পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) উপাচার্য (ভিসি) ড. এম রোস্তম আলীকে গতকাল বৃহস্পতিবার পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধা করে রাখার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে গণনিয়োগ থামাতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা তাঁকে চালাবদ্ধ করে রাখেন। পরে রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর হস্তক্ষেপে তাঁকে মুক্ত করা হয়। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি রিজেন্ট বোর্ডের বিশেষ সভায় বাদ হতে পারে ওই গণনিয়োগপ্রক্রিয়া।
পাবিপ্রবির একাধিক সূত্র জানায়, নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ভিসির কক্ষে তাঁর সভাপতিত্বে গতকাল সকাল ১১টায় রিজেন্ট বোর্ডের সভা শুরু হয়। সভায় শতাধিক নিয়োগ, আপগ্রেডেশন ও শিক্ষকদের এমফিল, পিএইচডি অনুমোদনের কথা ছিল। ভিসি ভাতিজি কানিজ ফাতেমাসহ ১০২টি পদে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। সভা চলাকালে বিতর্কিত নিয়োগ ও অনিয়ম নিয়ে রিজেন্ট বোর্ড সদস্যরা প্রশ্ন তোলেন। এ সময় ভিসি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে হট্টগোল শুরু হয়। ভিসি চরম ক্ষিপ্ত হয়ে সভা বাতিল ঘোষণা করেন। তখন দীর্ঘদিনের দাবি ঝুলে যাবে নিশ্চিত হয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা ভিসির কক্ষে তালা দিয়ে রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। অবস্থা বেগতিক দেখে ভিসির অনুরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এমপি শামসুল হক টুকু। তিনি ভিসির সঙ্গে আলোচনা করেন।
আলোচনা শেষে বের হয়ে টুকু জানান, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি রিজেন্ট বোর্ডের বিশেষ সভা হবে। সেই সভায় গণনিয়োগ বাদ দিয়ে নতুন এজেন্ডা নির্ধারণের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, যেহেতু নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সেহেতু ওই সভায় নিয়োগের বিষয়টি না ওঠানোর জন্য ভিসিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আশা করছি, এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে। ’
শিক্ষক-কর্মকর্তারা বিকেল ৪টার দিকে শামসুল হক টুকুর এই আশ্বাসে তাঁদের কর্মসূচি স্থগিত করে অবরুদ্ধ ভিসিকে মুক্ত করে দেন। পরে বৃষ্টির মধ্যে ভিসি পুলিশি পাহারায় কার্যালয় থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
পাবনার পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মাসুদ আলম বলেন, ‘পাবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ডের সভায় হট্টগোল ও ভিসিকে অবরুদ্ধের খবর পেয়ে ক্যাম্পাসে যাই। পরে এমপি শামসুল হক টুকুর মধ্যস্থায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা শান্ত হন। বর্তমানে ক্যাম্পাসের আইন-শৃঙ্খলাসহ সব ধরনের পরিবেশ শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ’
উল্লেখ্য, চাকরির মেয়াদের শেষ পর্যায়ে ভিসি এসে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ভাতিজি কানিজ ফাতিমাসহ ১০২ জনের নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে ১০১টি দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত দাবি করে এককভাবে প্রতীকী অনশন করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. এম আবদুল আলীম। কয়েকটি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট