গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার দেশে-বিদেশে বাংলা ভাষার উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। পরিবার-পরিজন ও সন্তানদের যেসব অঞ্চলে প্রবাসী-ব্যবসায়ীরা আছেন, সেখানে তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে আমরা অনেক দিন যাবৎ বাংলাদেশি স্কুল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিলাম। স্কুলগুলোর উন্নয়নের জন্য কিছু কিছু জায়গায় আমরা সহযোগিতা দিয়েছি। ’
শুক্রবার (১১ মার্চ) রাত ৮টার দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর উপলক্ষে অনুষ্ঠিত নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুধাবির আবাসস্থল হোটেল সাংগ্রিলা থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি ভার্চুয়ালি রাস আল খাইমাহ বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘২০১৯ সালে যখন আমি আমিরাতে এসেছিলাম তখনো এখানে বাংলাদেশি স্কুল চালুর ব্যাপারে আলোচনা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী বিষয়টি আমাকে জানিয়েছিলেন, স্কুলটির কিছু উন্নয়ন দরকার। স্কুলটা যেন বন্ধ না হয় তার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন সেখানে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আজ আরব আমিরাতে উপস্থিত হয়ে এ রকম একটি কার্যক্রমের উদ্বোধন করতে পেরে আমি আনন্দিত। ’
প্রধানমন্ত্রী ১৫ আগস্ট হত্যাযজ্ঞের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘দেশের বাহিরে থাকায় আমি আর শেখ রেহানা ১৫ আগস্টের ঘটনায় হয়তো বেঁচে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা আমাদের পাসপোর্টটা পর্যন্ত আটকে রেখেছিল। প্রবাসে রিফিউজি হিসেবে আমাদের থাকতে হয়েছে। একদিকে পরিবারের শোক, অন্যদিকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেদের পরিচয়টা পর্যন্ত দিতে পারিনি। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে দেশে আমার বাবা-মা, ভাই-বোনকে হত্যা করা হয়েছিল, আমাদের কোনো অধিকার ছিল না বিচার চাইবার। কারণ খুনিদেরকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। তাদের কোনো বিচার করা যাবে না। তাদের বাঁচাতে ইন্ডামনিটি আইন জারি করা হয়। অপরাধ করা সত্ত্বেও তাদেরকে মুক্ত করে তাদেরকে পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। জনগণের ভোট চুরি করে তাদেরকে পার্লামেন্টে বসানো হয়েছিল। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার দেশের নাগরিককে পাশবিক অত্যাচার করে, ঘরবাড়ি লুট করে, অগ্নিসংযোগ করে, গণহত্যা চালিয়েছিল, তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা করা হয়েছিল। অর্থাৎ রাজত্ব শুরু হয়েছিল খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের। ’
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান করেছিলাম, আমাদের মাটি আছে, যে যা পারেন আপনারা ফসল ফলান। এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। আমি আবারও বলব, যারা প্রবাসে আছেন আপনাদের পরিবারের সদস্যদের বলবেন এক ইঞ্চি জমিও যেন তারা খালি না রাখে। কিছু না কিছু যেন আবাদ করে। একটা ঝালের গাছ লাগালেও যেন লাগাই। অন্তত নিজেরটা যেন নিজে করে খেতে পারে। তাহলে বিশ্বব্যাপী যতই মন্দাবস্থা আসুক খাদ্য ঘাটতি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের অসুবিধা হবে না।
প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের এয়ারপোর্টে হয়রানি বন্ধের জন্য সিসিটিভি স্থাপন ও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকার্য সম্পন্ন হলে এ ভোগান্তি আরো কমে আসবে।
এ সময় সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফরের সঞ্চালনায় একযোগে আবুধাবি থিয়েটার, বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাই, বাংলাদেশ প্রাইভেট স্কুল ও কলেজ রাস আল খাইমার এ আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের সঙ্গে অংশ নেন।
গ
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট