আমদানিতে উৎসাহ দিতে এবং চোরাচালান বন্ধ করতে সোনা আমদানির ওপর থেকে উৎস কর প্রত্যাহারের চিন্তা করছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা উৎস কর প্রত্যাহারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। বর্তমানে বৈধ পথে সোনা আমদানি করলে সরকারকে ৫ শতাংশ উৎস কর দিতে হয়।
বাংলাদেশ কাস্টমসের ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী, একজন আন্তর্জাতিক যাত্রী ২৩৪ গ্রাম বা ২০ ভরি সোনা নিজের সঙ্গে আনতে পারেন।
সে জন্য প্রতি ভরি (১১.৬৬ গ্রাম) সোনার জন্য কর দিতে হয় দুই হাজার টাকা। অন্যদিকে একজন যাত্রী ১০০ গ্রাম পর্যন্ত সোনার গয়না শুল্কমুক্ত অবস্থায় আনতে পারেন।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট গুলজার আহমেদ সোনা আমদানির ওপর অগ্রিম কর বাতিলের পরিকল্পনার জন্য সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি শিল্প ও ভোক্তা উভয়ের জন্যই লাভজনক হবে। আমরা এনবিআরকে অনুরোধ করেছি, আমাদের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশে নামিয়ে আনতে। কর্তৃপক্ষ যদি এ বিষয়ে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে তা গ্রাহকদের ভ্যাট দিতে উৎসাহিত করবে। ’
এর আগে সরকার প্রথম স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮ প্রণয়ন করে, যার লক্ষ্য ছিল সোনার আমদানি ও রপ্তানি বাড়ানো এবং দেশের স্বর্ণ খাতকে একটি নিয়ন্ত্রক কাঠামোর মধ্যে আনার মাধ্যমে বাণিজ্যে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে কিছু বেসরকারি উদ্যোক্তা সরকারি নিয়ম ও প্রবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সোনা আমদানি করতে আগ্রহী হন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, উৎস কর প্রত্যাহার গয়নাশিল্পকে সমৃদ্ধ করতে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতে সহায়তা করবে।
এর আগে ২০২১ সালের ৩ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দেশে প্রথমবারের মতো কাঁচা সোনা আমদানি এবং এটি পরিশোধনের অনুমতি দেওয়া হয়। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে বছরে ৪০ টন পর্যন্ত সোনার চাহিদা রয়েছে। বেশির ভাগ চাহিদা চোরাই সোনা দ্বারা এবং বাকিগুলো পুনর্ব্যবহারযোগ্য সোনার মাধ্যমে পূরণ করা হয়।
২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী গয়না বাজারের আকার ধরা হয়েছিল ২৪৯.০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বছর তা ২৬৯.১৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২২ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ৮.৫ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধির হারে ২০৩০ সালের মধ্যে বাজার হবে ৫১৮.৯০ বিলিয়ন ডলার।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট