মানুষ সামাজিক জীব। সমাজ ছাড়া মানুষ চলতে পারে না। একা একা সমাজ গঠনও সম্ভব নয়। কোনভাবেই মানুষ একা চলতে পারে না বা উচিতও নয়। সকল সামাজিক, পারিবারিক বা মানসিক বাঁধা ডিঙ্গিয়ে সুখী সুন্দর পরিবার গঠন করা বা জীবন যাপন করাই হলো প্রকৃত মানুষের প্রধান কাজ। এই কাজ করতে গিয়ে অনেক সমস্যা আসবে। সেই সমস্যাকে জিইয়ে রেখে নিঃসঙ্গ থাকাকে কোনভাবেই সমাধান বলা যাবে না। ধর্মীয়, সামাজিক, পারিবারিক বা মানসিক যে দৃষ্টিকোন থেকেই বলি না কেন মানুষ একা থাকতে পারে না এবং একা থাকা উচিত নয়, পার্টনার ভীষনভাবে প্রয়োজন। পার্টনার মানে হতে পারে বন্ধু, হতে পারে স্বামী বা স্ত্রী, হতে পারে প্রেমিক বা প্রেমিকা, ভাইবোন যে কেউ পার্টনার হতে পারে। পৃথিবীকে সুন্দর করে সাজানো আপনার একার পক্ষে সম্ভব নয়। কবি, লেখক ও নারী উদ্যোক্তা কেয়া তালুকদা তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন-
আমাদের জাগতিক জীবনে বন্ধু-বান্ধুবী, প্রেমিক-প্রেমিকা, স্বামী-স্ত্রীই হলো খুব কাছের আপনজন ৷ এদের সাথে শুরুতে সম্পর্ক ভালো থাকলেও কিছুদিন পর তার আচরণ, মতামত, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয় ৷ প্রতিটি মানুষই স্বাতন্ত্র্য, স্বাধীন ৷ তাদের সাথে সব বিষয়ে যে মিলতে হবে তা তো নয় ৷ তবে নূন্যতম মর্যাদাবোধ না থাকলে সেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী করা সম্ভবও নয় ৷ সিদ্ধান্ত নিতে হলে ভেবে চিন্তেই নিতে হবে তার সাথে আপনি কতখানি মিলেমিশে থাকতে পারবেন ? যদি মনে হয়, আপনি তাকে ছাড়াই জীবনের বাকী পথ চলার সাহস রাখেন তাহলে সেসব সম্পর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে আনাই শ্রেয় ৷ যেখানে আপনি সুখী নন, প্রতিটি মুহূর্তে আপনাকে আপনার নিজের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করতে হচ্ছে ৷ তা হয়তো সবসময় মেনে নেওয়া যায় না ৷ আমরা নারী পুরুষ মেনে নিতে নিতে নিজের বলে কিছু থাকেনা ৷ নিজের আত্মসম্মান বলে কিছু তো আছে ৷ যখন বিবেকের তাড়না গুলি মনে করে মনের গহীনে ক্ষত তৈরী হয় ৷ সেই আঘাত থেকে নিজেকে সরিয়ে আনা খুবই মুশকিল ৷ আপমানগুলো ভুলে থাকাও যায়না ৷ একসময় মরে যেতে ইচ্ছে করে ৷ তবুও শিরদাঁড়াকে শক্ত করুন ৷ পায়ের নীচের মাটিকে নরম কাদা মনে না করে ধীর স্থিরভাবে জীবনের সামনের দিনের পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে যান ৷ অবসর সময়গুলো কোন সেবামূলক, সৃজনশীল কাজে নিয়োজিত করুন ৷ মনে রাখবেন, নিজের স্বত্তাকে বিলিয়ে দেয়ার মাঝে বীরত্ব নেই ৷ আপন ভুবনকে সাজাতে হবে আপনার ভালো লাগা বিষয়গুলো নিয়ে ৷ সেটা যেন আবার অনৈতিক কোনো কিছু না হয় ৷ হতাশাকে আঁকড়ে ধরে জীবনটাকে কেন পার করবেন ? ঝেরে ফেলুন অতীতকে; সামনের দিনে সোনালী স্বপ্নকে উজ্জ্বল আলো দেখাতে হবে অবশ্যই ৷ মননের প্রশান্তিকে বলি দিয়ে কোনো নেতিবাচক সম্পর্কের বলি হতে যাবেন কেন ? বাঁচুন শত সহস্র বাঁধাকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ৷ কঠিন পথটাকে সহজ করে গড়ে তুলতে হবে আপনাকেই ৷ সম্ভব হলে ঘুরে বেড়ান সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে ৷