নাটোরের একটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারেরঅপমৃত্যু নিয়ে মিডিয়া ভুবনে ঝড় বইছে।তিনি ৪২ বছর বয়সে ২১ বছরের এক যুবককে বিয়ে করেছিলেন! সেই থেকেই এই জীবনবিনাশী কাহিনীর সূত্রপাত।এমন আরো একটি ঘটনা প্রাসঙ্গিকভাবেই স্মরণে আসছে।২০০৩ সালে আমি সদ্য পদোন্নতি নিয়ে রাজশাহীর বাইরে অন্য এক জেলা শহরে যোগদান করেই এমন মুখ রোচক’ টক অব দা টাউন ‘ এক নিদারুন নির্মম জীবন আলেখ্য অবলোকন করেছিলাম।৫৮
বছর বয়সের একজন এসোসিয়েট প্রফেসর ২৩ বছর বয়সী ছাত্রকে বিয়ে করে, তার হাতে হাত রেখে কলেজ ক্যাম্পাসে হেঁটে বেড়াতেন সকলের তিরস্কার অপমান উপেক্ষা করে। সেই গল্পের শেষ পরিনতি সব শেষে বলবো।জীবন যে কী নিদারুন সাহিত্য কিংবা সাহিত্যের বাস্তবতার চেয়ে অতিবাস্তব সে কথা বলাই বাহুল্য।কিন্তু তার আগে আমাদের পৌরাণিক, দার্শনিক, সামাজিক, রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক, নৈতিক ও অর্থনৈতিক পটভূমিতে যদি মাননীয় পুরুষতন্ত্রের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক দেবতাগণের বিশ্বাস, দর্শন ও দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে কথা বলি – তাহলে বেদ, বাইবেল, কুরআন, পুরাণ সর্বত্র লিঙ্গ বিভাজনে নারীকে পুরষের অধীনস্থ, পরাধীন, কৃপার কাঙালিনী রূপেই দেখানো হয়েছে।এমন কি কোন বয়সের পুরুষ কোন বয়সের শিশুকন্যাকে বিয়ে করবে এবং না করলে কিকি অনিষ্ট হবে তার বিধানও ধর্মশাস্ত্রে বর্নিত আছে।
ইহুদি, খ্রিস্টান, সনাতন ধর্মালম্বী দের উপাসনালয়ে সন্ত্ত, ফাদার,সাধুরা কিভাবে নারী পীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন তার বিশদ বর্ননা বিশ্বসাহিত্যের বিশাল পটভূমিতে ছড়িয়ে আছে। ইসলাম ধর্মে পুরুষকে নারীর হাকিম স্বরূপ গণ্য করা হয়েছে, ঐহিক জীবনেও কত প্রকার পত্নী উপপত্নী হালাল হবে তারও বিধান দেয়া আছে।পুণ্যবানগণ পারলৌকিক জীবনেও হুর পরী গিলমান দ্বারা পুরস্কৃত হবেন এমন প্রতিশ্রুতিও বর্নিত আছে।গ্রিক পুরাণ ও ভারতীয় পুরাণে দেবতাদের লীলাক্ষেত্র তো ক্লাসিক সাহিত্য হয়ে আছে আজো।সুকুমারী ভট্টাচার্য পৌরাণিক নারীদের অবস্থান তার গবেষণায় চমৎকার উদাহরণ ও উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন।জন মিল্টন খ্রীস্ট চার্চের কদর্যরূপটিকে উন্মোচন করেছেন।জন মিল্টনের মানসশিষ্য মাইকেল মধুসূদন দত্ত উনিশ শতকের ব্রাহ্মণ্যবাদী ভোগবিলাসীতাকে নির্মমভাবে আঘাত করেছেন তাঁর প্রহসন সাহিত্যে, নারীমুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন বীরাঙ্গনা কাব্যে। তা সত্বেও বর্ণবাদী ব্রাহ্মণ রাতের অন্ধকারে নগরের বাইরে নটীর সঙ্গে মিলিত হন সেই বর্ণনা চর্যাপদ থেকে শরৎচন্দ্রের সাহিত্যের গনিকালয় পর্যন্ত বিস্তৃত।
সত্যিকার অর্থে শাস্ত্র, সাহিত্য, সমাজ,রাষ্ট্র ও রাজনীতি সর্বত্র নারী এক অনন্ত অস্বস্তি! এই অস্বস্তি নিয়েই আলোচনা এবং ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াও বিশদ।যদি র্যার্ডিক্যাল হিউম্যানিস্ট রেনেসাঁসের চিন্তাবিদ থেকে ফেমিনিস্ট বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায়, সেখানেও রুশো থেকে মিশেল ফুকো এবং তার মাঝে রাশকিন, জন স্টুয়ার্ট মিল, এঙ্গেলস, মার্কস,কেইট মিলেট,হেনরি মিলার,জোঁ জোনে,মার্গারেট মিড,,রামমোহন থেকে রবীন্দ্রনাথ এই কালপঞ্জিতেও নারীর সমাজতাত্ত্বিক মুক্তির পথরেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি।জেন্ডার ইকুয়েশন আজও আমাদের সভ্যতায় টেকসই উন্নয়নের একটি আলোচিত কম্পোনেন্ট রূপে বিবেচনাধীন।
আমি সাংস্কৃতিক দৃষ্টিতেই জেন্ডার শব্দটি ব্যবহারের পক্ষপাতি।কারণ,নারী পুরুষ লিঙ্গ বা সেক্স অর্থে প্রয়োগকে আমি স্হূল বলে বিবেচনা করি।
দেবালোকে উর্বশীর নৃত্য দেখে দেবতাগণ চিত্তবিনোদন করেন।সেই উর্বশী রবীন্দ্রনাথের মানসসুন্দরী।তিনি মাতা নন,তিনি কন্যা নন, তিনি জায়াও নন।তিনি কেবলই সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্যবিলাসিতাও ভোগবাদী সংস্কৃতির অংশ। সেই সৌন্দর্যকে রবীন্দ্রনাথ দেবীত্ব আরোপ করছেন।নারী প্রেমের প্রসাধনে দেবীরূপে পূজিত।
রবীন্দ্রনাথ বলছেনঃ
শুধু বিধাতার সৃষ্টি তুমি নহ নারী
পুরুষ গড়েছে তোরে সৌন্দর্য সঞ্চারী।
বর্ণগন্ধবসনে ভূষনে নারীকে পুরুষ সৃজন করে নিজের প্রয়োজনে।নিজের প্রয়োজনে নারীকে একলা আপন সতী রূপে ঠিক যেন কুমারী মেরীর মতো পবিত্র কিন্তু মেরেলিন মনরোর মতো কামিনীসুলভ রমনী রূপে চান।যা দেখে পুরুষ চিত্তে চাঞ্চল্য ও শিহরণ জাগায়। যা আজকের কর্পোরেট এডভ্যাটাইজমেন্টে রূপজীবী নারীর অনন্য উপস্থাপনায় দৃশ্যমান।
স্হূলতার এইখানেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে লিঙ্গ, সেক্স ও জেন্ডার গ্যাপ। বাঙালি দেহবাদী কবি বুদ্ধদেব বসু তার কবিতায় লিখছেনঃ
“যাও, মেয়ে তুমি জীবনের খাদ্য হও।”
নারীকে নিয়ে আর এক কবি বলছেন ঃ
তুমি যেন এক পর্দায় ঢাকা বাড়ি
আমি অঘ্রান শিশিরসিক্ত হাওয়া
বিনিদ্র তাই দিনরাত ঘুরি ঘিরে…
বোঝা যায়, পুরুষ নারীকে ত্যাগ করতে পারবে না।রবীন্দ্রনাথ তো সোজাসুজি বলেনঃ
আমি হবো না হবো না তাপস
তাপসী বিহনে….।
কারণ পুরুষের নারীকে প্রয়োজন উত্তরাধিকার সৃজন, সমাজ, রাষ্ট্র ও সভ্যতা সৃজনের জন্য। পুরুষ দৈহিক বলে বলীয়ান। পুরুষ সভ্যতা বিনির্মান করবে,নারী কেবল প্রজনন সহযোগী। তাও আবার পুত্রসন্তান। কন্যা নয়।তাহলে সম্পদ ও সভ্যতার উত্তরাধিকার রক্ষিত হবে না।নারীর ক্ষমতা খুবই তুচ্ছ। নারী পরিপূর্ণ হয় না পুরুষের সঙ্গী ছাড়া।টেনিসন তার কবিতায় বলছেন;
For woman is not underdevelopment man
But diverse
Not like to like, but like in difference
Either sex alone
Is half itself,and in true marriage lies
Nor equal,nor unequal ;each fulfils
Defect in each.
নারী পূর্ণতার প্রার্থনায় অনেক ধর্মেই তাই লিঙ্গপূজা প্রচলিত।
দৃষ্টিভঙ্গী ও দৃশ্যপট যে বদলায়নি তা নয়।প্রাচ্য প্রতীচ্যে সামাজিক রূপান্তর, রাজনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ, ক্ষমতায়ন ইত্যাদি অনুষঙ্গ জটিল আবর্তে রয়েছে।মধ্যপ্রাচ্যের নারীসংস্কৃতি ও পুরষসংস্কৃতির অনৈক্য ধর্ম অনুশাসনে অর্গলবন্দী।সেই অবগুণ্ঠন উপমহাদেশেও চর্চিত এবং ক্রমশ বিস্তৃত। একই রূপ বিধিবিধান সম্পদ ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রেও।অর্থাৎ নারীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির বড় বাধা পুরুষতান্ত্রিক ধর্মমতের ও,দৃষ্টিভঙ্গী ও রুচিবৈগ্ধ্যের অভাব।কারণ, ষাটোর্ধ বৃদ্ধরা এদেশে ষোড়শী বিয়ে করলে সমস্যা নেই। কারণ তিনি পুরুষ। কারণের পুরুষের ঈশ্বরও একজন পুরুষ। পুরুষ মানে অনন্ত অক্ষয় শক্তি।নারী সেই শক্তির কৃপাপ্রার্থী।যদিও সনাতন ধর্মে নারী আদ্যাশক্তি দেবী।কিন্তু সেই শক্তিও পুরুষপ্রদত্ব।দেবী দুর্গা পুরুষ দেবতাদের কৃপায় শক্তিময়ী।শিবের তেজে দেবীর মুখ, যমের তেজে কেশ, বিষ্ণুের তেজে বাহুসমষ্টি, চন্দ্র তেজে স্তনযুগল, ইন্দ্রের তেজে মধ্যভাগ, বরুনের তেজে জংঘা ও উরু, পৃথিবীর তেজে নিতম্ব, ব্রহ্মার তেজে পদযুগল।মহাদেব দিলেন শূল, কৃষ্ণ দিলেন চক্র, বরুণ দিলেন শঙ্খ, অগ্নি দিলেন শক্তি…।সুতরাং পুরুষ ক্রিয়াশীল। নারী সেই শক্তি সঞ্চয় ও ধারণ করে মাত্র।ধর্ম এইভাবে টিকিয়ে রাখে পুরুষতন্ত্র।খ্রীস্টধর্মে একমাত্র মেরীমাতা পবিত্র। আর সব ডাকিনী,দানবী,।শেকসপিয়ার ও ভিক্টোরিয়ান সাহিত্যে তাই নারী ডাকিনীদের উপদ্রব লক্ষনীয়।আবার হিন্দু বৌদ্ধ ধর্মের জাতক,পঞ্চতন্ত্র, রামায়ণ, মহাভারত, বিভিন্ন পুরাণে নারীর দানবীরূপ এবং কামচন্ডালিনীর অশ্লীল উপাখ্যানের কথা সর্বজনবিদিত।ইসলাম ধর্মে পুরুষতন্ত্র প্রচণ্ডভাবেই প্রকাশিত। কুরআনে বলা হচ্ছে ;
তোমাদের স্ত্রী তোমাদের শস্যক্ষেত্র।তাই তোমার তোমাদের শস্যক্ষে্ত্রে যেভাবে ইচ্ছে যেতে পারো।
শস্যক্ষেত্রে কর্ষণ ও বীজ বোপন করা পুরুষের দায়িত্ব। নারী কেবল ভূমির ভূমিকা পালনকারীনি।ভূমির মালিকানায় চায় পূঁজির প্রতাপ।
পূঁজিহীন পুরুষ মানিক বন্দ্যোপধ্যায়ের প্রাগৈতিহাসিক গল্পের ভিখুর মতো।না ভিক্ষুক না ডাকাত!তাই ভূমির মতো নারীর দখল নিতে পুরুষে পুরুষে যুদ্ধ হয়।দখল মানেই অধীনতা।
অধীনতার সত্ত থেকে নারীর মুক্তি নেই। তাই নারীর নেতৃত্ব ও জাগরণ পুরুষতন্ত্রের জন্য ভয়ংকর অস্বস্তির কারণ বৈ কি!
লক্ষ্য করুন,আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ২৪০ বছরের গণতন্ত্রের ইতিহাসে কোন নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেননি।কালোদের ইতিহাসে এখনো লেগে আছে শেকলের দাগ।পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিপ্লবে নারী থেকে গেছে ক্ষমতার বাইরে।আমেরিকা ইউরোপের নারীরা উপলব্ধি করছেন ঐতিহাসিকভাবে অসম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক বিপ্লব!সেই বিপ্লবকে পূর্ণতা দিতেই নারীরা নিজেরাই নিজেদের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।তারা অস্বীকার করছেন ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রজননের ওপর পুরুষতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ।
দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতিতেও নারীর ক্ষমতায়নে কখনো সংরক্ষিত কোটা, কখনো তপশিলি কোটা বিবিধ বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে। চাকরি বা পেশাগত বিষয়েও নারীকে ভিন্নতর মূল্যায়নের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এই সবের ভেতর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, আধুনিক যুগেও রাষ্ট্রিক,সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীগণ সেই প্রাচীনকালের লড়াইটি লড়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি জৈবিক পুরুষের বিরুদ্ধে জৈবিক নারীর দ্বন্দ্ব নয়।এটি পুরো সমাজেরই পর্যালোচনা জিজ্ঞাসার বিষয়।
আশা করি লেখার শিরোনামে সেই জিজ্ঞাসাই ইঙ্গিত করেছিলাম। একজন শিক্ষক কিংবা নারী নয়, একজন মানুষ হিসেবে খায়রুন এই সমাজে নিজের অস্তিত্বের লড়াই করে হেরে গেছেন।এই হার কী শুধু একজন নারীর?একজন মানুষের নয়?
একজন বেগম রোকেয়া কিংবা একজন মাদার তেরেসাকে উপলব্ধি করতে পারিনি, কিংবা সচেতনভাবেই এড়িয়ে যাচ্ছি।
আমরা এড়িয়ে চলি বলেই সেই এসোসিয়েট প্রফেসর আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন যে তোমার চর্মচক্ষু দিয়ে যা দেখো তা সত্য নয়।আপাত সত্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে প্রকৃত সত্য।
৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত যে নারী চিরকুমারী ছিলেন, তিনি হঠাৎ করে পুত্রবয়সী ছাত্রকে বিয়ে করে আত্মীয় স্বজন,সহকর্মী ও সামাজিকভাবে নিন্দিত, ঘৃণিত হয়েছেন আর নীরবে জীবনের সূর্যাস্তের দিকে এগিয়ে গেছেন।
তার মৃত্যুর পর সকল রহস্য প্রকাশ পেলো। চিকিৎসক তাঁকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি ছয়মাস পৃথিবীতে আছেন। সমস্ত দেহের রক্ত কনিকায় কর্কটরোগ বাসা বেঁধেছে। তাকে চলে যেতে হবে। নিজ পরিবারের আত্মীয় পরিজনের প্রতি তার গোপন অভিমান, অভিযোগ বিরক্তি ছিল দীর্ঘ দিনের। কারো সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন না। তারাও ছিন্ন করেছিলেন সকল সম্পর্ক ও সৌজন্য। অধ্যাপিকার নিজস্ব চারতলা ভবন,অর্ধশত বিঘা জমি এবং চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে কোটি টাকার উত্তরাধিকার স্থির করলেন।
বিভাগের সবচেয়ে নম্রভদ্র স্বভাবের ছাত্রটিকে বললেন, বন্ধু তুমি আমার বন্ধু। বিষয় সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে আইনগত বৈধতার জন্য কোর্টে গিয়ে কাবিননামা রেজিস্ট্রি করে দিলেন এবং হাসপাতালের বিছানায় বন্ধুর হাতে হাত রেখে চিরনিদ্রায় চলে গেলেন।শেষ খেয়ায় উঠতেও একটি বিশ্বস্ত হাতের জন্য জীবনের আকুতি কী পাপ!সে কী অন্যায়!আমাদের দৃষ্টির কুয়াশার আড়ালে নকশীকাঁথার মতো জীবনের কতো না গল্প লুকিয়ে থাকে, কজনই বা সেই গল্প পড়তে পারে?