বরিশাল নৌ বন্দর এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে এক নারী একটি ছেলে সন্তানে মা হলেও ওই সন্তানের বাবা খবর জানেনা কেউ। নবজাতকের বাবার সন্ধানে কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশ সদস্যরা মাঠে নেমেছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর ভাটারখালস্থ সিটি মার্কেট এলাকায় মায়া নামের মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী একটি ফুটফুটে সন্তান জন্ম দেন। বর্তমানের ভবঘুরে মায়া ও তার সন্তান বরিশাল নৌবন্দর এলাকার লঞ্চঘাটের শ্রমিক হাফিজুর রহমানের তত্ত্বাবাধয়নে রয়েছে। নবজাতক ও তার মা দুজনেই সুস্থ রয়েছে।
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম জানান, ভবঘুরে এক নারী সন্তান প্রসব করেছেন এমন খবর পাওয়া মাত্র সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ওই নবজাতকের বাবা কে হতে পারে তা খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ মাঠে কাজ শুরু করেছে। আশা করছি অল্প সময়ে মধ্যে এই নবজাতকের বাবাকে খুঁজে পাওয়া যাবে। মায়া ও তার সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, মানসিক ভারসাম্যহীন মায়া নামে ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে জাকারিয়া নামে এক ছেলে সন্তানকে নিয়ে নৌবন্দরে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু কয়েক মাস আগে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। নদী বন্দরে ছিন্নমূল হিসেবে বসবাসকারী অন্যরা তাকে সেবা যত্ন করে আসছিল।
শনিবার সকাল ৮টার দিকে ওই নারী নদী বন্দর এলাকার রাস্তার ধারে প্রসব বেদনায় উঠলে স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেরে ভাটারখাল কলোনির কয়েকজন নারীকে খবর দিয়ে আনেন। তাদের সহযোগীতায় সকাল সোয়া ৯টার দিকে মায়া একটি ফুটফুটে সন্তান জন্ম দেন। পরবর্তীতে তাকে নদী বন্দরের একটি অস্থায়ী শেডে রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সন্তান জন্মদানের পরে ওই নারীকে বরিশাল জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন খাবার সরবরাহ করাসহ বিছানার চাঁদর, মশারী, গরম পোশাক এনে দিয়েছেন।
রুহুল আমিন বলেন, বর্তমানে ওই নারী ও নবজাতক উভয়ে সুস্থ রয়েছে। এ খবর শোনার পর থেকে মায়ার সন্তানটি অনেকেই নিতে চাচ্ছেন। কিন্তু মায়া তার সন্তানকে বুকে আগলে রাখছেন। তবে মায়া নিজের এবং বড় ছেলে নাম ছাড়া কিছু বলতেও পারছেন না।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নবজাতক ও তার মায়ের সুরক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ না নেওয়া হলে সন্তানটি যেকোনো সময় চুরি হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া শীতের রাতে খোলা আকাশের নিচে থাকলে নবজাতকটি রোগে আক্রান্ত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার (শহর) শ্যামল সেন গুপ্ত জানান, বিষয়টি থানা পুলিশ ও সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে শুনেছেন। ভারসাম্যহীন নারী ও তার সন্তানের সুরক্ষায় যা যা করণীয় তা করা হবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট