকে কঠোর বার্তা দিয়েছিলাম যেন কেউ কারো বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনো কথা না বলে। দুজনই মুখ বন্ধ রেখেছিল। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। ’
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট