সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলের দুই কুয়েতি সহযোগীকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড এবং ১৩ লাখ ৬০ হাজার কুয়েতি দিনার জরিমানা করেছেন কুয়েতের উচ্চ আদালত। তাঁরা হলেন কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি শেখ মাজেন আল-জাররাহ এবং পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী নাওয়াফ আল-শালাহি। অর্থপাচার মামলায় গত সপ্তাহে আদালত এই রায় দেন। কুয়েতের আরবি সংবাদপত্র দৈনিক কাবাস এবং আরব টাইমসে এসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
মানবপাচার ও অর্থপাচারের মামলায় পাপুল বর্তমানে কুয়েতের কারাগারে আছেন। গত বছরের ২৮ নভেম্বর কুয়েতের আপিল আদালত চূড়ান্ত রায়ে পাপুলকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২৭ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় ৭৭ কোটি টাকা) জরিমানা করেন। সাজার পর পাপুলকে কুয়েত থেকে বিতাড়িত করার নির্দেশও দেন আদালত। মামলায় পাপুলের সহযোগী হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন শেখ মাজেন আল-জাররাহ এবং নাওয়াফ আল-শালাহি। পাপুলের কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে চেকের মাধ্যমে তাঁরা আট লাখ ৬০ হাজার কুয়েতি দিনার নেওয়া এবং পরে অন্যত্র পাচারের দায়ে তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
গত বছর নভেম্বরে পাপুলের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি মেজর জেনারেল মাজেন আল-জাররাহ এবং জনশক্তি বিভাগের পরিচালক হাসান আল খিদরকেও সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে তাঁদের সরকারি পদ থেকে বরখাস্ত করারও আদেশ দেওয়া হয়। আদালত ওই মামলায় কুয়েতের সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য সালাহ খুরশেদকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং সাত লাখ ৪০ কুয়েতি দিনার জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
কুয়েতের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) ২০২০ সালের ৭ জুন পাপুলকে কুয়েত থেকে গ্রেপ্তার করে। সে সময় তিনি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ছিলেন। তবে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে প্রাপ্য কূটনৈতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করতেন না। কুয়েতের সিআইডি কুয়েতপ্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার এবং শ্রমিক শোষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে পাপুল অবৈধভাবে কুয়েতে কর্মী নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
কুয়েতে সাজা হওয়ার পর গত বছর তিনি বাংলাদেশে সংসদ সদস্য পদ হারান। পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলামও জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার কখনো পাপুলের বিষয়টি কুয়েতের কাছে তোলেনি বা জানতে চায়নি।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট