1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন

সর্বোদয় হোক শিশুভুবন

মাহবুবা ছন্দা
  • প্রকাশিত: সোমবার, ৭ মার্চ, ২০২২
আমি ধনী ও নই, মানী ও নই।তা- সত্ত্বেও খানিকটা সৌখিন আর বিলাসী ।কিছু কিছু বিষয় ভাবের উদ্রেক করে তুলে – লেখকমন তাড়িত করে কিছুনা কিছু লেখার ।আমাদের পুরানো বাড়িব পুকুরধারের হিজল গাছ ,জলের উপরকার হিজলফুলের ভাসা রূপ,শান্ত দুপুর , জলে ভাসা মাছ ছোঁ মেরে চিলের ঠোঁটে ধরা ,ঝিঁঝির ডাক দিবারাত্রি ,শীতের রাতে টিনের চালে টুপটাপ কুয়াশার শব্দ ,বকুল ফুল কুড়িয়ে মালা গাঁথা, বাড়িব ভেতরে উঠানে জ্যোৎস্না রাতে নারকেল পাতার মাটিতে কারুকার্য চিত্র ,চৈত্রের দুপুরে আম্রমঞ্জরী আর বাতাবিলেবু ফুলের ম- ম গন্ধেন্দ্রিয় ছায়াঘন স্হানে শীতল পাটি বিছিয়ে বইপড়া কিংবা অলস গল্পবাজ আসর, ঘোর বর্ষায় ঘরের বারান্দায় বসে বৃষ্টির ফোঁটার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া ।গাছের সঙ্গে , পাখির সঙ্গে কথা বলা – সমস্ত জড়িয়ে রূপ – রস -গন্ধ বৃহৎ একটা জগৎ আমাদের সঙ্গ দান করতো শৈশবকালে ।
বড়দের বাংলা ,ইংরেজি কাব্যকলার অনেকখানিই মুখস্থ হয়ে গিয়েছিলো শুনে শুনে ।মন দিয়ে শেখা বা বিশেষ প্রণালির মধ্য দিয়ে শেখা তা আমাদের শৈশবকালে ধাতে ছিলো না- ইচ্ছে মতো কুড়িয়ে – বাড়িয়ে যা পেয়েছি ,তাই দিয়েই আমাদের শৈশবের ঝুলি ভরা ।গ্রামের চাষী- মজুর ,বাড়ির কাজের সাহায্যকারী ,ভিখারি – বেদেনী ,বান্দরগোনা ,বাইস্কোপওয়ালা ,কাঁচের বাক্সভরা হাওয়ার মিঠাই ,বাদামের টানা,কলাবিস্কুট,ধান-পাটের বিনিময় করে গজা খাওয়া – এই বিচিত্র রঙে রাঙানো আমাদের শৈশবকাল ।
আমাদের শৈশবকাল অনুপম ছিলো না-ছিলো স্বাধীন – মুক্ত ।ছেলেমেয়ে কোনো ভেদাভেদ ছিলো না ।মার্বেল ,গোল্লাছুট ,ডাঙগুলি খেলা একই সঙ্গে।আমাদের ছেলেবেলার স্বপ্ন ,সোনালি ছেলেবেলা এখনকার অভিভাবকও শিশুদের কাছে ইতিহাস ।
আমাদের এলাকায়ই ছেলেশিশু- মেয়েশিশুদের জন্যে তৈরি হয়েছে মাদরাসা ।নিচতলার কয়েকটি রুমের মধ্যেই সারাদিবানিশি তাদের চলাফেরা ।তাদের শুধু ধর্মীয় শিক্ষার আব্রুতায় শিক্ষিত করার চেস্টায় শিকল পরানো ।
একুশশতকের এই শিশুদের শিশুভুবনের ছেলেবেলা নেই ,স্কুলের মাঠ নেই ,শিক্ষক বিন্দু পরিমন্ডলবেষ্টিত আদর- স্নেহ নেই , খেলাধুলার পরিবেশ নেই ,আলো- বাতাস নেই , স্বস্তিকর নিশ্বাস নেওয়ার নেই কোনো পরিবেশ।উঃ ! কী দুশ্চিন্তা জাগানিয়া ছেলেবেলা এই শিশুদের ।
আমাদের স্মৃতিপটে উজ্জ্বল শৈশব এখনো বড়ো বয়সেও মধুর কবিতাচয়নের মতো ,গল্পের মতো ।স্কুলের পড়াশুনা ছাড়া ও বাড়িভর্তি আত্নীয়- স্বজন,লোকজনের কাছে কত অজানা কাহিনী জানা ,আদর – ভালোবাসা পাওয়া ।অভিভাবকগণ আমাদের মনকে নানা বিষয়ের জ্ঞানে ভরে দিতেন।চিত্তের ‘সর্বোদয় ‘ হবে- এই ছিলো তাঁদের ধারণা ।কত আধুনিক ছিলেন আমাদের অভিভাবকগণ মননে – মানসিকতায় ।
কয়েক মাস আগে আমাদের এলাকার ছেলেদের মাদরাসায় একটি শিশু আত্মহত্যা করে।সে কোনোভাবেই মাদরাসায় পড়ার পক্ষপাতিত্ব ছিলো না ।অভিভাবকগণ জোরাজুরি করে তাকে দিয়ে যান ।
যে পৃথিবীতে অভিভাবকগণ তাদের এনেছেন মুক্তির আলো দেখাতে, ফুল- পাখির মতো আপন সৌরভ বিলাবে, সেখানে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত পরিত্রাণ নেই তাদের ।আনন্দময় অভিজ্ঞতার কোনো উত্তরণ ঘটবে কী কখনো তাদের জীবনে ?এই শিশুমন ভিতরে ভিতরে বিদ্রোহী হয়ে উঠছে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই ।সাহসে ,ধৈর্যে , প্রজ্ঞায়- তিতিক্ষায় আর কখনো কী জন্মাবেন আমাদের উত্তরসূরিগণদের মতো কেউ ?
এই শিশুগুলোর কোনো শারীরিক – মানসিক বিকাশ নেই ।নেই দুরন্ত শৈশব ।থাকবে শুধু কষ্টকর অতীত ।খেলাধুলা ,সাহিত্য,সংস্কৃতির ঐতিহ্যের সংস্পর্শে যে বিপুল জীবনাবেগ বাইরের জগত থেকে গড়ে ওঠে ছেলেবেলায় তা তারা ধারণ করতে ও অক্ষম ।প্রতিমুহূর্তে সেই শিশুগুলো শৈশবকালের সুখগুলো হারিয়ে ফেলছে।
আনন্দঘন শিক্ষাভুবনে যাত্রা হোক শিশুমন ।
‘ মানবসত্য’ বিশ্বভুবনে – শিশুভুবনের অস্তিত্ব তাদের মধ্যে একাত্মক হোক ।নিজের চিন্তার আনন্দে মনের জ্যোতি সুস্পষ্ট হোক ।জীবনস্মৃতিতে ভরে উঠুক ভাবের উদয় ।
প্রিয় অভিভাবকগণ ,
অন্ধকার ঘুপচিখানার ভেতর থেকে সরকারি প্রাইমারি স্কুলে পাঠান এই কোমলমতি শিশুদেরকে ।আকাশ ফাটিয়ে তারা সমস্বরে গেয়ে উঠুক …
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews