ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় আবাসিক হলের রুম থেকে বের করে দেওয়া ও অকথ্য ভাষায় দুই ছাত্রীকে গালাগালের অডিও রেকর্ড ফাঁস হয় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার। এই অডিও রেকর্ডের জন্য পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষমাও চান তিনি। এবার সেই অডিও রেকর্ড ফাঁস করার স্বীকারোক্তির জন্য দুই ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত রাজিয়া বেগম ছাত্রীনিবাসের একটি কক্ষে দুই ছাত্রীকে ওই অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য স্বীকারোক্তি চান তিনি।
এ সময় তিনি তাদের মানসিক নির্যাতন করেন এবং স্বীকারোক্তি না দিলে বিবস্ত্র করে ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। সাড়ে ছয় ঘণ্টা মানসিক নির্যাতনের পর স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য হয় ওই দুই ছাত্রী।
খবর পেয়ে ছাত্রীনিবাসটির প্রাধ্যক্ষ নারগিস রুমা ওই কক্ষে গিয়ে দুই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন। পরে তাদেরকে একটি রুমে নিয়ে গিয়ে ঘটনা জিজ্ঞেস করেন ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষক ও উপস্থিত কিছু ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। সেই মুহূর্তের কিছু ভিডিও কালের কণ্ঠের হাতে এসেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, উপস্থিত শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কয়েকজন তাদের থেকে ঘটনার বিবরণ শুনতে চান। ওই দুই ছাত্রী কিছু বলতে রাজি না হলে তাদেরকে নানা ধরনের আশ্বাস দেওয়া হয়। এ সময় একজন ছাত্রী বলেন, ‘আগে যে অডিও ফাঁস হয়েছিল, তার ভিত্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা বলে তাদের কাছে স্বীকারোক্তি চেয়েছেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন। তামান্না আরো স্বীকারোক্তি দাবি করেন, অডিও রেকর্ডটি তারা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুমনা মীমের নির্দেশে করেছিলেন। এসব স্বীকোরোক্তি না দিলে তাদের বিবস্ত্র করে সেই ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেন তামান্না। ‘ তখন বাধ্য হয়েই তামান্নার লিখে দেওয়া স্বীকারোক্তিটি তাঁরা পড়েন। তামান্না ও তার সহযোগীরা তা রেকর্ড করে রাখেন।
ওই ছাত্রী আরো বলেন, ‘তামান্না জেসমিন তাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য করেন। অসুস্থ থাকলেও ছাড় নেই। দীর্ঘদিন ধরেই এই নিপীড়ন চলে আসছে। সম্প্রতি প্রমাণ রাখার জন্য তাঁরা হুমকি ও গালিগালাজের অডিও রেকর্ড করেন। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুমনা মীম তাঁকে এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা বা পরামর্শ দেননি। ‘
অন্য ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি কান্না ভেঙে পরে বলেন, ‘আমাকে এখানে আরো কয়েক বছর থাকতে হবে। এই ভিডিও বাইরে ছড়িয়ে পরলে তার নিরাপত্তা দেবে কে?’
এ বিষয়ে জানতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও কলেজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যকে কল করে পাওয়া যায়নি।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট