সুন্দরবনের দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় ১৮টি মাছ ধরা ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ থাকা আরো এক জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে তল্লাশি টিমের সদস্যরা বঙ্গোপসাগরের কালিরচর থেকে ভাসমান অবস্থায় ওই জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এ নিয়ে পাঁচ দিনে নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো। এখনো সাত জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে পঞ্চম দিনের মতো তল্লাশি চলছে। আজ বুধবার সকালে উদ্ধার করা ওই জেলের নাম-পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি বন বিভাগ।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে যে দুই জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় তাঁরা হলেন বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার ভাসা গ্রামের সৈয়দ আলী মলিস্নকের ছেলে মহিদুল মল্লিক (৪০) এবং একই উপজেলার বগা গ্রামের উকিল উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে রুহুল হাওলাদার (৪২)।
সোমবার বঙ্গোপসাগর থেকে যে দুই জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তাঁরা হলেন বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার বগা গ্রামের সোনাম উদ্দিনের ছেল ইয়াকুব আলী বাওয়ালী এবং একই উপজেলার আন্দারমানিক গ্রামের সৈয়দ আলী হাওলাদারের ছেলে আনোয়ার হোসেন বাদল (৫০)।
আর শনিবার যে দুই জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তাঁরা হলেন বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার কাালীগঞ্জ গ্রামের আনোয়ার শেখের ছেলে মামুন শেখ (৪০) এবং পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার জানেরপাড় গ্রামের আজিজুল খানের ছেলে ইসমাইল খান (৩৬)।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলারচর ফরেস্ট ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় জানান, তল্লাশি টিমের সদস্যরা আজ বুধবার সকালে বঙ্গোপসাগরের কালিরচর এলাকায় ভাসতে থাকা অবস্থায় এক জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। ওই মৃতদেহ দুবলা ফরেস্ট ক্যাম্পে আনা হচ্ছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ওই জেলের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ নিয়ে নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো। এখনো সাত জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় আরো জানান, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্ট গার্ড, বন বিভাগ এবং স্থানীয় জেলেরা বুধবার বেলা ১১টা থেকে পঞ্চম দিনের মতো বঙ্গোপসাগর এবং দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে। প্রায় তিন হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে তল্লাশি চলছে। নিখোঁজ জেলেদের বাড়ি বাগেরহাট ও খুলনাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় বলে জানা গেছে।
ফিশারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন জানান, ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে পাঁচ দিনে সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাঁর জানা মতে আরো সাত জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বঙ্গোপসাগর এবং সুন্দরবনের দুবলারচরের বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমে ঝড়ের তাণ্ডবে দেড় শতাধিক জেলেকে নিয়ে ১৮টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। প্রায় দেড় শ জেলে সাঁতরিয়ে এবং অন্য ট্রলারের সাহায্যে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও কমপক্ষে ১৪ জেলে নিখোঁজ থাকেন। শনিবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত পাঁচ দিনে সাত জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অপর নিখোঁজ সাত জেলের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট