ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে তাকসিম এ খানের নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে দাবি করে তা অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

আজ রবিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ থেকে অনুমতি নেওয়ার পর এই রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সোমবার রিটটির শুনানি হতে পারে বলে জানান এই আইনজীবী।

কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘নিয়োগ প্রবিধানের শর্ত না মেনে ২০০৯ সালে তাকসিম এ খানকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ওয়াসার এমডি হতে হলে যে ধরনের অভিজ্ঞতা থাকা দরকার সেটি তার ছিল না। ফলে তার নিয়োগে যে অনিয়ম হয়েছে তার অনুসন্ধানের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। ’

নিয়োগ প্রবিধানের শর্ত না মেনে ২০০৯ সালের ১৪ অক্টোবর ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে তাকসিম এ খানের নিয়োগ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে রুল চাওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সরকার সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন-২), বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানকে বিবাদী করা হয়েছে রিটে।

১৯৯৬ সালের ওয়াসা আইন অনুযায়ী ওয়াসা পরিচালিত হয়। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। আইনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে একই ব্যক্তি সর্বোচ্চ কতবার বা কত বছর থাকতে পারবেন, সে বিষয়ে কিছু বলা নেই।

ওয়াসা বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেয় সরকার। তাদের বেতন-ভাতা নির্ধারণ করে বোর্ড। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধি নিয়ে ওয়াসা বোর্ড গঠিত হয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তাকসিম এ খানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই বছর ওয়াসার এমডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশনে অথবা সিনিয়র পর্যায়ে সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ২০ বছরের আবশ্যিক অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়। ওই সময় তাকসিমের এসংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। তবু তিনি নিয়োগ পেয়েছিলেন। তখন তার মোট মাসিক বেতন ছিল এক লাখ ২০ হাজার টাকা। বর্তমানে তার বেতন সর্বসাকল্যে ছয় লাখ ২৫ হাজার টাকা।

তার বেতন-ভাতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ানো হয়েছে ওয়াসার পানির দাম। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে আবাসিক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট পানির দাম ছিল ছয় টাকা চার পয়সা। এখন একই পরিমাণ পানির দাম ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। ১৩ বছরে ১৪ বার পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।