1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১১ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ হয়রানিমূলক ধারা বাদ, বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের সুযোগ সীমিত আরব বসন্ত ও বাংলাদেশ বিশ্বের ক্ষুদ্রতম নদী রো আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ষষ্ঠ মৃত্যু বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলী তিন বাহিনীর পোশাকের ডিজাইনারকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন শিল্পী আসিফ আকবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম এলাকায় গাছ থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার শুধু রাজস্ব আদায় করবে এনবিআর বাঁওড় ইজারা বাতিল করে জেলেদের স্বার্থে জলমহাল নীতিমালা প্রণয়নে দেশব্যাপী স্মারকলিপি পেশ অভিনয়ের বাইরে র‌্যাম্পেও ঝলমলে রুনা খান অতি বিপ্লবী চিন্তা-ভাবনা নিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি কাম্য নয়: মির্জা ফখরুল

একজন নবুয়ত আলী মুক্তিযোদ্ধা ও ভালবাসার বাংলাদেশ

সৈয়দা শামছুন্নাহার জ্যোৎস্না
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
মাগুরার বীরমুক্তিযোদ্ধা নবুয়ত মোল্লা
২০১৩ তে মাগুরার গণজাগরণ মঞ্চ শুরু হল , প্রতিদিন দুপুর ৩টা গড়ালেই ইউশাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম । প্রথম কয়েকদিন অংশগ্রহণকারীদের আয়োজনে চলল। পরে উপস্থিতির সংখ্যা বাড়তে থাকায় চৌরঙ্গীতে বসার কার্পেট , চট, খাবার জল, মোমবাতি যোগাড়ের সংকট দেখা দিলে সিপিবির কর্মী , ছাত্রলীগের ছেলেরা, জাসদকর্মী – সবাই অর্থ সংগ্রহে নামলাম। আবু নাসের বাবলু ভাই থেকে শুরু করে, দোকান মালিক, সংসদ সদস্য এমএস আকবর- সবার কাছেই দল বেঁধে আমি , আহমেদ,রূপক সহ কয়েকজন অর্থ সংগ্রহে যেতাম। এমনি একদিন ফেরার সময় একজন বলল – আপনাকে কমান্ডার ডাকে। এগিয়ে গেলাম। তিনি বললেন – আপনে কে ? বললাম গণজাগরণ মঞ্চের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছি । তবুও প্রশ্ন আপনে কে ?এবার বললাম – আমি জোছনা , কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী। আমরা সবাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে আন্দোলন করছি। আচ্ছা পরে আপনার সাথে কথা বলব । ওহ! মনি সিং এর পার্টির লোক, আমার থেকে টাকা নিবেন না ? বললাম দেন যদি ইচ্ছা হয় । পরে জেনেছি – তিনি মুক্তিযোদ্ধা নবুয়ত মোল্লা । এরপর তাঁর সাথে অনেকবার কথা হয়েছে । তিনি আমাকে তার অফিসে যেতে বলেছেন গল্প করার জন্য । বলেছিলাম – আপনি যদি তুমি করে বলেন তাহলে যাব। তিনি রাজী হলেন – তাইলে কিন্তু মা বলব- এই শর্তে।
কত কথা চাচার সাথে দেশ নিয়ে , রাজনীতি নিয়ে। সহজ সরল চাচা রাজনীতির মারপ্যাঁচ বুঝতে চাইতেন না। তিনি আওয়ামীলীগের সমর্থক ছিলেন। এক ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে নবুয়ত চাচা স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা যারা শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিল স্মৃতিসৌধে , সেখান থেকে ছেলেদের ডেকে শপথ পড়ালেন মাদক গ্রহণ না করার জন্য। শপথ শেষে চাচাকে বললাম – কি করলেন ? চাচা বললেন – জান না মা , কি অবস্থা ! এইটুকু ছেলেরা নেশা করে মাগুরা নেশায় তলায় যাচ্ছে । তাই শপথ পড়ালাম। জিজ্ঞেস করলাম –চাচা কাজ হবে বলে মনে করেন? চাচা-কেন হবে না মা ? বললাম রাষ্ট্র যদি মাদক ঢুকতে দেয় দেশের ভেতরে, তাহলে এদের ঠেকাবেন কি করে ? মাগুরা তো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ না যে চাচা এদের আলাদা করে রাখবেন ? তাইলে কি হবে মা ? বললাম আপনার দল সহ যেসব দল দেশ পরিচালনা করে – তাদের রাজনীতি যদি মাদকের বিপক্ষে থাকে , তাহলে দেশে মাদক আসতে পারবে না । আপনাকেও মিথ্যে শপথ পড়াতে হবে না ।
আরেকদিন কথা হচ্ছে । চাচা আপনি তো যুদ্ধ করছেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে , স্বাধীন হওয়ার জন্য , বৈষম্য না থাকার জন্য , স্বাধীনভাবে কথা বলার জন্য ।পেয়েছেন এসব? চাচার যথারীতি উত্তর – হ্যাঁ। কিভাবে পেলেন ? এদেশে এখন গৃহহীনের সংখ্যা কত? দরিদ্রের সংখ্যা কত? কিছু মানুষ বিত্তবান , কিছু একেবারেই হত-দরিদ্র , বস্তিতে থাকে। স্বাধীন দেশে ডাস্টবিন থেকে খাবার খুটে খায়- এই দেশ চেয়েছিলেন? মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি চেয়েছিলেন? ভাতার জন্য ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হবে –ভেবেছিলেন? চাচা- না, মা, এইটা চাই নাই, ভাবিও নাই । কিন্তু কিছু করবার নাই । বললাম ভুল তো আপনারা মুক্তিযোদ্ধারাই করেছেন । চাচা – কেমনে? আমি-চাচা, জানবাজি রেখে যুদ্ধ করে আপনারা স্বাধীনতা ছিনায় আনলেন অথচ স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের অংশীদারিত্ব থাকল না । চাচা এই অংশীদারিত্ব বুঝলেন না । তাঁকে বুঝালাম- স্বাধীন রাষ্ট্রের কোন বিভাগে আপনাদের কর্মসংস্থান হল না, পরিচালনায় আপনারা থাকলেন না। রাষ্ট্রের সর্বস্তরে যারা ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান রাষ্ট্র চালাচ্ছিল তারাই ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কর্মচারী হয়ে গেল- পরিবর্তন হল না ।রাষ্ট্রে মুক্তিযোদ্ধাদের জায়গা হল না । কেবল হাতবদল হল। স্বাধীন রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থা পর্যন্ত পাকিস্তানী ধারায় রয়ে গেল । কেবল ভূখণ্ড আর পতাকা পেলেন চাচা , বৈষম্য দূর হল না। দেশটাকে সঠিক পথে না এনে এই যে অস্ত্র জমা দিয়ে বাড়ি চলে গেলেন, এইটা কাজটা কি ঠিক হয়েছিল আপনাদের মানে মুক্তিযোদ্ধাদের ? নিজেদেরকে কি ব্যর্থ মনে হয় না ? নবুয়ত চাচা এক্কেবারে চুপ হয়ে গেলেন । এ কথাগুলো মনে হয় ২০১৪/ ২৬শে মার্চ হয়েছিল । এরপর চাচার সাথে দেখা হলেই বলতেন – মা, আমি ব্যর্থ মুক্তিযোদ্ধা , মাটি স্বাধীন করলেও মানুষ স্বাধীন করবার পারি নাই । আমার দেশে ধনী- গরীব ,দুর্নীতি থাইকেই গেল।
তারপর চাচার সাথে বহুবার কথা হয়েছে , আমাকে যেতে বলেছেন তাঁর বাড়ি । বলছিলাম – আমি গেলে আশেপাশের সবাই ভাববে – কোন স্বার্থের জন্য এসেছি । আমরা কেউ কারো বাড়ি যাব না চাচা । রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও মনের টানে দেখা হবে।
আজ সেই নবুয়ত চাচা চলে গেলেন চিরদিনের জন্য । চাচা আপনি থাকবেন গণমানুষের হৃদয়ে।
জয় বাংলা , জয় হোক মেহনতি মানুষের ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews