প্রায় ২০০ প্রবাসী বাংলাদেশি ইউক্রেন ছেড়ে পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় পৌঁছেছেন। আরো অনেকে ইউক্রেন ছাড়ার অপেক্ষায়। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরয়ার আলম গতকাল শনিবার রাতে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনপ্রবাসী প্রায় ৭০০ জনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।
পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন জানিয়েছেন, ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে ঢুকতে সীমান্তে একেকজনকে আট-দশ ঘণ্টা করে অপেক্ষা করতে হয়েছে। সীমান্তে অপেক্ষার সময় অনেক অসুবিধা ও কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। এখনকার যুদ্ধাবস্থা উপেক্ষা করার বা অন্য কোনো স্বাভাবিক অবস্থা তৈরি করা আমাদের কারো পক্ষে সম্ভব নয়। ‘যাঁরা সীমান্ত অতিক্রম করতে চান, তাঁদের মানসিক ও শারীরিকভাবে এই অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবে সীমান্ত পার হওয়ার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না। ’
পোল্যান্ড থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এক শ-এর বেশি বাংলাদেশি পোল্যান্ডে ঢুকেছেন। মোট সাতটি পয়েন্টে লোকজন ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে ঢুকছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি দল সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছেন। তাঁরা ইউক্রেন থেকে আসা বাংলাদেশিদের থাকা, পরিবহনসহ সব ব্যবস্থা করছেন। তবে অনেকে পোল্যান্ডে তাঁদের আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিতদের সঙ্গে থাকছেন।
পোল্যান্ড প্রান্তে সমস্যা না থাকলেও ইউক্রেন প্রান্তে বেশ ভিড়। ফলে অনেকে সীমান্ত এলাকায় এসে সারা দিন অপেক্ষার পরও পোল্যান্ডে ঢুকতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। পরদিন আবার আসছেন। বাংলাদেশ দূতাবাস বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। তারা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরয়ার আলম বলেন, ইউক্রেনের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাঁরা আছেন তাঁরা রোমানিয়ায় যেতে পারেন। রোমানিয়া সরকার দুই দিনের থাকার ব্যবস্থা করবে এবং তারপর তাঁদের বুখারেস্টে বাংলাদেশ দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে রেখে বাংলাদেশে আসার ব্যবস্থা করা হবে।
ইউক্রেনে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই। প্রতিবেশী পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস ইউক্রেনে বাংলাদেশের স্বার্থ দেখভাল করে থাকে। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর প্রায় দুই সপ্তাহ আগে দূতাবাসের পক্ষ থেকে ইউক্রেনপ্রবাসী বাংলাদেশিদের অন্যত্র নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেশির ভাগই তখন ইউক্রেন ছাড়েননি।
দূতাবাস সূত্র জানায়, যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে ইউক্রেনপ্রবাসী অনেক বাংলাদেশি পোল্যান্ডে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও অনেকে এখনো করেননি। দূতাবাসের হিসাবে, ইউক্রেনে বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার।
এদিকে ডয়েচে ভেলেকে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনপ্রবাসী বাংলাদেশি ছাত্র সুসময় সরকার বলেন, তিনি সীমান্ত এলাকায় যাওয়ার ট্রেনে উঠেছেন। তিনি জেনেছেন, সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে বাংলাদেশিদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
ডয়েচে ভেলে জানায়, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এখনো অনেক বাংলাদেশি আটকে আছেন। কিয়েভ ছেড়ে যেতে তাঁরা কোনো পরিবহন পাচ্ছেন না। রাত বাড়লেই হামলার শঙ্কা বাড়ে। একটু পর পর রকেট হামলার শব্দ পাচ্ছেন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট