1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০১ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
ঢাকায় আইএলও কনভেনশন অনুস্বাক্ষর বাস্তবায়ন সম্পর্কিত মতবিনিময় সভা বগুড়ায় গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় বিষয়ক অর্ধ-বার্ষিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত রানীরপাড়া স্কুলে আলোর প্রদীপ সংগঠনের পুষ্টিকর খাবার ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ময়মনসিংহে ‘আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা: অংশীজনের প্রত্যাশা’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা নেত্রকোণায় নৃগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষা: অংশীজনের প্রত্যাশা বিষয়ক মতবিনিময় সভা সোনাতলায় মাদকের ব্যপকতা প্রতিরোধে বিক্ষোভ সমাবেশ সোনাতলায় মাদক নির্মূলের দাবিতে নাগরিক কমিটির স্মারকলিপি প্রদান বৈশ্বিক অর্থায়ন সংকটের প্রেক্ষিতে এনজিওদের বর্তমান অবস্থা ও করণীয় বিষয়ক মতবিনিময় সভা প্রবীন নাট্যকর্মী বাবলু খানের মৃত্যুঃ বিভিন্ন মহলের শোক পশ্চিম বঙ্গের কবি মনিকা রায়ের কবিতার ডায়েরি থেকে

ডা. মোজাহিদুল হকের ধারাবাহিক গল্প

ডা. মোজাহিদুল হক
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২

জীবনের গল্প

পর্ব – ১৮

ফাল্গুন শেষ হতে চলল। দিনের বেলায় রোদের তাপে গা জ্বালা করে আর রাতে জোরে ফ্যান চালালে লাগে ঠান্ডা।

একটা মানুষের বেঁচে থাকা আর মরে যাওয়ার মধ্যে কতটুকু ব্যবধান?  দুপুরের পর শুয়েছি অম্নি মাথায় ঝাপটে আসছে চিন্তা। একের পর এক। ঢেউ এর মতো। মাথাটা জগদ্দল পাথরের মতো ভারী মনে হচ্ছে। জ্বর -টর এলো নাকি?  মানুষের বেঁচে থাকা টা যেন শূন্যে মুদ্রা ছুঁড়ে হেড-টেল দেখে নেওয়ার মতো। হারলে আর সূযোগ নেই। মৃত্যু তো একবারই আসে। ধুৎ ঘুমের পিলে চমকে গেছে। আজ আর ঘুম হবে না। মনের ক্লান্তি কি শরীর কে পাকড়াও করেছে?

বেসিনের কল খুলে চোখে মুখে জল ছেটালাম। সিগারেট এ আয়েশী টান দিতেই মস্তিষ্কের চাপ সরে গেল। মেঘ সরে যাওয়া রোদ্দুরের মতো।

এই যে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছি একটা খোলে, সে খোলের ভেতরের আমার টুকরো টুকরো যন্ত্রণা আছে, হতাশা আছে, অভাব বোধ আছে, ক্রোধ, ঘৃণা, নিষ্ঠুরতা ও আছে কিন্তু তার আঁচ কাউকে পেতেই দেইনা আমি।

আমার নিজের জীবন টাকে কি স্বচ্ছন্দ বলা যায়?  নৌকো চলছে তরতরিয়ে, তবে দিশাহীন। সেলফোনের সুরেলা ধ্বনি চিন্তায় যতি চিহ্ন টেনে দিল। হাসপাতাল থেকে ফোন। আমি রেডি হয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। আকাশ নীল আর গোলাপী আভা মিলে অদ্ভুত এক মায়া ছয়িয়েছে। গুমোট নেই। হাওয়া দিচ্ছে অল্প অল্প। হাঁটতে হাঁটতেই সিগারেট ধরালাম।

অহনা এখনো অফিসে। বিকেল হয়ে এলো এখনও দিন কী উজ্জ্বল। সামনে দিয়ে রিক্সা যাচ্ছিল একটা, থামিয়ে উঠে পড়লাম।

অহনাকে প্রথম দেখার মুহূর্তটার কথা মনে পড়ে। তীব্র এক আলোড়ন চলছিল হৃদয়ের তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে। কি যে এক অচেনা অনুভূতি। সমস্ত অনুভূতির কি সংজ্ঞা থাকে?  বর্ণনা কি করা যায় প্রজাপতির কোনটা সঠিক রঙ?  আমার জীবনে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গেছে অহনা। করুনা করে ভালোবাসার মূল্য চুকিয়েছে নাকি সত্যিকারের ভালোবাসা কোনটা?

বিকেল ফুরিয়ে এলো। অন্ধকার নামছে নগরে। পথবাতি জ্বলে উঠছে একে একে। হ্যালোজেনের দ্যুতি রাস্তায়। থেমে আছে বাতাস। গাছের পাতারাও নিথর।

আমার বুক নিংড়ে একটা দীর্ঘশ্বাস গড়িয়ে এল। প্রহেলিকা, প্রহেলিকা, ভালোবাসা সত্যিই প্রহেলিকা।

এখন আমরা এভাবেই বেঁচে থাকব। কখনও তুমি আমার দিকে আঙুল তুলবে, কখনও আমি তোমায় আঙুল তুলে শাসাব। কখনও অসহ্য মনে হবে, কখনও সহ্য করে নেব। আর এভাবেই আমাদের বাকী জীবন কেটে যাবে। অন্ধকার সন্ধ্যা গুলোকে আজকাল অনেকটাই নিষ্প্রাণ, ম্যাড়মেড়ে লাগে। হালকা বিষন্নতা বুকে চারিয়ে চেম্বারে গিয়ে বসলাম। বড় করে একটা শ্বাস টানলাম। অর্থো আরথারাইটিসের একটা রুগী এলো। বুঝিয়ে বললাম হাঁটুর ফ্লুয়িড শুকিয়ে গেছে, কাটাছেঁড়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। হাড় জোড়া বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করেছিলাম ভদ্রমহিলা যান নি। বুঝালাম ঔষধ, ফিজিওথেরাপি সবই সাময়িক ঠেকনা মাত্র। ভদ্রমহিলা কিছুতেই অপারেশন এ যাবেন না। তবুও বললাম আপনি অর্থোপেডিক এর কাউকে অবশ্যই দেখাবেন।

রাতে চেম্বার ছেড়ে বের হয়েছি। আকাশে ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ। মেঘের গায়ে লালচে আভা। আধখানা চাঁদ মেঘের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে বার বার হঠাৎ হঠাৎ জেগে উঠছে এক-আধটা নক্ষত্র। বিষন্ন স্মৃতির মতো।

পুরনো জীবন ঘুরে ফিরে আসছে ভাবনায়। কত রকম ভাবে যে আমাকে অসম্মান করেছিল মানুষটা। বাড়িতে কুকুর-বেড়াল পুষলেও তো মানুষের মায়া পড়ে, আমার প্রতি মানুষ গুলোর সেইটুকু মায়াও কি ছিল?  মনে হয় না। কুকুর বেড়ালের মতো ক্রমাগত আঁচড়ে গেছে আমাকে।

জীবন ভারী বিচিত্র। প্রেমহীন, পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিহীন মানুষও দিব্যি দিনের পর দিন পাশাপাশি বাস করে যায়। ক্ষতবিক্ষত হয়েও বেঁচে থাকে। পাশাপাশি ঘুমায়, সাংসারিক কথাবার্তা বলে, মাঝে মাঝে গভীর রাতে জীবজন্তুর মতো মিলিতও হয়। আবার কখনও কখনও হঠাৎ এক বিধ্বংসী ঝড় এসে সম্পর্ক কে ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়। ধিকি ধিকি জ্বলতে থাকা তুষের আগুন যা রোজই জ্বলে, রোজই পোড়ায় পরস্পরকে, সেই আগুন থেকে স্ফুলিঙ্গ ছিটকে গিয়ে তৈরী হয়েছিল দাবানল, সেই দাবানলে অবশেষে পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছিল শুকনো সম্পর্ক টা।

তারপর তো অহনা এলো জীবনে। আবেগের টুঁটি টিপে ফিনিক্স পাখির মতো উঠে দাঁড়িয়েছি আমি।

চাঁদ এখন পুরোপুরি মেঘের আড়ালে। বাতাস হঠাৎই নিথর। একটা ঝড় বৃষ্টি নামলে খুব ভালো হতো।

নামুক নামুক। একটু অন্তত শীতল হোক পৃথিবী টা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews