1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১১:৫০ অপরাহ্ন

কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক?

মজিব রহমান
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
ছবি- সংগৃহীত
আদিম মানুষ আরাধনা করতো খাদ্য সংকট ও রোগের হাত থেকে বাঁচতে৷ সূর্যদেব ঠিক থাকলে ভাল শস্য হবে৷ বেশি তাপ দিলেও ক্ষতি, না দিলেও ক্ষতি৷ বৃষ্টির দেবতা ও খাদ্যের দেবতা তাদের দরকার ছিল৷ বেহেস্ত দোজখ নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না৷ আমরা মিশরীয় সভ্যতায় দেখি ফারাও রাজার প্রতিনিধিরা দাসদের বলছে, আরো কাজ করো, প্রতিদানে মৃত্যুর পরে দূর পাহাড়ের ঐপাড়ে তোমাদের আবারো উঠানো হবে এবং সেখানে পোলাও ও পায়েস খেতে পারবে সবসময়৷
এক সময় মানুষ ভাবতে শুরু করে মৃত্যুর পরে মানুষ কোথায় যায়? এই প্রশ্নের উত্তর বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে খোঁজা হয়েছে৷ হাজার হাজার রকমের ভাবনা এনেছে হাজার হাজার রকমের প্রবর্তক৷ তারাই এক সময় নিয়ে এসেছিল স্বর্গ বা নরকের ধারণা। দেবতারা স্বর্গে থাকেন, সেখানে গিয়ে জুটতে পারে পুণ্যবানদের আত্মা। তা হলে পাপীদের কী হবে? এই ভাবনা থেকেই আসে নরক।
একই ধর্মের বিভিন্ন গ্রন্থে বিভিন্ন ধারণাও আসে৷ ঋকবেদে নরকের ভয়াবহতা বা স্বর্গের সীমাহীন সুখ পাওয়া যায় না৷ হিন্দু ধর্মে আস্তে আস্তে পরের গ্রন্থগুলোতে নরকের সংখ্যা বেড়েছে একটি থেকে ২৮টি পর্যন্ত হয়েছে৷ এ ধর্মে স্বর্গ নরক স্থায়ী নয়৷ পাপের জন্য শাস্তি ভোগ করে আবার পুণ্যের জন্য স্বর্গ ভোগ করে আবারো মানব জন্মে আসতে হয়৷ শুধু বিশেষ পুণ্যবানরা ও দেবতারাই স্থায়ী স্বর্গে থাকতে পারেন৷ আবার আমরা দেবতাদের হিমালয়ে থাকতে দেখি৷ ওখানেই কি স্বর্গ? আবার নরক হল মাটির নিচে পাতালে৷
ধীরে ধীরে বেড়েছে স্বর্গের সুখ ও নরকের যন্ত্রণা৷ সর্বশেষ বড় ধর্ম ইসলামেই এটা সবচেয়ে বেশি ৷ সব ধর্মের মানুষই বিশ্বাস করে শুধু তারাই স্বর্গে বা বেহেস্তে যাবে৷ মুসলিম ধর্মে বিশ্বাস, নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত ও অন্যান্য পাপ থেকে বিরত থাকলে হাশরের ময়দানে বিচার শেষে পুণ্যির পাল্লা ভারী হলেই বেহেস্তে যেতে পারবে৷ যদি কেউ প্রথম পাঁচটি না করে তবে বেহেস্তে যাওয়ার সুযোগ নেই৷ ধরে নিলাম অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ এগুলো করতেন না৷ তিনি দোজখে যাবেন৷ তিনিতো কাউকে স্বর্গে যেতে বাধা দিচ্ছিলেন না৷ নরকে অনন্তকাল পার করলে অন্যদের সমস্যা থাকার কথা নয়৷ অথচ স্বর্গে যেতে মরিয়ারাই হুমায়ুন আজাদকে হত্যা করছে, হলি আর্টিজানে খুনের উৎসব করেছে আবার টুইন টাওয়ার ধ্বংস করে দিয়েছে৷ অর্থাৎ অনেকে পৃথিবীটাকেই তারা নরক বানিয়ে দিচ্ছে৷ নিজেরাও খুনে লিপ্ত হচ্ছে আবার অন্য ধর্মের স্বর্গ প্রত্যাশীদেরও খুন করছে৷
বৌদ্ধ ধর্মে ঠিক স্বর্গ -নরক নেই৷ পাপ পুণ্যির হিসাবে তারা ২২টি জীবন চক্রে ঘুরতে থাকে৷ অতিপুণ্যি বা ভিক্ষুরা দুঃখময় পৃথিবী থেকে নির্বাণ লাভ করে৷ এর অর্থ আত্মা বিলীন হয়ে যায়৷ পুনর্জন্মের ধারণা আছে জৈন ধর্মেও৷ ইহুদি ও খৃষ্টান ধর্মে স্বর্গ নরক নিয়ে অত কঠোরতা নেই৷ প্যাগান থেকে ইসলাম পর্যন্ত আস্তে আস্তে মানুষকে লোভ ও ভয় দেখানো বাড়তে থাকে৷ মুসলিমরা বেহেস্তে গিয়ে প্রধানত পাবে ৭২টি হুর, ৪টি গেলমান ও সরাবন তহুরা৷ সাথে অফুরন্ত খাদ্য ও স্বর্ণ-রৌপ্য নির্মিত আবাস! ইসলামে ৭টি নরকও আছে৷ যেমন কোরআনে বলা আছে কেউ যদি আল্লাহর বাণি প্রচার করে অর্থ উপার্জন করে তাহলে সে আগুনই কিনে নিল৷ মানে অনন্তকাল আগুণে জ্বলবে৷ এখন এমনসব বাণি কেউ মানে বলে মনে হয় না৷ ধর্ম ব্যবসায়ীরা বলে, তাহলে আমরা খাব কি? আবার ইসলামে শিরক করাকেও বড় পাপ হিসেবে দেখা হয়৷ অন্য ধর্মের মানুষ যত ভাল কাজই করুক বেহেস্তে যেতে পারবে না৷
এখন মনে হচ্ছে এমন একটি সম্প্রদায় তৈরি হচ্ছে যারা স্বর্গের তীব্র লোভ ও নরকের ভয়ানক ভয়কে আর পাত্তা দিচ্ছে না৷ তাদের কি হবে এমন ভাবনাও তাদের মধ্যে আসছে না৷ তারা ভাবছে প্রকৃতি থেকে জন্ম প্রকৃতিতেই বিলীন হয়ে যাবো৷

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews