1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪১ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :

সুদৃঢ় হোক সামাজিক বন্ধন

সোহেল আহমেদ খান
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৪ মে, ২০২২
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করবে এটা অবশ্যই মানুষের গুন। যেখানে থাকবে সামাজিক বিভিন্ন পর্ব, হাসি-কান্না, আবেগ-অনুভূতি, ভালোলাগা-ভালোবাসা, দায়িত্ব – কর্তব্য । কিছু সামাজিক নিয়ম-কানুন শৃঙ্খল। অনেক ক্ষেত্রে এই নিয়ম কানুন শৃঙ্খল, ভালোলাগা, ভালোবাসা এক সময় রক্ষা করা যায় না। সময়ের স্রোতে ভেসে যায়। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যায় সুখস্মৃতিগুলো।
ভেঙ্গে যায় দীর্ঘ দিনের পারিবারিক ঐতিহ্য, ট্রেডিশান।
যান্ত্রিক জীবন এর জন্য যতটা দায়ী। প্রতি ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ধ্যান ধারণা, লাভ লোকসানের হিসাব ঠিক ততটাই দায়ী। এছাড়াও রাগ-ক্ষোভ, হিংসা-বিদ্বেষ, জেদ, স্বার্থের কিছু বিষয় জড়িয়ে যায় এই বন্ধন ছেঁড়ার কাজে। আবেগ-অনুভূতিহীন মানুষগুলোকে ইট পাথরের তৈরি মনে হয়। বেশি না হোক কিছুটা আবেগ তো মানুষের থাকতেই হয়। আবেগ-অনুভূতি না থাকায় পারিবারিক এবং সামাজিক বন্ধণ টিকিয়ে রাখা মুশকিল হচ্ছে। সম্পর্কের চেয়ে আর্থিক ক্ষমতাকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে বেশি। এর ফলেই ভাই-ভাই, ভাই-বোন, বাবা-সন্তান, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কেও থেকে যাচ্ছে বিরাট ফাটল। একারণে পারিবারিক বা সামাজিক পর্বগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
ছোট বেলায় দেখেছি গ্রামের সকল মানুষ সামাজিক কৃষ্টি পালনে বাড়ির উঠোনে, পুকুর পাড়ে বা স্কুলের মাঠে বসে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এখন সেই বসা হয় গ্রামের হোমরা-চোমরা গোছের কোন ব্যক্তির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। একজনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে অন্যজন স্বাধীন মতামত ব্যক্ত করতে সামান্যতম হলেও সংকোচবোধ করতেই পারে। আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসা মানেই ক্ষমতা জাহির করা। গ্রামের স্কুল মাঠ বা পুকুর ঘাটের খোলা বাতাস গায়ে লাগিয়ে মানুষ থাকে প্রানবন্ত। সেখানে ছোট বড় ধনী গরীব বিচারে নয় অভিজ্ঞতার আলোকে আলোচনা, মতামত এবং সিদ্ধান্ত হয়। তারই ভিত্তিতে গ্রামের সকল মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সামাজিক এই কর্মকান্ডগুলো সম্পন্ন করে। এই কাজে থাকে না ভেদাভেদ, থাকেনা কোন স্বার্থ। পরিবারে পরিবারে এক সেতুবন্ধন ছিলো সামাজিক এই অনুষ্ঠান গুলো। গ্রামে গ্রামে মজলিশ আর হয় না। এই মজলিসে মূলত গ্রামের সবাই একত্রিত হত খাওয়া-দাওয়া করত গ্রামের সবাই একসাথে। আশেপাশের গ্রামের মানুষেদেরও দাওয়াত দেয়া হতো। কতজনকে কত ভালো খাওয়ানো যায় এরকম একটা মানসিক প্রতিযোগিতা দেখা যেতো এই ২০-৩০ বছর আগেও। এখন গ্রামে গ্রামে এসব হয় না। যাও দু একটা হয় সেখানে কত কম খাইয়ে নিজের পকেট ভরানো যায় সেই চেষ্টাতেই ব্যস্ত থাকে সবাই। টাকার ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাও আছে অনেক। রাজনৈতিক প্রভাব এবং আর্থিক ক্ষমতায় এই সামাজিক পর্বগুলি এখন মাতবরদের হাতের মুঠোয় চলে গেছে। এই পর্বগুলোকে তারা তাদের ক্ষমতা প্রদর্শনের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করছে। এই সামাজিক অনুষ্ঠানও এখন হয়ে গেছে বানিজ্যিক। এক শ্রেনীর অসাধু ব্যক্তি এইসব অনুষ্ঠানেও খোঁজে নিজের লাভ।
আসলে এই ফাটল কিন্তু শুরু হয় পরিবার থেকেই। সম্পত্তির ভাগাভাগি বা আর্থিক সক্ষমতার বলি হচ্ছে যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা আমাদের সামাজিক কৃষ্টি কালচার। ভেঙ্গে যাচ্ছে সমাজ, সামাজিক বন্ধনগুলো ছিঁড়ে যাচ্ছে। অতি কাছের মানুষগুলো দূরে সরে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে সমাজ তো দুরের কথা পরিবার টেকানো মুশকিল হয়ে যাবে।
সব কিছুতেই বাণিজ্যিক চিন্তা চেতনা এবং আবেগ অনুভূতিহীনতাই সামাজিক বন্ধনের প্রধান অন্তরায়। তবে কি মানুষের আবেগ থাকবে না! মানুষে মানুষে ভালোবাসার মজবুত ভীত রচিত হবে না! মানুষ সামাজিক জীব এই কথা কি ভুলে যাবো সবাই!
স্মৃতির পাতা থেকে আবেগ গুলোকে জাগ্রত করার এখনই সময়। না হলে কিছুদিন পর বাবা-মা-সন্তান, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কও হতে পারে স্বার্থ এবং আর্থিক ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews