পর্ব-৩১
সময় যখন কাটে না কয়েক সেকেন্ড ও এত দীর্ঘ হয়ে যায়! মাত্র সাড়ে সাতশো স্কোয়ার ফিটের ফ্ল্যাটটাকেও মনে হয় জনহীন প্রান্তর। কিছুক্ষণ ঝুম মেরে বসে রইলাম বিছানায়। কী ভেবে উঠে টিভি টা চালিয়ে দিলাম। একা একা টিভি দেখতে ও ভালো লাগে না। পর্দায় চলমান ছবি ভেসে উঠছে, কেউ হাসছে, কেউ কাঁদছে, কেউ গান গাইছে, কেউ ভালোবাসছে কাউকে, কেউ কাউকে মেরে ফেলছে আর আমি একা বোকার মতো বসে বসে দেখছি সেসব। সবই কেমন অলীক লাগে আমার। পর্দার মানুষগুলোর সঙ্গে কিছুতেই ঠিকঠাক সংযোগ ঘটেনা আমার। যেন মনে হয় পুতুলের নড়াচড়া দেখছি, আমি ও এক পুতুল। কয়েকদিন হলো অহনা ছোট একটা কাঁচের গোলমতো এ্যাকুরিয়াম এনেছে সাথে একটা সোনালী নাম না জানা মাছ৷ মাছটা সারা দিন সাঁতার কেটে যাচ্ছে। আমার মনে হয় ছটফট করছে। সাড়ে সাতশো স্কোয়ার ফিটে আমি যেমন ছটফট করি তেমন। মাছটার প্রতি আমার বেশ মায়া পড়ে গেছে। একটা বাতাসের বুদবুদ ওঠার যন্ত্র লাগিয়ে দিয়েছি সেখানে। মেশিনটা সারাক্ষণ বুদবুদ তৈরি করেই যাচ্ছে। আমার হৃদয়ের গোপন স্মৃতির বুদবুদের মতো।
প্রায়দিনই এখন মেঘ করে থাকে, বৃষ্টিও হচ্ছে ঘনঘন। মুষলধারে কিছু নয়, ঝিরঝির ঝিরঝির। সৃষ্টিছাড়া এই মেঘের পল্টন কোত্থেকে যে আসে! একে তো করোনার আকাল চলছে, তার ওপর এই বৃষ্টির জেরে ঘরে ঘরে অসুখ-বিসুখ ও বেড়েছে হঠাৎ। একটু ভিজলেই সর্দি কাশি জ্বর। কম্মো সারা লোক করোনা ভেবে ভয়ে আধমরা হয়ে ছোটাছুটি করছে। ছোট ছোট ঘূর্ণি উঠছে বাতাসে, দোতলার ব্যালকনি ও ভরে গেছে ধূলোয়, টাইলসের মেঝেতে পাউডারের মতো ধূলোর আস্তরণ। কোত্থেকে এক টুকরো সেলোফেন হাওয়ার তাড়া খেয়ে গ্রিল দিয়ে ঢুকে পড়ল। ভাসছে। সংসার সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো। ঢেউ আসে, ফেনা রেখে চলে যায়। ফেনাও শুকোয় ক্রমশ, পড়ে থাকে সিক্ত বেলাভূমি। আবার সেখানে নিশ্চিন্তে পা ফেলে মানুষ, বালুতটও প্রতীক্ষা করে নতুন ঢেউয়ের। আমি এক সামান্য মানব মাত্র, আমার ক্ষেত্রেই বা এর ব্যক্তিক্রম ঘটবে কেন? ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছি, বর্ষাকাল চলছে। আকাশ আজও সীসে বরণ, মেঘের ভারে নেমে এসেছে নীচে।
বইয়ের র্যকে একটা পুরনো নোট বই খুঁজে পেলাম, দু’বছর আগের জীবনের ঝড়ে পুরনো সব লেখা, সব ডাইরী গুলো হারিয়ে ফেলেছি। এটা কি করে যে রয়ে গেল। আমি আঙুল বোলাচ্ছি পাতায়, অক্ষর গুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছি। অক্ষর, না প্রাণ? অক্ষর, না সময়? অক্ষর,না স্মৃতি? সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাতারা বিবর্ণ, হলদেটে, নীল কালির আঁচড় ফিকে অনেক, তবুও কী মুখর! অসংখ্য স্মৃতি ছুটে এলো টগবগিয়ে, তিরতির করে, দুলতে দুলতে। অদৃশ্য এক কুবো পাখি ডেকে চলেছে বুকে। কুব কুব কুব কুব। ক’দিন টানা বৃষ্টির পর আজ থেকে একটু জিরিয়ে নিচ্ছে আকাশ। তবে মেঘ এখনো পুরোপুরি কাটেনি, ভারী শরীর নিয়ে অলস মেজাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হঠাৎ হঠাৎ হারানো সূর্য দেখা দিয়ে যায়। তার লাজুক আলোয় দুপুরের আকাশ যেন জলরঙে আঁকা ছবি। আমার ঘরেও এক মায়াবী আলোছায়া। চিত্ত বিক্ষেপ ঘটলে মানুষ অনেক সাধারণ জিনিসও ভুলে যায়। দুপুরে হাসপাতালে যাবার কথা ছিল কয়েকটা রিপোর্ট দেখে দিতে হবে। ভুলেই গেলাম।
সন্ধ্যার দিকে বৃষ্টি হয়েছিল, তারই জেরে রাস্তা কোথাও কোথাও ভিজে আছে এখনও। চাঁদ আড়াল হয়ে থাকলেও হলদেটে ও অপরিচ্ছন্ন এক টুকরো আলো আগুনে পোড়া ঘায়ের মতো থমকে আছে এক জায়গায়। আকাশের অবস্থা দেখে মনে হয় যে-কোনও সময় নামতে পারে আবার। হাওয়া নেই, গুমোট ও নেই, বরং একটা ভিজে ভাব চারদিকে। দুরে ট্রাক বা লরি ধরনের কোনও বড় গাড়ির হেডলাইট দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে এগিয়ে আসছে ভারী বডির শব্দ। নৈঃশব্দের ভিতর সেই শব্দ তীব্র হয়ে উঠল ক্রমশ। লোহার বিম বোঝাই লরিটা শব্দ তুলে পেরিয়ে গেল। কপালে এবং হাতে পর পর জলবিন্দুর মতো কিছু ছুঁয়ে যেতে আকাশে তাকালাম। জমাট বেঁধে আছে অন্ধকার। খানিক আগে যে হলদেটে আলো উঁকি দিচ্ছিল আকাশে এখন সেটা অদৃশ্য। অন্ধকারের জন্যেই আকাশ চিরে গেল একটা বিদ্যুতের রেখা। আরও কয়েকটা ফোঁটা গালে এসে পড়ায় অনুমান করলাম, বৃষ্টি।
অনিবার্য আলোয় রাস্তা মুখো বারান্দার রেলিংয়ে দু’হাতের ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে রাস্তা দেখছি। বেলা ন’টা সাড়ে ন’টার রাস্তায় এক ধরনের ব্যস্ততা থাকে – ব্যস্ততাই সঞ্চারিত হয় এলোমেলো শব্দে। কিছু দৃশ্য ও কিছু শব্দ ধরে রাখার চেষ্টা করছি কিন্তু কিছুতেই স্থির হচ্ছে না মনে। সূর্যটা ঠিক কোথায় দেখার জন্য ওপরে চোখ তুললাম, দেখতে পেলাম না; শুধু ধারালো, ধাঁধানো কয়েকটি তির্যক রেখা ঢুকে পড়লো চোখে। মাথাটা আগেই ভার হয়ে ছিল। রোদে দাঁড়িয়ে থাকার কারনেই সম্ভবত আরও ভারী লাগছে। বুকে সামন্য জ্বালা। অম্বলের জন্যেও হতে পারে। কাল রাতে বড্ড দেরী করে খাওয়া হয়েছে। স্মৃতিতে আচ্ছন্নতা, চারপাশের আলোতেও। মাথা জুড়ে দাপাদাপি করছে নিঃশব্দ শব্দ। হঠাৎ প্রচন্ড ঘাম হচ্ছে। কবেকার সেই ইচ্ছের চারাগাছটা বাতাসে কাঁপছে তিরতির। বড়ো এলোমেলোভাবে বেড়েছে গাছটা। তবু কী বিচিত্র বর্ণময় তার পাতাগুলো! লাল নীল হলুদ সবুজ অজস্র রঙে রংবাহার। আমার সমস্ত অতৃপ্ত বাসনা শিকড় হয়ে প্রাণরস জোগাচ্ছে আমার ইচ্ছের গাছটাকে। মাঝে রঙিন সেই গাছের ডালে এসে বসেছিল কুৎসিত হতশ্রী এক দাঁড়কাক! ভাবতে গিয়ে চকিতে মেঘজ্যোতির মতো অনেকদিন পর সে বিশ্বাসঘাতকের মুখটা ঝলসে উঠল চোখের সামনে।
সকাল থেকেই জোর বৃষ্টি নেমেছে। আকাশ এখনও সীসে বরণ,মেঘের ভারে নেমে এসেছে নীচে। টানা বৃষ্টিতে পথঘাট থইথই। এই যে বৃষ্টি এতে সবচেয়ে বেকায়দায় পড়বে অফিসগামী মানুষ গুলো আর ফুটপাতে পসরা সাজানো দোকানী গুলো। খোলা জানালা দিয়ে লাজুক লাজুক বাতাস আসছে মাঝে মাঝে। জোর বৃষ্টি হচ্ছে। এমন দিনে আমার স্বপ্নের কুঠুরি খুলে যায়। আমার একটা স্বপ্নের কুঠুরি আছে। শীর্ন নদী বয়ে চলেছে শরকাশ হোগলার বনের ভিতর দিয়ে, তারপাড়ে ছোট্র বাংলো, বাংলোর ছাদে মাধবীলতা, সেখানে তার আর আমার দিবস রজনী।নিকুঞ্জের উপর রোদ ছায়ার মাখামাখি, হেমন্তের পরে শীত, শীতের পর বসন্ত, আকাশে রঙের খেলা, চাঁদ মেঘের মিলন বিরহ, নিচে তার আর আমার অনন্ত ভালোবাসা। বৃষ্টি হলেই আমার সে স্বপ্নের কুঠুরি আমাকে নিয়ে চলে এক প্রমত্ত যৌবনে। বাইরে এক নিষ্করুন বারিধারা। গত দু’ বছর আগে আমার দুর্ঘটনার পর থেকে আমার অনেকের সাথেই সম্পর্ক এখনও স্বাভাবিক হয়নি,বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া পরস্পরের কথাও হয় না। যাও বা হয়, ভাববাচ্যে। ক্রিয়াপদবিহীন। এখন বৃষ্টি নেই। ফ্ল্যাট ময় ফিরে বেড়াচ্ছে এক স্যাঁতস্যাঁতে বাতাস। হালকা একটু রোদের হল্কা। একটু জিরিয়ে নিচ্ছে আকাশ। তবে মেঘ এখনো পুরোপুরি কাটেনি, ভারী শরীর নিয়ে অলস মেজাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে আকাশময়। তার ফাঁকে হঠাৎ হঠাৎ সূর্য চোখ খুলছে। তার লাজুক আলোয় দুপুরের আকাশ যেন জলরঙে আঁকা ছবি। আমার ঘরে এক মায়াবী আলোছায়া।
ইদানিং খুব উদ্বেগে দিন কাটছে। উদ্বেগের ও প্রাণ আছে, প্রাণীদের মতো তার রুপভেদ ও অজস্র। কখন ও সে তুষের আগুনের মতো ধিকিধিকি জ্বলে। কখনও বা একছিটে মেঘ হয়ে দেখা দেয় মনের আকাশে, ক্রমশ দখল করে নেয় হৃদয় গগন। আবার কখনও বা নিজের ফুঁয়েই নিজে হাওয়া ভরা বেলুনের মতো আতিকায় হয়ে ওঠে। আব্বা সব সময় বলতো সৎ পথে খেটে খাবি। মরে গেলেও চুরি জোচ্চুরি করে পকেট ভরাস না, দেখবি পেট আপনিই চলে যাবে।
তাই হয়তো কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা নেই আমার। দিনতো চলে যাচ্ছে। অসৎ লোকগুলো নিজেদের স্ত্রী ছেলদের মুখ দেখায় কি করে?? অথবা অসৎ লোকদের স্ত্রী রা নিজেদের কাছে নিজেরা মুখ দেখায় কী করে?? বাতাস বইছে। মৃদু, অতি মৃদু। ছিরছিরে বৃষ্টি নেমেছে বাইরে। আলো কমে এসেছে খুব। এই মুহুর্তে এই ঘরে নিজেকে ভিন্ন গ্রহের মানুষ মনে হচ্ছিল। বৃষ্টি পড়ছে। মুষলধারে, বড় বড় দানায়। জলের ঝাপটায় ভেসে যাচ্ছে ব্যালকনি। ধোঁয়া ধোঁয়া জলকণা মথিত করছে ত্রিভূবণ।
হৃদয়ের গভীরে, অনেক গভীরে, কোথায় যেন একটা ভুমিকম্প হচ্ছে। বাতাসে এখন হিমরেণু।দুরের আকাশ তার জমাট দুঃখের নিশ্বাস পাঠাচ্ছে এই শহরে।বর্গাকার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। আচমকা মহিলাকন্ঠ ছিটকে আসছে,তারপরই সম্পূর্ণ নীরব। কে যেন কাকে খুব জোরে বকে উঠল। একটা বাচ্চা কাঁদছে। সংসার হল গিয়ে দড়ির ওপর হাঁটা। আমাদের সামনের ফ্ল্যাটের এক বৃদ্ধা দিনরাত বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি যেন ভাবেন,রোদ্দুর আলো বাতাসের গন্ধ নেন। কীসের যেন একটা শব্দ হচ্ছে। একটা পাখি। কার্নিশ ছেড়ে সাঁ করে উড়ে গেল সামনের ফ্ল্যাটের ছাদে। দুর থেকে একবার ঘাড় ফেরালো আমার দিকে,তারপর মুখ ঘুরিয়ে নেমে এল কার্নিশে। সেখান থেকে আবার গুলমোহর গাছে উড়ে যাচ্ছে। উড়ছে। উড়ছে। দেখতে দেখতে দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে গেল পাখি। ইস্ মানুষের যদি ডানা থাকতো?? দিনকাল যত পাল্টাচ্ছে, সমাজ বদলাচ্ছে, ভাঙচুর হচ্ছে পুরনো, প্রচলিত ব্যবস্থায়, ততই এবং তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিয়তিও বদলাচ্ছে মানুষের। একটা লোকের থাকা না থাকার মধ্যে ব্যবধান সঙ্কুচিত হয়ে আসছে ক্রমশ,মানুষের অস্তিত্ব হয়ে পড়ছে অকিঞ্চিৎকর। মানুষের সাথে মানুষের যে সম্পর্ক, মৃত্যুর পরেও তার কোন রেশ থাকে কি??
আকাশের ভাবগতি দেখে মনে হচ্ছে যে কোন সময় নামতে পারে আবার।
চোখ বুজলেই স্মৃতির মিছিল। একটা গরম বাতাস আলগা ভাবে বয়ে গেল বুকের ভেতর দিয়ে। কত সযত্নে যে কত ক্ষত লালন করছি। কে জানে কেন বুকের ভেতর একটা সূঁচ বিঁধছে।আমাদের বাসার এ দিকটায় দিনের নেলাতেও নির্জনতা থাকে, আর রাতের দিকে আরও।শব্দ যেন কড়া শাসনে বাঁধা।অল্প চওড়া কংক্রিটের রাস্তার দু’পাশে সুদৃশ্য বাড়ি। এক একটা এক এক ডিজাইনের, কোনওটায় গেট আছে, কোনওটায় কোলাপসিবল টানা নিরাপত্তা। নিঃশব্দ চারদিক। বাঁকের মুখে রাস্তার ধারে জঞ্জাল শুঁকছে একটা কুকুর। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখছে আমার দিকে। রাতে বৃষ্টি হয়েছে। তারই জেরে রাস্তা কোথাও কোথাও ভিজে আছে এখনও। সূর্যের আলোয় সে অপরিচ্ছন্ন জলে কেমন একটা সোনালী আভা লেপে দিয়েছে। হাওয়া নেই, গুমোটও নেই বরং একটা ভিজে ভাব চারদিকে। সকালে প্রচন্ড মাথা ব্যাথা নিয়ে অফিসের জন্য বেরিয়ে গেছে অহনা। ভোরে ঘুম থেকে জাগিয়ে বলল ওর মাথা ব্যাথার কথা। ঈষৎ আচ্ছন্ন লাগছিল অহনাকে। ঔষধ তুলে দিয়েছি ওর হাতে। খেয়েছে কিনা কে জানে?? ঔষধ খাওয়ায় এতো অনীহা ওর, কেন কি জানি?
অহনা অফিসের জন্য বেরিয়ে যেতেই আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। জানালা দিয়ে রোদ এসে পড়ছে মুখে। ঘাড়ের পেছনে হাল্কা ব্যাথা অনুভব করছি। ভার লাগছে মাথাও। কাল রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল থেকে থেকে। আকাশের অবস্থা দেখে একবারও মনে হয়নি সকালেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। নিজেকে ছায়ায় সরিয়ে নিতে নিতে বিছানাটা বড় অদ্ভুত লাগলো আমার। হাত বাড়িয়ে অহনার বালিশটা টেনে নিলাম। বালিশে অহনার চুলের গন্ধ। আলস্যের মধ্যে এপাশ ওপাশ করছি। ঘর শুন্য। রোদ বাড়ছে। চা খেতে খুব ইচ্ছে করছে। চা -টা আস্তে আস্তে শেষ করলাম। টিভি অন করলাম। আজও শিরোনাম করোনায় মৃত্যুর মিছিল , ভারত চিন গরমাগরমি, এই করোনার আকালেও ধর্ষন, দর্শকহীন মাঠে স্প্যানিশ ফুটবল । ধ্যেত।
বাইরে এলোমেলো শব্দ। রাস্তার ব্যস্ততাই সঞ্চারিত হয় এলোমেলো শব্দে। এক ধরনের বিমুঢ়তা এখনও ঘিরে আছে আমাকে। অস্পষ্ট একটা কাঁপুনি ছড়িয়ে পড়ছে শরীরে। হঠাৎ কানে এলো চিলের চিৎকার। চিলটা ঠিক কোনখানে তা দেখতে গিয়ে ওপরে তাকালাম, রোদের তীব্রতায় চোখ নামিয়ে নিতে হল সঙ্গে সঙ্গেই। নিজেই টের পাচ্ছি চিন্তা একদিক থেকে আসছে না, আসছে সহস্রমুখ হয়ে। স্থির হতে পারছি না। ঘুম হচ্ছে না। চাপা, অবর্ণনীয় কিন্তু অসহ্য নয়, একটা যন্ত্রনা হচ্ছে মাথায়। স্মৃতিতে আচ্ছন্নতা আর চারপাশের আলোতেও। মাথা জুড়ে দাপাদাপি করছে নিঃশব্দ শব্দ। টিভি বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম। আমার হিসাব বলে মাঝে মাঝে মস্তিষ্কের ও বিশ্রাম প্রয়োজন। টিভির চিন্তাশুন্য নির্বোধ ফিল্মিক দৃশ্যগুলোর চেয়ে ভালো বিশ্রাম কী হতে পারে! এতে মস্তিষ্কের কোষগুলো আবার তরতাজা হয়ে ওঠে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট