শিক্ষিকা লতা সমাদ্দারকে টিপ পরা নিয়ে হেনস্তাকারী পুলিশ সদস্যকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে। রবিবার বিকেলে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’ ব্যানারে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এ দাবি জানানো হয়।
শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে সাবেক ছাত্রনেতা আকরামুল হকের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন সংস্কৃতিকর্মীরা। কর্মসূচি ঘোষণা করেন রবীন আহসান।
সঞ্চালনা করেন খান আসাদুজ্জামান মাসুম।
রবীন আহসান বলেন, যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার ও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো না হয়, তাহলে শাহবাগে সমাবেশ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সভাপতির বক্তৃতায় সংগঠক আকরামুল হক বলেন, ‘দাবি মানা না হলে আমরা তেজগাঁও কলেজের সামনে প্রতিবাদী অবস্থান করব। সেখান থেকে থানায় যাব। ‘
নারীপক্ষের সংগঠক মনীষা মজুমদার বলেন, একজন নারী শিক্ষককে টিপ পরার কারণে অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়া হয় এবং তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। তাকে গালি দেওয়া ও হত্যাচেষ্টা বাংলাদেশ আইনে স্পষ্ট অপরাধ। এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সংগীতশিল্পী শতাব্দী ভব বলেন, ‘৩০ লাখ মানুষ রক্ত দিয়েছে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য। মেয়েরা টিপ পরলে দোষ, সাইকেল চালালে দোষ। মেয়েরা যা করবে তা-ই দোষ এ দেশে। আমরা ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান মানছি না। লতা সমাদ্দারের ঘটনাসহ প্রত্যেকটা ঘটনার বিচার চাই। ‘
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতা মুক্তা বাড়ৈ বলেন, ‘এটা শুধু টিপ পরার বিষয় নয়। এটা বাংলাদেশের সংস্কৃতি। আমরা বাংলার হিন্দু-মুসলমান সবার আগে বাঙালি। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি। ‘
ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি বিকাশ সাহা বলেন, ‘যেই লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই বাংলাদেশ এখন আর নেই। আমরা ২০২২ সালে এসে দেখতে পাই, একজন শিক্ষক টিপ পরার কারণে অসদাচরণের শিকার হন। ওই পুলিশ সদস্য শুধু অসদাচরণ করেই ক্ষান্ত হননি। সেই নারীকে অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়া হয় এবং পায়ের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়া হয়। ‘
শনিবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে হেনস্তার শিকার হন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ড. লতা সমাদ্দার। তিনি অভিযোগ করেন, হেঁটে কলেজের দিকে যাওয়ার সময় হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দেন তাকে। ওই মধ্যবয়সী ব্যক্তির গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট