অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা বাতিল চেয়ে টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের আবেদন উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে থাকা এ মামলার বিচারকাজ চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
আদালতে ওসি প্রদীপের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, আদালত প্রদীপ কুমার দাশের মামলা বাতিলের আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আইনজীবীর অনুরোধে সেটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন। ফলে মামলার বিচারকাজ চলতে আইনগতভাবে কোনো বাধা নেই।
আদালতে দুদকের বক্তব্য কী ছিল জানতে চাইলে এ আইনজীবী বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণ করলে বোঝা যাবে মামলাটি চলবে কি চলবে না। প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে যে টাকাটা জমিয়েছেন, সে টাকা স্ত্রীকে দিয়ে হালাল করেছেন। কাজেই বিষয়টি সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া প্রমাণ করা সম্ভব নয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী চুমকি করণ এ মামলায় পলাতক রয়েছেন। স্ত্রীকে পলাতক রেখে তিনি মামলা বাতিল চাইতে পারেন না। এর পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ আইনগত যুক্তি উপস্থাপন করেছে। পরে আদালত আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছেন।
সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপ গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি করণের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে এ মামলার অভিযোগ গঠন হয়। সেদিন পলাতক আসামি চুমকির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
গত ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্টে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ (এ) ধারায় এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয় প্রদীপের পক্ষে। সে আবেদনটিই উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দিলেন উচ্চ আদালত। এদিকে এ মামলায় চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালতে প্রদীপের স্ত্রী চুমকি করণের বিরুদ্ধে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফের কাছে শামলাপুর চেকপোস্টে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ওই মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা আদালতের দেওয়া রায়ে পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট