আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের লক্ষ্যে নতুন প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল সোমবার কমিশনের সভায় ‘দুই লাখ ইভিএম ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্প’ অনুমোদন দেওয়া হয়। আট হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার এই প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য দু-এক দিনের মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মোট দুই লাখ ইভিএম কেনা হবে।এ ছাড়া ইভিএম সংরক্ষণের জন্য ওয়্যারহাউস (গুদাম) নির্মাণ, গাড়ি, প্রশিক্ষণ—এসব খাতে ব্যয়ও প্রকল্প প্রস্তাবে যুক্ত করা হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নেন।
সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বর্তমানে আমাদের কাছে যে ইভিএম আছে, তা দিয়ে সর্বোচ্চ ৭০ থেকে ৮০টি আসনে ভোট করা সম্ভব। তাই ১৫০টি আসনে নির্বাচন করতে হলে নতুন করে ইভিএম কিনতে হবে। এ জন্য ইসি সচিবালয় নতুন একটি প্রকল্প প্রস্তাব কমিশন সভায় তুলেছিল। আমরা এটার অনুমোদন দিয়েছি। এখন পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। তারা অনুমোদন করবে কি করবে না সেটা তাদের বিষয়। ’
উল্লেখ্য, আগামী সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করার ব্যাপারে গত ২৩ আগস্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ইসি। ওই সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, বর্তমানে কমিশনের হাতে দেড় লাখের মতো ইভিএম আছে। এসব ইভিএমের কিছু অকেজো বা অকেজো হওয়ার পথে। সে কারণে ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট করতে হলে আরো প্রায় দুই লাখ ইভিএম প্রয়োজন হবে। এর আগে যে দেড় লাখ ইভিএম কেনা হয়েছিল, সেই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকা।
এ ছাড়া ইভিএম প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আগেই জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন যাতে নিজস্ব জনবল ও সক্ষমতায় ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ, ইভিএম সংরক্ষণ করতে পারে, সে ব্যবস্থাও প্রকল্প প্রস্তাবে রয়েছে। এ জন্য প্রশিক্ষিত জনবল ও গুদামের প্রয়োজন হবে। আগের দেড় লাখ এবং নতুন প্রকল্পে দুই লাখ মিলিয়ে সাড়ে তিন লাখ ইভিএম ইসির হাতে থাকবে। ইভিএম সংরক্ষণ করতে ১০টি ওয়্যারহাউস নির্মাণের চিন্তা রয়েছে। ডলারের বাড়তি দাম, জনবল প্রশিক্ষণ এবং ইভিএম সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ করতে মোট ব্যয় আগের প্রকল্পের চেয়ে অনেক বাড়ছে। আগে প্রতিটি ইভিএমে সব মিলিয়ে ব্যয় হয়েছিল দুই লাখ ৩৪ হাজার টাকা। আগের ওই দামে এবার ইভিএম পাওয়া যাবে না।
বিপুল ব্যয়ে ইভিএম কেনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে গত ৭ সেপ্টেম্বর সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, ‘এটা মন্ত্রণালয় দেখবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের যে আর্থিক মূল্য, তা ইভিএমের মূল্যের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। ’
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট