1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :

দেশজুড়ে লোড শেডিং শিগগিরই কাটছে না

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০২২

গ্যাসসংকটে বেশ কিছু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। তাই গত রবিবার থেকে হঠাৎ করে সারা দেশে বেড়ে গেছে লোড শেডিং।

বিশ্ববাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম আবারও ঊর্ধ্বমুখী। এমন পরিস্থিতিতে স্পট মার্কেট (খোলাবাজার) থেকে এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত বন্ধ রেখেছে সরকার। জ্বালানি এ পণ্যটির দাম না কমা পর্যন্ত দেশীয় গ্যাস থেকেই চাহিদা পূরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে কমে গেছে দেশে গ্যাসের সরবরাহ।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দিনে পাঁচ থেকে ছয়বার এবং গ্রামাঞ্চলে আট থেকে ১০ বার লোড শেডিং হচ্ছে। এদিকে আবাসিক এলাকায় কমে গেছে গ্যাসের চাপ, কোনো রকমে চলছে রান্নার চুলা। ব্যাহত হচ্ছে শিল্প-কারখানার উৎপাদনও।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, গত জুনের শেষ সপ্তাহে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনতে প্রতি ইউনিটে (এমএমবিটিইউ) খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫ ডলার। সেটি এখন হয়ে গেছে প্রায় ৪০ ডলার। এ কারণেই সরকার স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রেখেছে। এ অবস্থায় জাতীয় গ্রিডে যে পরিমাণ গ্যাস ঘাটতি হচ্ছে, তা দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে জোগান দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য বেশ কয়েকটি কূপে ওয়ার্কওভার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এবিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিশ্ববাজারে এলএনজির উচ্চমূল্যের কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আপাতত স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ রাখা হয়েছে। গ্যাসস্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, এতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। ’ তিনি বলেন, ‘ইতালি, জাপান, ইউকের মতো উন্নত দেশগুলোকেও এখন বিদ্যুৎ সরবরাহে রেশনিং করতে হচ্ছে। জ্বালানির উচ্চমূল্য অন্যান্য দেশের মতো আমাদেরও সমস্যায় ফেলেছে। ’

পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা তিন হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। গড়ে সরবরাহ করা হয় তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। তার মধ্যে দেশে উৎপাদিত গ্যাসক্ষেত্র থেকে আসে দুই হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। বাকিটুকু পূরণ করা হয় আমদানীকৃত এলএনজি দিয়ে। গত কয়েক দিন ধরে গ্যাসের সরবরাহ ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট কমিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে দুই হাজার ৭৫০ থেকে দুই হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। গত মাসে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ করা হয় দৈনিক ৭৫০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। দুই দিন ধরে কমিয়ে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। এখন শুধু দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ওমান ও কাতার থেকে আসা এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘এখন উন্নত দেশগুলোও সাশ্রয়ী দামে বিদ্যুেসবা দেওয়ার জন্য রেশনিং করছে। জাপানের মতো দেশ এখন পরিকল্পিতভাবে দিনে দুই ঘণ্টা লোড শেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের অবস্থাও খারাপ। কারণ আমাদের যে নিজস্ব গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, তা চাহিদার অর্ধেকের চেয়ে কম। ’ তিনি বলেন, এখন যদি বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে এলএনজি ও জ্বালানি তেল আমদানি করতে হয়, তাহলে উৎপাদন খরচ তিন-চার গুণ বেড়ে যাবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সেটি বাস্তবায়নসহ আরো বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘যেখানে ৯ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি দেওয়া হতো, এ অবস্থায় চলতে থাকলে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে, যা সরকারের পক্ষে অসম্ভব। অতীতে আমাদের আট থেকে ১০ ঘণ্টাও লোড শেডিং ছিল। এখন যদি দু-এক ঘণ্টা লোড শেডিং মোকাবেলা করতে পারি তাহলে সেটি হবে দেশ ও নিজের স্বার্থে বড় পদক্ষেপ। ’

গ্যাসসংকটের প্রভাব পড়ছে আবাসিক ও শিল্প-কারখানায়। তিতাস সূত্র বলছে, রাজধানীর মিরপুর, বাড্ডা, কেরানীগঞ্জ, কাঁঠালবাগান, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ীসহ বেশ কিছু এলাকায় গ্যাসের চাপ কমে গেছে। কোনো রকমে রান্নার চুলা জ্বলছে এসব এলাকায়। সাভার, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এলাকার শিল্প-কারখানাগুলোতে গ্যাসসংকটে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলেও অভিযোগ আসছে।

বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, গ্যাসসংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় আগামী বেশ কিছুদিন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। গত রাতে রাজধানীতে বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান ডিপিডিসি গ্রাহকদের মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠিয়ে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ বরাদ্দ না পাওয়ায় লোড শেডিং করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।

এদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ রবিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘গ্যাসস্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে অনেক জায়গাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুনরায় স্বাভাবিক হবে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির উচ্চমূল্য ও সরবরাহ অন্যান্য সব দেশের মতো আমাদেরও সমস্যায় ফেলেছে। এ পরিস্থিতিতে আপনাদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। ’

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews