শীলাঃ বিবাহের পরে একসপ্তাহ খুবই মজা ও আনন্দের মাঝে কাটলো। স্বামী অনেক ভালো। কিন্তু বিপত্তি সৃষ্টি হলো ওখানে, আমরা ছিলাম মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। আমার বাবার এক চাকরি ছাড়া তেমন কোনো সহায় সম্বল ছিলনা যে আমার বড়লোক শশুর বাড়ির সব আবদার মেনে নিবে। মাঝখানে
কথকঃ ভাই এমন কোনো কাহিনি আমাকে শুনাতে যাসনা যা আমার মতো বিয়ে পাগলির আবার হৃদয়ে আঘাত হানে।সে একটু বিরক্তি নিয়ে আমাকে বলল,ধ্যাৎ তুই আবার মধ্যখানে বাঁ হাত ঢুকালি কেন একদম চুপ মেরে শুনে যা।পাগল একদম, বিয়ে পাগলা শেহেরজান।আমি হাহাহা করে হেসে দিলাম।সে আবার বলতে শুরু করল।
শীলাঃ তারপরও বাবা তার সাধ্যমতো চেষ্টা করতো আমার শশুর বাড়ির মানুষকে খুশি রাখার। তাতেও তাদের মন ভরতোনা।সবসময় আমাকে খোঁটা দেওয়াটা যেন তাদের একটা নিত্য কাজ হয়ে দাঁড়ালো।প্রতিদিন বিকালবেলা আমার শাশুড়ির সহপাঠীনিরা আসতো থুক্কু বান্ধবীরা আসতো আর গল্পের আসর বসাতো।গল্পের মুল বিষয়বস্তু ছিল আমার বাপের বাড়ি আর নায়ক নায়িকা ছিল আমার মা বাবা। আমার মা বাবা কেমন চলে, কি করে আমার বাপের বাড়ি থেকে কি দেয় টপিকটার যেন শেষ নেই। ওখানে গল্পের আসরে নাস্তা নিয়ে যেতাম আমি।আমাকে দেখলেই যেন কানাঘুষা আরো বেড়ে যেতো। একজন বলতো বিপুলের মা জানো( বিপুল শীলার স্বামীর নাম) আজ দেখলাম আজগরের শশুর বাড়ি থেকে ট্রাকভর্তি উপঢৌকন পাঠালো।যেমনি মেয়ে সুন্দর পেলো তেমনি দেওয়া নেওয়া। তখন আমার শাশুরি বলে উঠত এগুলো কপাল। তখন আমার মন খারাপ হয়ে যেতো ওখান থেকে পালাতে পারলে যেন বাঁচতাম। একটু রুমে গিয়ে বসলে বলতো আমি আনকালচারড গাঁইয়া আরো কতো কি? বিপুল যখন বাসায় আসতো মনে হতো শান্তির দূত যেন আসলো বলে।কিন্তু ওর কাছে যখন যেতাম তখন শাশুড়ি আর ননদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে যেতো। আমাকে ওর কাছ থেকে সরিয়ে আনতে টতব্যস্ত হয়ে যেতো। যেহেতু আমার বয়স ছিল কম আমি তেমন কিছু বুঝতামনা তাই আমি ওদের মন যুগিয়ে চলার চেষ্টায় থাকতাম। আমার মা বাবাকেও এসব বলতামনা যদি বাবা শুনেন কষ্ট পাবেন। এভাবেই একটা বছর কেটে গেল। আমার ১ম সন্তান জন্ম নিল। আমার পড়ালেখাও আর হলোনা। সংসারের যাঁতাকলে পিষতে লাগলাম। ইচ্ছা ছিল ইন্টারে ভর্তি হবো।তাও হলোনা যদিও বিপুল রাজি ছিল পড়াতে কিন্তু বাঁধ সাধলো তার মা বোন পড়াশোনা করলে বাচ্চা কে দেখবে? আমিও কুড়িয়ে নিলাম নিজেকে। আমি বিপুলের মন যুগিয়ে চলতে পারতামনা লোক লজ্জার ভয়ে পাছে আবার স্বামী পাগল উপাধি পেয়ে না যায়। আবার মাঝখানে আমি বললাম,
কথকঃ ভাই আর ভয় লাগাইসনা পরানের বান্ধবী।আমি জানে মরে যাবো।আমার জামাইরে অকালে বিধবা বানাইসনা। আমাকে সংসার জীবনের সুন্দর কিছু থাকলে বল।আমিএই প্যারার কথা আর নিতে পারছিনা। সে খিলখিলিয়ে হেসে উঠল। আমি তার দিকে একধ্যানে চেয়ে রইলাম আর ভাবতে লাগলামএতো সুন্দর নিষ্পাপ একটা মেয়ের জীবনে এতো কিছু ঘটে গেল সামনে আরো কি শুনি কি জানি। তো অপেক্ষায় থাকুন আর পড়ে সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করবেন বন্ধুরা। ভুল ত্রুটি তুলে ধরবেন প্লিজ প্লিজ প্লিজ।।