কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দরে এতদিন ভারত ও ভুটান থেকে আনা পণ্য আমদানির কার্যক্রম চললেও এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি হলো। এর ফলে পূর্ণাঙ্গ বন্দরের রূপ পাচ্ছে ঐতিহাসিক চিলমারী বন্দর।
সোমবার সান আবিদ-১ নামের একটি ভেসেলে করে চিলমারী নৌবন্দর থেকে ২৭ মেট্রিক টন ঝুট রপ্তানি করে শেরপুরের তুলার মিল নামক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশি পণ্য নিয়ে নৌযানটি যায় ভারতের ধুবড়ি নৌবন্দরে।
২০১৭ সালে চিলমারী সফরে এসে এই ঐতিহ্যবাহী নৌবন্দরটি চালুর প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর একই বছর চিলমারী নৌবন্দরের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তৎকালীন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। এ সময় চিলমারী নৌবন্দরের উন্নয়নের জন্য প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর থেকে ভারতের ধুবড়ি ট্রানজিট ব্যবহার করে কেবল ভুটান থেকে ক্রাস্টন পাথর ভেসেলে আনার মাধ্যমে আমদানি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। ছয়-সাত মাস ধরে শুধু ভারত থেকে রৌমারী ও চিলমারী নৌবন্দরে পাথর আমদানি কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এ প্রক্রিয়ায় প্রতি মাসে গড়ে ৩০টি ভেসেলে করে প্রায় সাড়ে চার হাজার ক্রাস্টন পাথর আমদানি করা হয়ে থাকে। বন্দরটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পেলে ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা রাজ্যসহ ভুটান ও নেপালের সাথে পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ বাড়বে। এতে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে চিলমারী নৌবন্দর।
এ বিষয়ে লিজেন্ড কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান মমিন বলেন, ‘প্রথম দফায় পরীক্ষামূলকভাবে রপ্তানি কার্যকম শুরু করতে পারায় খুশি আমরা। আসামের সাথে নৌপথে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ভবিষ্যতে রড-সিমেন্টসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যাবে। আগে বাংলাদেশ থেকে খালি ভেসেলগুলো তেল খরচ করে ভারতে গিয়ে পণ্য বোঝাই করে ফিরে আসত। এভাবে আমদানি কার্যক্রম চলত। এখন বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত পণ্য রপ্তানি করা হলে ভেসেলগুলো আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের মাধ্যমে বাড়তি আয় করতে পারবে।
চিলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম বলেন, ‘দেশভাগের পর ঐতিহাসিক চিলমারী নৌবন্দরটি বন্ধ হয়ে যায়। আজ আমার জীবদ্দশায় আবারও আমদানি-রপ্তানি শুরু হওয়ায় ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারই বাস্তবায়ন হলো। এখন দ্রুত অবকাঠামো উন্নয়ন করা দরকার চিলমারী নৌবন্দরের। ‘
এ ব্যাপারে বন্দর রাজস্ব কর্মকর্তা তাপস কুমার সাহা বলেন, ‘প্রথম দফায় পরীক্ষামূলকভাবে রপ্তানি কার্যকম শুরু করতে পারায় খুশি আমরা। আসামের সাথে নৌপথে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ভবিষ্যতে রড-সিমেন্টসহ বিভিন্ন রপ্তানি উপযোগী পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। ‘
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট