বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারি সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। গতকাল সোমবার রাতে ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে এ আগ্রহ জানান তিনি।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ. কে. আব্দুল মোমেন বৈঠকে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে ঈর্ষনীয় অর্থনৈতিক উন্নতির দেশ উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে যে দুর্বলতা আছে তা পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা প্রণয়ন করে ঢাকা-ওয়াশিংটন সংলাপের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে সম্পর্কের সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। টিকা, অর্থনীতি, বিনিয়োগ, জলবায়ু, শ্রমিক অধিকার, র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল, বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত আনা, ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং রোহিঙ্গা ইস্যু গুরুত্ব পেয়েছে। বৈঠক শেষে ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে বলেছি, র্যাব একটি ভাল প্রতিষ্ঠান, তাদের কারণে দেশে সন্ত্রাস কমেছে এবং র্যাবের জবাবদিহিতা আছে, তোমরা তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে আমরা খুশি হব। ব্লিনকেন আমাকে বললেন, এটার একটা প্রক্রিয়া আছে। আমি বললাম যে গত চারমাসে কেউ মারা যায়নি। উনি বললেন, এটা আমি জানি। এই বিষয়ে উন্নতি করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। ভিডিও বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে একটু সময় লাগবে। কেননা এটা যুক্তরাষ্ট্রের নির্দিষ্ট একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে। এই সংক্রান্ত কমিটির সঙ্গে কাজ করে তাদেরকে খুশি করতে হবে, কমিটির চেয়ারম্যান মেম্বার সবাইকে খুশি করতে হবে। বাংলাদেশের শ্রম অধিকার এবং শ্রম পরিবেশ নিয়ে দুই মন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠকের আগে সোমবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিনকেন এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদার আরো ঘনিষ্ঠ করার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের শ্রম অধিকার আরও উন্নত করার সুপারিশ করেন।
দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, শ্রম অধিকার বিষয়ে বাংলাদেশে যে সকল উন্নতি করেছে সেসব বিষয় সম্পর্কে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছি। তাদের বলেছি, আমরা আইএলও এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পরামর্শ করে শ্রম অধিকার খাতের উন্নয়ন করছি। তার পরেও এই খাতে আমাদের যে সকল দুর্বলতা আছে তা কাটিয়ে উঠতে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সংলাপ বা একটা কমপ্লিট রোডম্যাপ প্রস্তুত করে একসাথে কাজ করতে পারবে। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের আরো বলেন, ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, অবাধ, উন্মুক্ত, অন্তর্মুখী এবং নিরাপদ ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল চাই। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট