অনলাইনে নতুন কাপড়ের অর্ডার করলে কুরিয়ারে পাঠানো হতো ছেঁড়া কাপড়। চক্রটি মূল্য ছাড়ের ঘোষণা দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে পণ্যের অর্ডার নিত। পরে এসব পণ্যের ডেলিভারি দেওয়া হতো কুরিয়ারে। এতে তারা দিত পুরনো ও ছেঁড়া কাপড়ের ডেলিভারি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২০ থেকে ৩০টি ফেসবুক পেজ খুলে বিভিন্ন পণ্যসহ শাড়ি ও থ্রিপিসের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে এভাবে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। এমন একটি প্রতারকচক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ।
গত রবিবার রাতে হাজারীবাগ থানার শঙ্কর এলাকার চারতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. বাপ্পি হাসান, মো. আরিফুল ওরফে হারিসুল, মো. সোহাগ হোসেন, মো. বিপ্লব শেখ ও নুর মোহাম্মদ। এর মধ্যে বাপ্পি এই চক্রের মূলহোতা।
পুলিশ সূত্র জানায়, সম্প্রতি ডিএমপির পল্টন থানায় এক ভুক্তভোগী এ নিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এর পরই এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ। গতকাল সোমবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রাজীব আল মাসুদ।
ডিবি সূত্র জানায়, অনলাইনে অর্ডার করা পণ্যের বদলে পুরনো, ছেঁড়া কাপড় পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে চক্রটির সঙ্গে যোগাযোগ করতেন ক্রেতারা। তখন ক্রেতাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করত তারা। সর্বশেষ ক্রেতাদের ফোন নম্বর ও ফেসবুক আইডি ব্লক করে দিত তারা। গ্রেপ্তার হওয়া সবার বাড়ি নড়াইল। চক্রের আরেকটি গ্রুপ নড়াইলে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ডিবি জানায়, চক্রটি প্রতিদিন ১০০-১৫০টি পার্সেল পাঠাত। এভাবে তারা মাসে ২০-৩০ লাখ টাকা আয় করত। পাঁচ-ছয় বছর ধরে তারা এভাবে প্রতারণার ব্যবসা করছে। তাদের সঙ্গে কুরিয়ার সার্ভিসের লোকজনও জড়িত।
রাজীব আল মাসুদ বলেন, চক্রটি ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ খুলে আকর্ষণীয় পণ্য বিশেষ করে মেয়েদের পোশাকের চকটকদার বিজ্ঞাপন দিত। স্বাভাবিক মূল্যের অনেক কম মূল্য লিখে তারা এসব পোশাকের বিজ্ঞাপন দিত।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানান, পাঁচ-ছয় বছর ধরে তাঁরা প্রতারণার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাঁরা কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান এসএ পরিবহনকে ব্যবহার করে অনেক প্রতারণা করেছেন। তাঁরা এসএ পরিবহনের কয়েকজন কর্মকর্তার নাম বলেছেন, যাঁরা প্রতারণার বিষয়টি জানেন। তাঁদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। ’
ডিসি রাজীব বলেন, ‘আমরা চক্রটির ২১টি ফেসবুক পেজের সন্ধান পেয়েছি, যার মাধ্যমে তারা প্রতারণা করত। ১৭৭টি পুরনো শাড়ি, থ্রিপিস জব্দ করেছি। এসব কাপড় সাধারণত বাসাবাড়ি থেকে তারা কিনে নিত। তারা এসব কাপড় কিনে ভালো পণ্যের নামে মানুষকে ডেলিভারি দিত। ’
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট