এর আগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অভিযানে ১৬৫টি বাসের রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ করা হয়। সেই তালিকায় ভিক্টর ক্লাসিকের নাম ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই সুপারিশ বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি হয়নি।
গতকাল একাধিকবার আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি সূত্র বলেছে, এই রুটে রাইদা, তুরাগ ও অনাবিল নামের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বাস চলাচল করে। তবে ওই সব কম্পানির বাস আংশিক রুট ভাগাভাগি করে। সদরঘাট থেকে টঙ্গী পর্যন্ত পুরো পথে শুধু ভিক্টর ক্লাসিক ও আকাশ পরিবহনের বাস চলে। এই দুই প্রতিষ্ঠানে বাস রয়েছে প্রায় ১৫০টি।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, ঢাকা ও চট্টগ্রামে ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর শুরু হওয়া অভিযানের এক মাস পর ৮ ডিসেম্বর ১৬৫টি বাসের রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বলে বিআরটিএ। অভিযানে যেসব বাস অর্থদণ্ড দেওয়ার পরও একই অপরাধ একাধিকবার করেছিল সেসব বাসের রুট পারমিট বাতিল করতে বলা হয়।
বাসের রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ এত দিনেও কেন কার্যকর হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, প্রক্রিয়াটা যতটা সহজ আবার ঠিক ততটাই জটিল। বাসের রুট পারমিট বাতিলের এখতিয়ার রয়েছে আরটিসির (আঞ্চলিক পরিবহন কমিটি)। দীর্ঘদিন ধরে এই কমিটির কোনো বৈঠক হচ্ছে না। ফলে এ জাতীয় সুপারিশেরও কোনো অগ্রগতি নেই।
মোট ২৫টি প্রতিষ্ঠানের ১৬৫টি বাসের রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ করা হয় তখন। এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকায় নাম রয়েছে বসুমতি, রাইদা, পরিস্থান, এম এম লাভলী, অনাবিল, আলিফ, লাব্বাইক, তুরাগ, বলাকা, স্বাধীন, প্রজাপতি, রজনীগন্ধা, শিকড়, আকাশ, আজমেরী, মনজিল, প্রভাতি, বনশ্রী, আসমানী, প্রচেষ্টা, ভিক্টর, মিডলাইন, ডি লিংক, রাজধানী, গুলিস্তান-গাজীপুর পরিবহন ও ভিআইপি।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘আরটিসি বর্তমানে অকার্যকর। তাই কোনো বৈঠক হচ্ছে না। বাস রুট রেশনালাইজেশন নিয়ে দুই মেয়র নতুন করে সিদ্ধান্ত নেবেন। তারপর আরটিসি নিয়ে আবারও আলোচনা হবে।’
বিআরটিএ সূত্র বলেছে, সর্বশেষ আরটিসির বৈঠক হয়েছে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
সাধারণ যাত্রীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বাসের রুট পারমিট বাতিল করার ক্ষমতা কারোই নেই। যাঁরা সরকারি কর্মচারী হয়ে দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন তাঁরা বাস মালিকদের তোষামদি করেন। ফলে মালিকদের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটে এমন কোনো কিছুই তাঁদের পক্ষে করা সম্ভব না।