মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পসহ ছয় প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। তবে মাশরুম চাষ প্রকল্পে বিদেশ ভ্রমণ বাবদ যে এক কোটি ২০ লাখ টাকা ধরা হয়েছে সেটি বাদ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশন সদস্যসচিব এ কে এম ফজলুল হক। প্রসঙ্গত, গতকাল কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ‘মাশরুম চাষ শিখতে বিদেশ যেতে চান ৩০ কর্মকর্তা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
একনেকে অনুমোদন হওয়া প্রকল্পগুলোতে বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৭৩৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে পাঁচ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে দুই হাজার ৮১০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনাসচিব মামুন-আল-রশীদ, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সত্যজিৎ কর্মকার, তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন এবং পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম, কৃষি, প্রাণী সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ কে এম ফজলুল হক প্রমুখ।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃচ্ছ তার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ দিয়েছেন। একনেকের পক্ষ থেকে আমরাও প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর সফল হওয়ায় তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছি। একনেকে আজ ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৭৩৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে পাঁচ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে দুই হাজার ৮১০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। তিনি আরো বলেন, ‘মাশরুম একটি পুষ্টিকর খাদ্য। এর উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষ করে জোর দিতে বলেছেন। গুটি (বাটন) জাতীয় মাশরুম চাষ করার দিকে নজর দিতে বলেছেন। ’
মাশরুম চাষ প্রকল্পে এই সময়ে বিদেশ ভ্রমণ কতটা প্রয়োজন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এ কে এম ফজলুল হক বলেন, ‘যখন প্রকল্পটির পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন সভা) হয়েছিল ঠিক তখন বিদেশ ভ্রমণের এমন নিষেধাজ্ঞা ছিল না। আজকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তবে প্রকল্পটির প্রশাসনিক আদেশের সময় বিদেশ ভ্রমণ বাতিল করা হবে। ’
অনুমোদিত প্রকল্প: একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জাতীয় মহাসড়ক চার লেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্প। বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর জাতীয় মহাসড়কের বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪৮ কোটি ১১ লাখ টাকা।
এ ছাড়া ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস মিটফোর্ড, কুমিল্লা, ফরিদপুর, বরিশাল ও বগুড়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আর মাশরুম চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট