ভারত মহাসাগরে ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত চাগোস দ্বীপপুঞ্জে প্রথমবারের মতো মরিশাসের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এই দ্বীপপুঞ্জ আগে থেকেই মরিশাস নিজেদের বলে দাবি করে আসছে।
মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ জগন্নাথ এ ঘটনাকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়ার সময় পার হয়ে যাচ্ছে।
মরিশাস সরকারের সহায়তায় একদল লোক চাগোস দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণের সময় পতাকা দেখিয়েছে। জাতিসংঘে মরিশাসের রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে আয়োজনটি পেরোস বানহোসের প্রবালপ্রাচীরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী জগন্নাথের রেকর্ড করা বার্তা বাজানো হয়েছিল। আরেক প্রবালপ্রাচীর সলোমন-এও পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
মরিশাসের সরকার ব্রিটেনকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ দায়ে অভিযুক্ত করেছে এবং আন্তর্জাতিক আইনের কাছে নতি স্বীকার করে চাগোস দ্বীপপুঞ্জ তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতও রায় দিয়েছে, ব্রিটেন থেকে ৫০০০ মাইল দূরের চাগোস দ্বীপপুঞ্জে ব্রিটেনের দখলদারিত্ব ‘অবৈধ’। এজন্য দ্বীপপুঞ্চ মরিশাসের কাছে ফিরিয়ে দিতেও বলা হয়েছে। তার পরেও ব্রিটেন চাগোস দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসের কাছে ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
৫০ বছর আগে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের মানুষদের মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিল। তার পর থেকে দ্বীপটি যে অবহেলার শিকার, তার চিহ্ণ ছড়িয়ে আছে মরিচা ধরা রেললাইন, ভাঙা বাড়িঘর এবং কংক্রিটের একটি ঘাটের ধ্বংসাবশেষে। পুরোনো গির্জাটির চারপাশে ঘন জঙ্গল গড়ে উঠেছে।
মরিশাস সরকার সেখানে লোকদের পাঠানোর উদ্দেশ্য হলো- দ্বীপপুঞ্জের চারপাশে প্রাচীরের জন্য মানচিত্র তৈরি করা। তবে জগন্নাথ বলেছেন, মরিশাস তার ভূখণ্ডের এই অংশের নেতৃত্ব দিতেই সফরটি করা হয়েছে। এটা খুবই আবেগঘন মুহূর্ত এবং আমাদের জন্য ঐতিহাসিক সময়ও। কারণ, আমরা নিজেদের এলাকায় শাসন করতে সক্ষম হয়েছি।
মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, এখান থেকে পতাকাগুলো অপসারণ করা হলে সেটা যুক্তরাজ্যের উস্কানি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। দ্বীপগুলো আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার জন্য ব্রিটেনের কাছে এটাই সঠিক সময়।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট