পাহাড় ভালবাসেনা এরকম মানুষ খুব কম ই আছে।অথচ আগেকার সময়ে পাহাড়ে বসবাস করাটা ছিল অত্যাধিক রিস্কের ব্যাপার। কারন এক সময় পাহাড়ে বন্য হাতি,বাঘ,বিষধর সাপের বিরাজমান ছিল অগণিত।অনেকেই সাপের কাপড়ে এবং বন্য হাতির পায়ের চাপে প্রাণ হারিয়েছিল।এসব ঘটনা আমি দেখিনি কিন্তু শুনেছি বাপ দাদার কাছ থেকে।এক কথায় পাহাড় এক সময় বসবাসের অযোগ্য ছিল।
পার্বত্য অঞ্চলে চিকিৎসার জন্য রোগীকে হাসপাতালে নেয়া হয় এভাবে। ছবি- সংগৃহীত
কিন্তু আজ প্রশ্ন জাগে, যারা অনেক কষ্ট করে সেই আদিকাল থেকে পাহাড়কে বসবাসের উপযোগী করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আজ তারা কেমন আছে? কখনও কি জানতে চেয়েছি তাদের সুবিধা অসুবিধার কথা?
মানুষ বেঁচে থাকার জন্য প্রথমত প্রয়োজন নিরাপদ বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য তারপর অন্যান্য উন্নয়ন! কিন্তু আমরা আজ কি করছি? উন্নয়নের নামে নিরীহ মানুষদের উচ্ছেদ করছি। যেসব সর্বাগ্রে প্রয়োজন সেসব না করে পর্যটন, রিসোর্ট, বিলাস বহুল হোটেল, মসজিদ, মন্দিরের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছি। তাতে কি গহীন পাহাড়ের মানুষগুলোর খুব বেশি উপকার হয়েছে। এই রিসোর্ট, মন্দির-মসজিদ না করে সবার আগে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয় নিয়ে তো কাজ করা জরুরী নয় কি? কারন মানুষ বেঁচে থাকলে এবং পড়তে জানলেই তো ধর্ম চর্চা করবে। যেখানে মানুষের জীবন বাঁচানো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সেখানে মসজিদ-মন্দির কি কাজে আসবে সেটাই পাহাড়ীদের সামনে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
পাহাড়ে উন্নয়ন হয়নি সেটা অস্বীকার করা যাবে না, উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু বিশাল সাগরে এক কেজি লবণ ছিটিয়ে যেমন সাগরের সব পানি লবণাক্ত হয় না, তেমনি পাহাড়ের সামনের অংশের সৌন্দর্যবর্ধন করে পিছনের অংশের মানুষগুলো মানবেতর জীবন যাপনের গল্প কখনই সমতলের মানুষ জানতে পারে না।
সাজেকে উন্নত মানের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন রোগীকে হাসাপাতালে নেওয়া হচ্ছে।এটা সত্যি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এ যেন বাতির নিচে অন্ধকার পাহাড়ে এখনো পুরণো কায়দায় চিকিৎসার জন্য রোগী বহন করা হয়। পাহাড়িদের স্বপ্ন কবে তারা আধুনিক প্রযুক্তির অর্ধেক সুযোগ নিতে পারবে।