তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দিয়েছে ভারত। এ জন্য ভারত কোনো মাসুল নেবে না। তবে এ জন্য নির্দিষ্ট বন্দর বা স্থল কাস্টম ব্যবহার করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে গত মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে দুই দেশের শীর্ষ বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।গতকাল বুধবার প্রকাশিত দুই দেশের ৩৩ দফা যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি স্থান পেয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে সীমান্তে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে উভয় পক্ষের কাজ করার অঙ্গীকার রয়েছে। শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশ দ্রুত তিস্তা সই করতে ভারতকে তাগিদ দিয়েছে। ভারত তাগিদ দিয়েছে ফেনী নদীর পানিবণ্টন চুক্তি সইয়ের জন্য।
২০১১ সালে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া ঝুলে আছে। ভারত তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরে অভ্যন্তরীণভাবে একমত হতে পারেনি। বাংলাদেশও ফেনী নদী নিয়ে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারত রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য ও সংযোগ, পানিসম্পদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, উন্নয়ন সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগ, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, সাইবার নিরাপত্তা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি), মহাকাশ প্রযুক্তি, শক্তি এবং সমুদ্র অর্থনীতির মতো সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে।
দুই দেশের শীর্ষ নেতারা আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক স্বার্থের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। কভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধার কথা মাথায় রেখে শীর্ষ নেতারা এই অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বন্ধুত্ব ও অংশীদারির চেতনায় বৃহত্তর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিপক্ষীয় এবং উপ-আঞ্চলিক রেল, সড়ক এবং অন্যান্য সংযোগ উদ্যোগ বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেন। ভারত বাংলাদেশকে ট্রেনের ২০টি ব্রডগেজ ডিজেল লোকোমোটিভ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। বাংলাদেশ একে স্বাগত জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ভারত থেকে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ‘অনুমানযোগ্য সরবরাহের’ (বিঘ্নিত হলে আগেভাগে জানানো) জন্য ভারতীয় পক্ষকে অনুরোধ করেছিল। ভারত বলেছে, তার বিদ্যমান সরবরাহের শর্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশের অনুরোধগুলো অনুকূলভাবে বিবেচনা করা হবে এবং সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হবে।
দুই নেতা সীমান্তের শূন্যরেখার ১৫০ গজের মধ্যে মুলতবি থাকা সব উন্নয়নমূলক কাজ ত্বরান্বিত করতে একমত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রিপুরা সীমান্তে বেড়া উল্লেখযোগ্য। উভয় পক্ষ সীমান্তে মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে। উভয় পক্ষই সীমান্তে মৃত্যুর সংখ্যাটি শূন্যে নামিয়ে আনতে কাজ করবে।
দুই দেশ অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও জাল মুদ্রার চোরাচালানের বিরুদ্ধে এবং বিশেষ করে নারী ও শিশুদের পাচার রোধে দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে। উভয় নেতাই সব ধরনের সন্ত্রাস নির্মূল করার জন্য তাঁদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং এই অঞ্চলে এবং এর বাইরে সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা এবং মৌলবাদের বিস্তার প্রতিরোধে তাঁদের সহযোগিতা আরো জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট