ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ পৌঁছে রুশ বাহিনীকে তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে। যুদ্ধের তৃতীয় দিনে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি রক্তক্ষয় ও ধ্বংস বন্ধে জোর তৎপরতা চলছে আন্তর্জাতিক কূটনীতির অঙ্গনেও।স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধ গতকাল তৃতীয় দিনে আরো জোরদার হয়।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি চলে পদাতিক বাহিনীর হামলাও। তবে পদাতিক বাহিনীর হামলা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে কিয়েভ। রুশ স্থলসেনারা সম্মুখযুদ্ধের পাশাপাশি অন্তর্ঘাতমূলক হামলাও (স্যাবোটাজ) চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। এসব হামলা বন্ধের জন্য কিয়েভে গতকাল থেকে দুই দিনের জন্য কারফিউ জারি করেছে সরকার।
রাশিয়ার কমান্ডাররা ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে তাঁদের অগ্রযাত্রার ধীরগতিতে ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়ছেন এবং লজিস্টিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন বলে একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, মনে হচ্ছে, মস্কো তার সেনাদের পর্যাপ্ত রসদ সরবরাহ করেনি। ফলস্বরূপ কমান্ডাররা তাঁদের পরিকল্পনায় রদবদল করতে বাধ্য হয়েছেন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ইন্টারফ্যাক্স ও স্পুিনক জানিয়েছে, রুশ সেনারা ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় জাপোরিঝিয়ার মেলিটোপল শহর দখলে নিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে ইউক্রেনপক্ষের তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আর রাজধানীর পরিস্থিতি নাজুক হতে থাকায় গতকাল সকালে কারফিউ জারি করে ইউক্রেন সরকার। আগামী সোমবার পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে।
এদিকে রাশিয়ার নানামুখী হামলা আর ইউক্রেনের প্রতিরোধের মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে বেসামরিক লোকের মৃত্যুর সংখ্যা। গতকাল পর্যন্ত তিন শিশুসহ ১৯৮ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে কিয়েভ কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ৩৩ শিশুসহ এক হাজার ১১৫ জন আহত হয়েছে বলেও জানায় তারা।
এ ছাড়া ফেসবুক পোস্টে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী গতকাল দাবি করে, হামলা চালাতে এসে সাড়ে তিন হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে এবং অন্তত ২০০ জন আটক হয়েছে। তারা আরো দাবি করেছে, রাশিয়া গতকাল পর্যন্ত ১৪টি বিমান, আটটি হেলিকপ্টার এবং ১০২টি ট্যাংক হারিয়েছে। ইউক্রেনের এসব দাবির ব্যাপারে রাশিয়া কোনো মন্তব্য করেনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কিকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার যে প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করে দেশবাসীর সঙ্গেই থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
গত শুক্রবার নিজেই ধারণ করা এক ভিডিও পোস্টে জেলেনস্কি প্রধান সহযোগীদের পাশে নিয়ে বলেন, ‘আমরা সবাই এখানে (কিয়েভে) আছি। আমাদের সেনাবাহিনী এখানে আছে। সমাজের মানুষ এখানে আছে। আমরা সবাই এখানে আমাদের দেশকে, আমাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করছি এবং এভাবেই আমরা থাকব। ’ একই দিন টুইটারে তিনি জানান, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া এবং ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র সহায়তার ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট