আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পিইডিপি-৪ সেমিনার হলে গণসাক্ষরতা অভিযান ও সেভ দ্য চিলড্রেন এর আয়োজনে এম্পাওয়ারিং গার্লস থ্রু এডুকেশন (ইজিই) প্রকল্পের প্রগেস শেয়ারিং মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) সৈয়দ মামুনুল হক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযান এর উপ-পরিচালক তপন কুমার দাশ ।
অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেভ দ্য চিলড্রেন এর এম্পাওয়ারিং গার্লস থ্রু এডুকেশন (ইজিই) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শাহিন ইসলাম। তিনি বলেন, ২০১৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত এ প্রকল্পের বিশেষ অর্জন হলো, ৯৩ শতাংশ ইজিই প্রকল্পের লক্ষিত মেয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে সেপ্টেম্বর ২০২১- এ বিদ্যালয় খোলার পর, ৮৩৮৯ জন মেয়ে শিক্ষার্থী বাড়ি ভিত্তিক শিখন অধিবেশন ও ফোন ফলোআপ সহায়তা পেয়েছে, ৩৯৫০৯ টি বাড়িভিত্তিক শিখন অধিবেশন সংগঠিত হয়েছে, অভিভাবক এবং কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ নিরাপদ বিদ্যালয়, কোভিড-১৯ স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিক্ষার গুরুত্ব, আইসিটি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা, বাল্যবিবাহের কুফল এবং শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে বাবা মায়ের ভূমিকা বিষয়ে অবহিত হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, মেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা সফলভাবে সমাপ্তিতে সহায়তা করা এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তিতে সহযোগিতা করার লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্পটি শুরু হয় । এই প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রাম এবং জামালপুরের ১২০ টি বিদ্যালয়ের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির মেয়ে শিক্ষার্থীদের তাদের শ্রেণি সময়ের আগে ও পরে ভার্চুয়াল শিখন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে ই-কন্টেন্ট ব্যবহার করে বাংলা, ইংরেজি এবং গণিত শিক্ষায় সহায়তা প্রদান করা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে প্রখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের মেয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে ট্যাবলেট ব্যবহার করে স্কাইপি সেশনের মাধ্যমে সংযোগ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি করা, ভবিষ্যৎ জীবনের লক্ষ্য অর্জনে মেয়ে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করা, বিদ্যালয়ের বাইরে দলগত সহায়তা প্রদান করা এবং বাড়ির কাজ প্রস্তুতিতে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বাড়িতে গিয়ে সহায়তা প্রদান করা হয়। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে সাক্ষাৎ করা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার উপকারিতা এবং বাল্যবিবাহের অপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি, মোবাইল মেসেজিং, স্কাইপি সেশন, সরকারি কর্মকর্তা, কমিউনিটির সদস্য ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাথে পরামর্শ ও সমন্বয় সাধন করে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর যেন পর্যায়ক্রমে এই ধরনের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অব্যাহতভাবে ভূমিকা পালন করে।
উপস্থাপন শেষে প্রকল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি-৪) দিলীপ কুমার বণিক, উপ-পরিচালক ড. নুরুল আমিন, ইমামুল ইসলাম, আবু বাশার, রায়হান উদ্দিন, ফরহাদ আলম,ওয়ালিউল ইসলামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) সৈয়দ মামুনুল হক বলেন, এসডিজি-৪ অর্জনে এনজিওদের ভূমিকা অসাধারণ। শিক্ষার উপকারিতা এবং বাল্যবিবাহের অপকারিতা সম্পর্কে মেয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অবহিতকরণ এবং ধারণার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষিত মেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জনের মাধ্যমে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করানোর এই উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে দাতাসংস্থা এবং সংশ্লিষ্টদের আহবান জানাচ্ছি, শুধু মেয়ে শিক্ষার্থী নয় একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে সকল শিশুকেই এই ধরনের কার্যক্রমগুলোর আওতায় আনতে হবে। এদেশের এনজিওগুলোই মেয়েদের ঘরের বাইরে এনেছে। তাই শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে একযোগে কাজ করা অব্যাহত রাখতে হবে।