ইরানে চার দশকের বেশি শিয়া মৌলবাদীগোষ্ঠী ক্ষমতায়৷ শাহ পহলবিকে ক্ষমতাচ্যুৎ করে কথিত বিপ্লব সিন্দাবাদের দৈত্যের মতো চেপে বসে ইরানিদের কাঁধে৷ এই বিপ্লবের সবচের ক্ষতিগ্রস্থ হয় ইরানি নারীরা৷ এক সময় তারা বিশ্বেই অগ্রসর ছিল এখন বিশ্বে সবচেয়ে নিপীড়িত৷ একসময় তারা সমান তালেই ইরানের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছিল৷ সংস্কৃতি, পার্লামেন্ট, প্রশাসন, বিচার, শাসক সর্বত্রই তারা দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছিল৷ কথিত বিপ্লব সেই ইরানকে আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করেছে৷ এখন খাদ্য ও পানির সংকটেও ভুগছে৷ এক অদ্ভুত গণতন্ত্র যেখানে আগেই প্রার্থীদের ঠিক করা হয়৷ সেখানে এক অদ্ভুত আইন যেখানে নারীদের হিজাব ঠিক আছে কি না তা দেখার জন্য আলাদা পুলিশবাহিনী রয়েছে৷ স্বাধীন দেশে নারীরা দাসত্ব করছে৷ আমরা ইরানিদের জন্য সহানুভূতি প্রকাশ করতে পারি কিন্তু নিজেরা ইরানি হতে চাই না৷ তাহলে…
ইরানের চেয়েও ভয়ানক বিপদে আছে সুন্নি আফগান নারীরা৷ তাদেরও অবগুণ্ঠিত করা হয়েছে৷ তারা চাকরি ও কর্মসংস্থান হারিয়ে দাসে পরিণত হয়েছে৷ খাদ্য, পানীয়, চিকিৎসাহীনতায় জীর্ণতর হয়ে গেছে সাধারণ মানুষেরই জীবন৷ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, রাজনীতি, ইতিহাস সবই কদর্যতায় রূপ নিয়েছে৷ মতপ্রকাশ তো দূরের কথা, কথা বলাই কঠিন৷ দুটি দেশেই নারীরা একা বের হতে পারে না, সুশিক্ষিত হতে পারে না, কর্মসংস্থানে যেতে পারে না, ক্ষমতায় যেতে পারে না৷ সব কিছু হারিয়ে দাসীবৃত্তি আর পুরুষের যৌনক্ষুধা মেটানোই তাদের কাজ৷ পরিবারে যতভাবে নিপীড়িতই হোক রা করার জো নেই৷ এমনই অসভ্য ও বর্বর দেশ আমাদেরও হোক তা আমরা চাই না৷ তাহলে…
দরিদ্র দেশের সরকার সবসময়ই চায় মানুষ প্রতিবাদ না করে ধর্মান্ধতায় নিমজ্জিত থাকুক৷ মানুষ ভেবে নিক এই কষ্টকর জীবনই স্রষ্টা নির্দৃষ্ট করে দিয়েছে৷ ভাগ্যে ভাল কাছু ছিল না৷ ইহকালে সম্পদ ও সুযোগ যত কম পরকালে তত সুবিধা৷ মানুষ থাকুক প্রতিবাদহীন৷ ইরান ও আফগানের গণতন্ত্রহীনতা ও সুশাসনের অভাবের সুযোগে মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটে৷ যেভাবে কংসকে ধ্বংস করতে গোকুলে বেড়ে উঠেছিল শ্রীকৃষ্ণ! গণতন্ত্র ও বিজ্ঞানমনস্কতার জন্য লড়াই না করার চরম খেসারত দিচ্ছে ইরান ও আফগানিস্তানের মানুষ৷ জঙ্গি শাসনের দিকে ধাবিত হওয়ার অনেক উপসর্গই আমাদের রয়েছে৷ আমরা যদি সোচ্চার না থাকি তাহলে হারিয়ে ফেলতে পারি বাকি অধিকারগুলোও৷ এরপর যুগের পর যুগ অতিক্রান্ত হবে আবার সভ্য হওয়ার পথে আসতে৷ কথা বলা ও প্রতিবাদ করা ছাড়া মুক্তির কোন পথ নেই৷