1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
যৌথ বাহিনীর অভিযানে সোনাতলার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা নান্নু আটক আজ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬১তম মৃত্যুবার্ষিকী এক্সপ্রেস বাস চালু হওয়ায় যাত্রীরা খুশিঃ স্থায়ী টার্মিনাল নির্মানের দাবি নাগরিক কমিটির চিন্ময় দাসের জামিন শুনানি পেছাল এক মাস বিমানে শিডিউল বিপর্যয় আবারও যেন ‘নিয়মে’ পরিণত হয়েছে জলমহাল নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগে বাঁওড় ইজারা বাতিলে সোচ্চার বলুহরসহ ভুক্তভোগী বাঁওড় জেলেরা বোয়ালখালীতে সানশাইন একাডেমীর পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান বগুড়ায় শীত থেকে বাচতে হাটের পোশাকে ঝুকছে নিন্ম আয়ের মানুষ সোনাতলা সদরে দিনের বেলা মোটরসাইকেল চুরি অরাজকতা প্রতিরোধে কাজ করছে সেনাবাহিনী : প্রেস ব্রিফিং

আজ ৬৫ বছরে পা দিলেন প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত পরিচালক মঈনুল ইসলাম খান

সিজুল ইসলাম:
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩
প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত পরিচালক মঈনুল ইসলাম খান।
আজকের দিনে বগুড়ার সূত্রাপুরের বাড়িতে ৬৫ বছর আগে জন্মেছিলেন মঈনুল ইসলাম খান। সত্তরের দশকে ঢাকায় চলে আসেন। বগুড়া জিলা স্কুলের ছাত্র ছিলেন। একাত্তরে তাঁদের বাড়ি পাক হানাদার বাহিনী পুড়িয়ে দেবার পর সবাই ঢাকায় চলে আসেন কিন্তু তাঁর বাবা থেকে যান চাকরির কারণে। বড় ভাই খ্যাতনামা সংগীত শিল্পী শওকত হায়াত খানকে দেখে গানে আগ্রহ বাড়ে। বাবার অপছন্দ সত্ত্বেও মায়ের প্রশ্রয়ে গান নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। ওস্তাদ সুখেন্দু চক্রবর্তীর কাছে গান শেখা। যুবক হলে ঢাকা কেন্দ্রীয় উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত হোন। তখন ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে একাধিকবার কোরাস গান করতেন।
১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ বেতারে শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হোন। তালিকাভুক্তির আগে মৌচাকে একটি স্কাউট জাম্বুরী হয়েছিল। জাম্বুরীর জন্য তারা একটা থিম সং করেন সেটির সুরারোপ করে অনেকের নজরে আসেন মঈনুল ইসলাম খান। শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে সঙ্গীত পরিচালক হবার ইচ্ছা হলো কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রেডিওতে সঙ্গীত পরিচালক সমর দাস ৩০ জন শিশু-কিশোরকে নিয়ে প্রোগ্রাম করছিলেন। তাঁর ডিরেকশন এবং নেতৃত্ব খেয়াল করলাম। সেই প্রোডাকশনে তিনি সবাইকে অর্ডার করছিলেন এটা আমার খুব ভাল লাগলো।
১৯৭৮ সালে তালিকাভুক্ত হোন বাংলাদেশ টেলিভিশনে সর্বকনিষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে। নতুন কুঁড়ি দলীয় সংগীত শাখার সংগীত পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হোন তিনি। সফলতার সাথে শিশু-কিশোরদের যেকোন প্রডাকশন করতেন। ৭০ জনের মত অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে একটি সলো করাতে গিয়ে আবিস্কার করেন কনকচাঁপাকে। সি গ্রেডে বাচ্চাদের প্রডাকশন করতে করতে দুবছর পর বি গ্রেড পর্যায়ক্রমে এ গ্রেড এবং বিশেষ গ্রেডে উন্নীত হোন। তারপর বড়দের প্রোগ্রাম করতে শুরু করেন। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ বেতারে অডিশন দিয়ে সংগীত পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হতে হয়েছে মঈনুল ইসলাম খানকে। নির্বাচক ছিলেন আব্দুুল আহাদ, সমর দাস এবং ওস্তাদ কাদের জামেরী। কিছুদিন কাজ করার পর এ গ্রেড সংগীত পরিচালক হলে আধুনিক বাংলা গানের অনুষ্ঠান সুর সাগর, সুর বিতান এবং গীতাঞ্জলী অনুষ্ঠানে মাহমুদুন্নবী, জিনাত রেহেনা, নার্গিস পারভীনদের সাথে কাজ করা শুরু করেন। ৯ বার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলীর সহযোগী হিসেবে প্রায় দীর্ঘ ১৫ বছর কাজ করার সুবাদে তাঁর কাছে থেকেই শিখেছেন ব্যাকগ্রাউন্ড করা।
১৯৭৮ থেকে ২০২২ দীর্ঘ ৪৪ বছরের ক্যারিয়ারে গুণী এই সুরকার ও সংগীত পরিচালক কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন পাঁচ প্রজন্মের শিল্পীদের সাথে যা তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি তাঁর কর্মজীবনের প্রথম প্রজন্মে কিংবদন্তী কন্ঠশিল্পী মাহমুদুন্নবী, সৈয়দ আব্দুল হাদি, খুরশীদ আলম, এন্ড্রু কিশোর, খন্দকার ফারুক আহমেদ, এম এ হামিদ, হাসিনা মমতাজ, নার্গিস পারভীন, দ্বিতীয় প্রজন্মে আবিদা সুলতানা, শাম্মী আকতার, রফিকুল ইসলাম, নীলু বিল্লাহ, তৃতীয় প্রজন্মে শাকিলা জাফর,খালিদ হাসান মিলু, তপন চৌধুরী, কুমার বিশ্বজিৎ, শুভ্রদেব, চতুর্থ প্রজন্মে কনকচাঁপা, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, ডলি সায়ন্তনী, রুকসি, আলম আরা মিনু এবং পঞ্চম প্রজন্মে সালমা, রন্টি, নিশিতা বড়ুয়া, স্বর্গ তৌহিদদের মত অসংখ্য গুণী ও তরুণ মেধাবী শিল্পীদের সাথে প্রায় দুই হাজার গানে সুরকার ও সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। দুইবছর দূরে থাকার পর করোনার পর বগুড়ার মেয়ে উদীয়মান কন্ঠশিল্পী স্বর্গ তৌহিদ এর একটি দেশের গানে সুর করেন।

প্রখ্যাত সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক মঈনুল ইসলাম খান এবং জনপ্রিয় খ্যাতনামা কন্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর।

সলো এবং মিক্সড অ্যালবাম মিলিয়ে ৩০ টির মত হবে। জাতীয় পার্টির শাসনামলে সার্ক সম্মেলন বিটিভির বিশেষ অনুষ্ঠানের একমাত্র সংগীত পরিচালক ছিলেন মঈনুল ইসলাম খান। সর্বশেষ এস গেমসে আলাউদ্দিন আলীর সহযোগী হিসেবে সংগীত পরিচালনায় কাজ করেছেন। ১০০ টি নির্বাচিত দেশের গান নিয়ে গবেষণা সংস্থা জাগরণ এর শিখা চিরন্তনে করা অনুষ্ঠানেও তাঁর দুটি গান স্থান পায়। বিচারক হিসেবে চ্যানেল রিয়েলিটি শো “সেরাকন্ঠ” এ দুইবার দায়িত্ব পালন করেছেন। গ্রুমার হিসেবেও কাজ করেছেন এনটিভির রিয়েলিটি শো “ক্লোজ আপ ওয়ান” এ। বাচশাস পুরস্কার, প্রেসক্লাব সম্মাননা, ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড, গবেষণা প্রতিষ্ঠান জাগরণ কর্তৃক সম্মাননাসহ দেশে বিদেশে অসংখ্য সম্মাননা ও পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন বগুড়ার এই কৃতি সন্তান।
১৯৮৪ সালে ফজলে লোহানীর উপস্থাপনায় বিটিভির সর্বকালের সেরা “যদি কিছু মনে না করেন” ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে উনার সুর করা দুটি গান ছিল। তার একটি সেজান মাহমুদ এর লেখা “ আমি নই বনলতা সেন, পাখির নীড় তো নয়, দুচোখ আমার অতি সাধারণ” গানে কনকচাঁপার কন্ঠ দেবার জন্য প্রস্তুত করেন। এই গানের কন্ঠ দেওয়ার জন্যই বিশেষ ফরম পূরণ করে আবেদন করার পর কনকচাঁপার টেলিভিশনে তালিকাভুক্তি হয়। এই বছরেই বিবাহ বন্ধনেও আবদ্ধ হয়েছিল সুরকার ও সংগীত পরিচালক মঈনুল ইসলাম খান এবং কন্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা।
কর্মজীবনে এই প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত পরিচালক মাসুদ করিম, মনিরুজ্জামান মনির, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, এসএম হেদায়েত, ফেরদৌস হোসেন ভূইয়া, সাফায়েত খৈয়াম, নজরুল ইসলাম বাবু, কবি কাজী রোজী, মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান, কবির বকুল, আসিফ ইকবাল, জুলফিকার রাসেল, হুমায়ন কবির, এমাদ জুয়েল এর গীতিকারদের লেখা গানের সুর ও সংগীত পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিলেন বলে জানান।
চলচ্চিত্র পরিচালক বেনজিৎ বেনুর মধুমিতা মুভিস এর ব্যানারে “নাফরমান” সিনেমায় সংগীত পরিচালনা করেন। এরপর তিনি আর কোন সিনেমায় কাজ করেননি। কোন প্রকার ফরমায়েসি কাজ তিনি করতে চাননা কোন কমপ্রোমাইজ করতে চাননা। অভিমানী এই গুণী শিল্পী তাই বেশিরভাগ সময় মনোযোগ দিয়েছেন সহধর্মিণী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা কে কনকচাঁপা হয়ে উঠতে। গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী কনকচাঁপা বলেছিলেন, “স্বামী তাঁর জীবনটা উৎসর্গ করেছে আমাকে শিল্পী বানাতে”। যার কারণে কনকচাঁপা বাংলা সিনেমায় প্রায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি গান গেয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গেছেন,তাঁর অ্যালবামের সংখ্যাও ৩৫ টির উপরে। মঈনুল ইসলাম খান বলেন, কনকচাঁপার এক্সট্রা অর্ডিনারি, এক্সসেপশনালিটির কারণে আমার মনে হয়েছে সে যেন কখনও ডিসটার্ব ফিল না করে সেজন্য প্রতিটি রেকর্ডিং, ডাবিং এবং স্টেজ পারফরম্যান্সে আমি তাঁর সাথে থেকেছি সারাজীবন। কনকচাঁপাও এই বিষয়টি সবসময় মেইনটেইন করেন। এই দম্পতির এক ছেলে এবং এক মেয়ে ছোট বেলা থেকে টুকটাক গান করলেও পেশা হিসেবে এমুখো হননি।

গুণীজন ও শিল্পী মহাসম্মেলনে বগুড়ার তিন কৃতি সন্তান বাঁ থেকে অভিনেতা আহসানুল হক মিনু, চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান, সুরকার ও সংগীত পরিচালক মঈনুল ইসলাম খান।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বগুড়ার আয়োজনে গত ২০ ও ২১ জানুয়ারি ২০২৩ বগুড়ায় তৃতীয়বারের মত আয়োজিত গুণীজন ও শিল্পী মহাসম্মেলন – ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমদিন পুরোটা সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। মহাসম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য পুণ্ড্র পদক প্রদান করা হয় প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত পরিচালক মঈনুল ইসলাম খানকে। ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে সেদিন উপস্থিত থেকে পদকটি নিতে পারেননি তিনি। তাঁর বড় ভাই খ্যাতনামা সংগীত শিল্পী শওকত হায়াত খানও পুণ্ড্র পদকে ভূষিত হোন। সংগীত অনুরাগী এই পরিবারটির অবদান অসামান্য। তাঁদের দীর্ঘায়ু ও কল্যাণ কামনা করছে অদেখা বিশ্ব পরিবার। মঈনুল ইসলাম খান এর জন্মদিন উপলক্ষ্যে অদেখা বিশ্ব পরিবারের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন বার্তা সম্পাদক সিজুল ইসলাম।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews