দলীয় সূত্রগুলো বলছে, চলমান কর্মসূচি পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে নিতে পারলে এটিই হতে পারে বিএনপির চূড়ান্ত আন্দোলন।দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, তৃণমূলের এবারের কর্মসূচিতে দলের নেতাকর্মীদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে গত বছর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায়ের বিক্ষোভ এবং পরে বিভাগীয় গণসমাবেশগুলো। ওই সময় জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে কর্মসূচি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল বলে মনে করেন তাঁরা।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলেন, সরকারের মেয়াদ যত কমে আসছে, ততই আন্দোলনের গতি বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা করছেন তাঁরা। কারণ সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনাও কমতে থাকবে। ফলে সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দালন মাথায় রেখে পরিকল্পনা করছে দলটি।
সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে তৃণমূলের জনগণকে সম্পৃক্ত করতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এবার ইউনিয়ন পর্যায় থেকে আমরা পদযাত্রা শুরু করব। এরপর উপজেলা ও জেলা কর্মসূচি হবে। এরপর ঢাকামুখী কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে।’
গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়ালসভায় দলের নেতারা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন। তাঁদের বিশ্লেষণ, আগামী কয়েক মাসে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপের দিকে যাবে। রমজানে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেবে। আন্দোলন দানা বাঁধলে রোজার মধ্যেও বড় কর্মসূচি নিয়ে ঢাকামুখী হওয়া যেতে পারে।
বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ দুজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দেশের নানা সংকটের কারণে তৃণমূল পর্যায়ের পদযাত্রায় মানুষের সম্পৃক্ততা থাকবে অনেক বেশি। এতে আন্দোলনের গতি বাড়বে। ধারাবাহিক এই কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে যেকোনো সময় বড় ধরনের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি হবে, যা গত বছর বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরেও তৈরি হয়েছিল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘গত বছর বিভাগীয় সমাবেশ সরকার পতনের জন্য ছিল না। এবার আমরা যুগপত্ভাবে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করেছি। তৃণমূল থেকে ধাপে ধাপে ঢাকায় বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
ঢাকায় আরো পদযাত্রা হবে : রাজধানী ঢাকায় আগামী ৯ ও ১২ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর গোপীবাগে ব্রাদার্স ক্লাব মাঠ থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত পদযাত্রা হবে। এর আয়োজন করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। ঢাকা মহানগর উত্তরের আয়োজনে ১২ ফেব্রুয়ারি রবিবার শ্যামলী ক্লাব মাঠ থেকে রিং রোড, শিয়া মসজিদ, তাজমহল রোড, নুরজাহান রোড, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড হয়ে বছিলা পর্যন্ত পদযাত্রা হবে।