পার্বত্য জেলা বান্দরবানে পাহাড়ি/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসমুহের নববর্ষ উপলক্ষে ‘সাংগ্রাই উৎসব’-এর মূল আনুষ্ঠানিকতা বুধবার ১৩ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে। তবে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির আদলে চাকমা ও তঞ্চঙ্গা জনজাতি অধ্যুষিত বান্দরবানের কোনো কোনো জনপদের অধিবাসীরা মঙ্গলবার ফুলবিঝুর মধ্য দিয়ে বিঝু/বিষু অনুষ্ঠান শুরু করেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে বান্দরবান শহরসংলগ্ন শংখ নদীর রোয়াংছড়ি বাস স্টেশন ঘাটে ফুলবিঝু অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নান্যারফুল সোসিয়াল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন।
সংগঠনের ব্যানারে বিপুলসংখ্যক চাকমা ও তঞ্চঙ্গা নারী মঙ্গলবার ভোর থেকে শংখ নদীর ঘটে উপস্থিত হতে থাকেন।
পরে তারা সমবেতভাবে নদীর শান্তজলে বিঝুফুল ভাসিয়ে দিয়ে জগতের সবার মঙ্গল কামনা করেন।
বান্দরবানে শান্তিচুক্তি স্বীকৃত ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পাশাপাশি আরো ৩/৪টি জনগোষ্ঠীর বসবাস হলেও মারমা, ম্রো, খেয়াং, খুমি জনজাতির সংখ্যাধিক্যের কারণে এই জেলায় নববর্ষকেন্দ্রিক উৎবের নাম ‘সাংগ্রাই’।
শান্তিচুক্তির পর থেকে গত প্রায় দু’যুগব্যাপী ত্রিপুরা জনগোষ্ঠির নববর্ষ অনুষ্ঠানের নাম বৈসুক, মারমা জনগোষ্ঠীর নববর্ষ উৎসব সাংগ্রাই এবং চাকমা জনগোষ্ঠির বিজু/বিষু/বিহু উৎবের আদ্যক্ষর নিয়ে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় ‘বৈসাবি’ উৎসবের আয়োজন হয়ে আসছে। তবে মিয়ানমার সংলগ্ন দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশের সবশেষ জেলা বান্দরবানে
উৎসব উদযাপন কমিটি ও বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট (কেএসআই) জেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যৌথভাবে ‘সাংগ্রাই’ উৎসবের আয়োজন করে থাকে।
কেএসআই-এর পরিচালক মং নু চিং সোমবার দুপুরে কালের কণ্ঠকে জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে নববর্ষের ৫ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা শুরু হবে। তিনি জানান, গৃহীত অনুষ্ঠানমালা অনুযায়ী ১৩ এপ্রিল সকালে শহরের রাজার মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শহর এলাকা প্রদক্ষিণ করে কেএসআই প্রাঙ্গণে এসে শেষ হবে। পরে কেএসআই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বয়স্ক/প্রবীণ পূজা।
১৪ এপ্রিল বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে বুদ্ধমূর্তি স্নান। সাংগ্রাই উৎবের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মৈত্রী পানি বর্ষণ বা ওয়াটার ফেস্টিভাল উজানী পাড়াসংলগ্ন শংখ নদীর পাড়ে অনুষ্ঠিত হবে ১৫ ও ১৬ এপ্রিল বিকেলে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট