আগামী এপ্রিলে মাহে রমজান শুরু। এরমধ্যেই ব্যবসায়ীদের গুদামে পৌঁছতে শুরু করেছে আমদানি করা ভোগ্য পণ্য। সব পণ্য গুদামে পৌঁছতে মার্চের মধ্যভাগ পর্যন্ত সময় লাগবে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো ধরনের জট না থাকায় এবার বেশ নির্বিঘ্নে ভোগ্য পণ্য আমদানি করে জাহাজ থেকে নামিয়ে নিজেদের গুদামে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বন্দর ঘিরে তাঁদের বাড়তি পরিবহন খরচ করতে হয়নি।
ব্যবসায়ীদের হিসাবে এবার রমজানের প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্য, যেমন—ছোলা, ভোজ্য তেল, চিনি ও মসুর ডালের প্রচুর সরবরাহ আছে। আমদানির পথে আছে আরো অনেক। ফলে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহে কোনো ঘাটতি সমস্যা নেই। এর পরও রমজানে ভোগ্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে কি না, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
আমদানীকারকগন জানানা ‘এবার আন্তর্জাতিক বাজারে অনেকগুলো ভোগ্য পণ্যের দাম চড়া ছিল, সঙ্গে মার্কিন ডলারের বিনিময়মূল্যও বেশি ছিল। ফলে বেশি দামে কিনতে হয়েছে এসব পণ্য। এর পরও আমদানি ঠিক আছে, সরবরাহও ভালো। ফলে আগামী রমজানে দামে খুব বেশি হেরফের হবে বলে মনে হচ্ছে না। ’ তিনি বলছেন, ‘এবার কিন্তু বাজারে বেচাকেনা একেবারেই নেই। কেন যেন মনে হচ্ছে ভোগ্য পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় লোকজন খাওয়া-কেনা কমিয়েছে। তা না হলে এই সময়ে পাইকারিতে বেশ ভালো রকম বেচাকেনা শুরু হয়। এখন তার কোনো লক্ষণই তো দেখছি না। ফলে ভোগ্য পণ্যের দাম এখনো পাইকারিতে অনেক কম। ’
ভোজ্য তেল নিয়ে এরই মধ্যে বাজারে টালমাটাল অবস্থা। ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার অজুহাতে অন্তত আট দফা দাম বাড়িয়েছেন। ফলে রমজানে ভোজ্য তেলের বাজার কেমন থাকে এ নিয়ে ভয় রয়েছে।
তবে রমজানের আরেক পণ্য ছোলার বাজারে দাম নিম্নমুখী। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাড়তি চাহিদা থাকে বলেই অন্তত দুই মাস আগে থেকেই রমজানের প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্য আমদানি করে মজুদ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ব্যবসায়ীরা এবারও রমজানের আগে পণ্য আনতে শুরু করেছেন। অন্য রমজানের চেয়ে এবার ব্যতিক্রম হচ্ছে, করোনার কারণে গত বছরের অবিক্রীত বিপুল ভোগ্য পণ্য গুদামেই রয়েই গেছে; তার ওপর পণ্য আমদানিও স্বাভাবিক আছে। পর্যাপ্ত আমদানির পরও শেষ পর্যন্ত ছোলার দাম স্থিতিশীল থাকবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।
রমজানে চিনির চাহিদা কম থাকে। ফলে দাম বাড়ার কথা নয়। তবে গত কয়েক মাসে চিনির দাম বেড়ে গিয়ে এখন স্থির হয়ে আছে। নতুন করে দাম বাড়েনি। খাতুনগঞ্জে বর্তমানে প্রতি মণ (৩৭.৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৬০০ টাকা দরে, যা এক মাস আগেও বিক্রি হয়েছিল প্রায় কাছাকাছি দামে, দুই হাজার ৫০০ টাকায়। কিন্তু ছয় মাস আগে এই চিনি বিক্রি হয়েছিল দুই হাজার ১০০ টাকায়। সেই হিসেবে ছয় মাসের ব্যবধানে পাইকারিতে চিনির দাম বেড়েছে প্রতি মণে ৪০০ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন চিনির দাম কমলেও এর সুফল দেশে পড়েনি।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট