জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মালয়েশিয়ার মানবাধিকার কমিশনে আবেদন করেছেন বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামান। তাঁর আশঙ্কা, বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনবে। আর এতে তাঁর জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। প্রত্যর্পণের চেষ্টা ঠেকাতে তিনি মালয়েশিয়া সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন দেড় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৩ এপ্রিল এম খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করে। এরপর মালয়েশিয়ার সংবাদপত্র ফ্রি মালয়েশিয়া টুডেকে তিনি বলেন, তাঁকে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত নেওয়ার জন্য এই মামলা করা হয়েছে।
তিনি বর্তমানে মালয়েশিয়ায় শরণার্থী হিসেবে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশে তাঁর অনুপস্থিতিতেই বিচার হতে পারে। দুদকের মামলার পরপরই তিনি মালয়েশিয়ায় মানবাধিকার কমিশনে নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেন।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর প্রদেশের আমপাং এলাকার বাসা থেকে সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে আটক করে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে জানায় মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে। তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট। আগামী ২০ মে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে দেশটির আদালত। আদলাতের পক্ষ থেকে শুনানির আগে তাকে হস্তান্তর না করার জন্য বলা হয়।
এম খায়রুজ্জামান সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর। তার বিরুদ্ধে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেল হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। জেল হত্যার পর খায়রুজ্জামানকে সেনাবাহিনী থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর তিনি মিসর ও ফিলিপাইনের বাংলাদেশ মিশনে নিযুক্ত ছিলেন।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিনি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তাকে ওই পদ থেকে বাতিল করে দেশে ফিরতে বলা হয়। তবে তিনি দেশে না ফিরে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সেখানে শরণার্থী হিসেবে ছিলেন। তিনি ইউএনএইচসিআরের শরণার্থী কার্ড পাওয়ার পর মালয়েশিয়ায়ই বসবাস করছেন।
এর আগে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে অবসরে পাঠিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ২০০৩ সালে তিনি আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট