জনস্বার্থে গণপরিবহনে-সড়কে শৃঙ্খলা আনতে চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, পরিবহনের শৃঙ্খলা, রাস্তার শৃঙ্খলা এটি আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। সিটি করপোরেশনের বাস রুট রেশনালাইজেশনের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই এবং সবাইকে বলব আমাদের স্বার্থে এই উদ্যোগকে সফল করবেন। জনস্বার্থে সফল করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মোহাম্মদপুর এলাকায় বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমের আওতায় ২২ ও ২৬ নম্বর যাত্রাপথে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ বাস সেবা চালু উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
উন্নয়নের সুফল জনগণকে পৌঁছে দিতে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার গুরুত্ব উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, এই নগরীতে, বাংলাদেশের সড়কে এত স্থাপনা কোনো কিছুই সত্যিকারের সুফল দেবে না, যদি শৃঙ্খলা না থাকে, রাস্তায় যদি শৃঙ্খলা না থাকে, পরিবহনে যদি শৃঙ্খলা না থাকে আমাদের উন্নয়ন বৃথা হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস আগামী দিনে বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় পর্যায়ক্রমে ঢাকা নগর পরিবহনের সব নতুন যাত্রাপথে নতুন বাস নামানো হবে বলে জানান।
শেখ তাপস বলেন, আমরা পরীক্ষামূলকভাবে (২১ নম্বর যাত্রা পথে) শুরু করে ছিলাম। আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রতিকূলতা ছিল যে, কি ধরনের বাস আমরা দিব। আমরা সে সময় ১৯ সালের যে বাসগুলো ছিল, সেই বাসগুলো দিয়ে শুরু করে ছিলাম। কিন্তু এবার ঢাকাবাসীর প্রত্যাশা পূরণকল্পে আমরা একদম নতুন নির্মিত ৫০টি বাস দিয়ে ২২ নম্বর যাত্রাপথ শুরু করছি। এখান থেকে পিছনে যাওয়ার আর সুযোগ নেই। এখন থেকে নতুন বাসই ঢাকা শহরে নামবে। কোনো পুরাতন বাস নামার আর সুযোগ থাকবে না।
নগর পরিবহনে সেবার মান ধীরে ধীরে আরো বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন উল্লেখ করে দক্ষিণের মেয়র বলেন, আমাদেরকে এই তিনটি যাত্রা পথ শুরু করতে অনেক প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমরা আশাবাদী, আমাদের পরীক্ষামূলক ২১ নম্বর যাত্রা পথ থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে, সেটার মাধ্যমে আমরা এবার দুটো যাত্রা পথ শুরু করলাম। আগামী নভেম্বরে ২৩ নম্বর যাত্রাপথ আমরা শুরু করতে পারবো। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে আমরা ঢাকা শহরের সকল যাত্রা পথে এই নতুন বাস দিয়ে ঢাকা নগর পরিবহনকে একটি সুশৃঙ্খল গণপরিবহন পরিণত করব।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, রুটপারমিট বিহীন কোনো গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। এক রাস্তার গাড়ি আরেক রাস্তায় চলতে পারবে না। সাধারণ যাত্রীদের কথা চিন্তা করে আমাদের কঠোর হতে হবে। এই নগরীকে বাসযোগ্য নগরী করে সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে দিয়ে প্রথম ঢাকা নগর পরিবহনের যাত্রা শুরু হয়। ওইসময় মোট ৫০টি সবুজ রঙের বাস দিয়ে চালু হয়েছিল সেবাটি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ১০০টি বাসের মাধ্যমে ২২ এবং ২৬ নম্বর নতুন দুইটি রুট চালু হয়েছে। এই ১০০টি বাসের মধ্যে নগর পরিবহনের ৫০টি ও বিআরটিসির ৫০টি বাস রয়েছে।
২২ নম্বর রুট হলো- ঘাটারচর, ওয়াশপুর, বসিলা, বসিলা সিএনজি স্ট্যান্ড, মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড, টাউন হল, আসাদগেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, কাকরাইল, ফকিরাপুল, মতিঝিল, টিকাটুলি, কাজলা, কোনাপাড়া এবং স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত। এছাড়া টিকাটুলি থেকে কাজলা পর্যন্ত ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে বাস চলাচল করবে।
২৬ নম্বর রুট হলো- ঘাটারচর, ওয়াশপুর, বসিলা, বসিলা সিএনজি স্ট্যান্ড, মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড, টাউন হল, আসাদগেট, সোবহানবাগ, কলাবাগান, সায়েন্সল্যাব, নিউ মার্কেট (নীলক্ষেত), আজিমপুর, পলাশী, চাঁনখারপুল, পোস্তগোলা, পাগলা (কদমতলী থানা) পর্যন্ত। এছাড়া এই রুটে চাঁনখারপুল থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে বাস চলাচল করবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট