বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৭০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা সংসদের উদ্যোগে আজ বিকাল ৪ টায় জেলা কার্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা সংসদের সভাপতি মোঃ সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহানুর রহমান সোহানের পরিচালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় আলোচনা করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোঃ আমিনুল ফরিদ, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী শেখ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বগুড়া জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কমরেড মোঃ ফজলুর রহমান, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী বগুড়া জেলা কমিটির সদস্য আলি মাহমুদ ফারুক কচি, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন বগুড়া কমিটির সভাপতি সাজেদুর রহমান ঝিলাম,সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ কবির খান পাপ্পু, ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়ার সাবেক সহ-সভাপতি মিঠুন পাল, জেলা সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি আকতার-উজ-জামান টুটুল, সাবেক কোষাধ্যক্ষ সায়মা আক্তার, ছাত্র ইউনিয়ন আজিজুল হক কলেজ সংসদের সভাপতি আরমানুর রশিদ আকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় ভৌমিক, ছাত্র ইউনিয়ন শাহ সুলতান কলেজ সংসদের সভাপতি বায়েজিদ রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আফ্রিক হাসান প্রান্ত, ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছাব্বির আহম্মেদ।
দেশবাসীকে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শুভেচ্ছা ও অভিবাদন জানিয়ে বক্তারা বলেন, “প্রগতিশীল ঐতিহ্যবাহী গণতান্ত্রিক মানুষ গড়ার কারখানা হিসেবে ছাত্র ইউনিয়ন দায়িত্ব পালন করে আসছে। আধো-আধো দৃষ্টিভঙ্গির চোখকে ফুলের পাপড়ির মত ফুটিয়ে তোলে ছাত্র ইউনিয়ন। সমাজ রাজনীতি নিয়ে বিশ্লেষণ করতে শেখায়। বিজ্ঞানমনস্ক, সাহিত্য মনা, দেশ মাটি মানুষ প্রকৃতিকে চিনতে শেখায়। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা বাড়ায়। মানুষকে মানুষ হয়ে উঠতে শেখায়। ১৯৫২ সাল থেকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন লক্ষ লক্ষ শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ গড়ে তুলেছে, প্রগতিশীল সমাজ গড়ে তুলেছে।
ধর্মান্ধ , সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী, মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি আজ সংগঠিত। তারপরও এ সমাজের সর্বক্ষেত্রে জায়গা করে নিতে পারেনি তাঁর উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে লক্ষ লক্ষ ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা সমাজে তাদের অবদান রাখছে এবং সমাজে ভারসাম্য বজায় রাখছে। ১৯৫২ সাল থেকে ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান , একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে , সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন , ৯০ এর গণঅভ্যুত্থান, গণজাগরণ মঞ্চ , জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে লড়াইসহ ইতিহাসের সকল অধ্যায়ে ছাত্র ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে । ইতিহাস মানে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন মানে ইতিহাস।
পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্র সংগীত নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে, সুস্থ চলচ্চিত্র নির্মাণের দাবিতে, মননশীল সাহিত্যের চর্চায়, বইপড়া কর্মসূচি, জ্ঞানভিত্তিক বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় ছাত্র ইউনিয়ন অনন্য।
শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র অধিকার দাবী আদায়, গণমুখী শিক্ষানীতির দাবি , ছাত্রদের নিত্যনতুন সমস্যা নিয়ে আন্দোলন সংগ্রামের নাম বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন । ক্রমানুসারে সংখ্যা দিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন বিচার করা যাবে না । ছাত্র ইউনিয়ন আদর্শবাদী ,ত্যাগী মেধাবী ,সৎ কর্মের একটি ঠিকানা।
ছাত্র ইউনিয়ন এর মূল লক্ষ্য সমাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্রের সংগ্রামে সমাজতান্ত্রিক দল শক্তিসমূহের লড়াইয়ের উর্বর ভূমি তৈরি করছে ছাত্র ইউনিয়ন।”
বক্তারা ছাত্র ইউনিয়নের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন এবং স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শিক্ষার সংগ্রাম, গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, এদেশের মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ছাত্র ইউনিয়ন অতীতের ন্যায় গৌরোবোজ্জ্বল ভুমিকা পালন করে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে সে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা সংসদের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক নাইম ইসলাম , তুবা,শ্রাবনী,বৃথি,প্রমিতা বরুয়া জতি পোদ্দার, প্রমুখ।