এস এম সবুরকে সভাপতি ও কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দনকে সাধারণ সম্পাদক করে সম্মেলন পরবর্তী কাউন্সিলের মাধ্যমে ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট কৃষক সমিতির নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচিত হয়েছে। ১০ টি পদ পরবর্তীতে কো-অপ্ট করা সাপেক্ষে ৫৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি এই সম্মেলনে নির্বাচিত হয়।
কমিটিতে সহ-সভাপতি হয়েছেন- নুরুর রহমান সেলিম, আলতাফ হোসাইন, বিপ্লব চাকী, নিমাই গাঙ্গুলী, কাজী সোহরাব হোসেন, আতাউর রহমান কালু, পুলক কুমার দাশ এবং এস এ রশীদ। জাহিদ হোসেন খান ও সুকান্ত শফি চৌধুরী কমল নতুন কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন আবিদ হোসেন।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন (জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে নয়)- সদস্য মো. শাহ আলম,রোমান হায়দার, মানবেন্দ্র দেব, লাকী আক্তার, শামসুজ্জামান হীরা, আব্দুস সাত্তার মণ্ডল, আসাদুল্লাহ টিটো, লীনা চক্রবর্তী,আব্দুন নবী, গৌরাঙ্গ লাল মল্লিক, মোতালেব মোল্লা, কানন আরা, আনোয়ার হাসান, ডা এনামুল হক ইদ্রিস, মোবারক হোসেন ঝন্টু, তোফাজ্জল হোসেন শান্তি, অ্যাড. মানিক মজুমদার, সাজেদুল ইসলাম, সুজাত আলী, নূর মোহাম্মদ, সাদেকুল ইসলাম, হাসান আলী শেখ, হুমায়ুন কবীর, আহসান হাবিব, মোঃ হেলাল উদ্দিন, আলতাফ হোসেন, হুমায়ুন কবির, আব্দুর রহমান, মহসিন রেজা, হাসান আলী, সহিদুল্লাহ সবুজ, জহর লাল দত্ত, শওকত আলী, সুধীন সরকার মঙ্গল, রুহুল আমিন, ইয়াকুব আলী, আমজাদ হোসেন, নাজমুল আহসান রাসেল, মোতাহার হোসেন,নূর মোঃ আনসার , মজিবুর রহমান, শেখ মোঃ হান্নান, আব্দুর রহিম।
এর আগে ১০ দফা দাবি আদায়ে জোরদার কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে ১৬ ফেব্রুয়রি বগুড়ার আলতাফুন্নেসা খেলার মাঠে সম্মেলনের উদবোধন হয়। ১৭ ফেব্রুয়ারি দিনভর শহীদ টিটো মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন চলে। আগের কমিটির সভাপতি এড. এস এম এ সবুরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দনের সঞ্চালনায় অধিবেশন শুরু হয়। কাউন্সিলে সভাপতিমণ্ডলীর দায়িত্ব পালন করেন এস. এম এ সবুর, কাজী সোহরাব হোসেন, আলতাফ হোসাইন, বিপ্লব চাকী, নিমাই গাংগুলি ও শামসুজ্জামান হীরা।
সারাদেশের ৫০ জেলার দেড় শতাধিক উপজেলার ৩৫০ জন প্রতিনিধির উপস্থিতিতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন গত কমিটির নির্বাহী সদস্য লাকী আক্তার । সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট পেশ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, সাংগঠনিক রিপোর্ট দেন সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হোসেন খান।কাউন্সিল অধিবেশনে কৃষি ও কৃষকের সমস্যা নিরসনে ৩৯টি প্রস্তাব গৃহীত হয়। কাউন্সিল অধিবেশনে রিপোর্টের উপর.. জন প্রতিনিধি আলোচনা করেন।
কাউন্সিল অধিবেশনে শক্তিশালী কৃষক সংগঠন ও আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এ সময়ে সম্মেলনে আগত বিদেশী অতিথিরা কাউন্সিলে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। পরে বিভিন্ন সাংগঠনিক বিষয় বিশদ আলোচনা শেষে ৫৫ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়।
উল্লেখ্য নিম্নলিখিত দাবিসমূহ সামনে রেখে কৃষক সমিতির চতুর্দশ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
(১) ভূমিহীন কৃষকসহ প্রকৃত উৎপাদক কৃষককে কৃষি কার্ড দাও। (২) ফসলের লাভজনক দাম চাই। ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র চালু করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় কর। পর্যাপ্ত সংখ্যক খাদ্য গুদাম ও হিমাগার নির্মাণ কর। (৩) জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা ও ফসলের সর্বোচ্চ উৎপাদন নিশ্চিত করতে হবে। সরকার নির্ধারিত দামে কৃষকদের চাহিদামতো সার দিতে হবে। কৃষি উপকরণের বাজার সিন্ডিকেট ভাঙো। বিএডিসি সক্রিয় কর। কৃষক সমবায় বাজার ব্যবস্থা চালু কর। পল্লী রেশন ও শস্য বীমা চালু কর। ষাটোর্ধ্ব কৃষকদের পেনশন চালু কর। (৪) সাশ্রয়ী মূল্যে ভেজালমুক্ত পোল্ট্রি, মৎস্য, পশুখাদ্য ও ঔষধ দিতে হবে। (৫) অবিলম্বে আমূল ভূমি সংস্কার কর ও ভূমি ব্যবহার নীতিমালা কার্যকর কর। (৬) অপরিকল্পিত নদী খনন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদী-খাল-বিল দখল বন্ধ কর। নদী খননের মাটি দিয়ে কৃষি জমি ভরাট করা বন্ধ কর। নদী সিকস্তি অঞ্চলসহ সারাদেশে ভূমিহীন কৃষকের মাঝে খাস জমি বিতরণ কর, জেগে ওঠা জমির দিয়ারা জরিপ করে সিলিং অনুযায়ী প্রকৃত কৃষকদের জমি ফেরত দাও। (৭) বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ ব্যবস্থায় অনিয়ম-হয়রানি-দুর্নীতি বন্ধ কর। (৮) উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ও কৃষক বাঁচাতে পরিকল্পিত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ কর। লবণাক্ততা থেকে কৃষি জমি ও মানুষকে রক্ষা কর। (৯) হাওর অঞ্চলের পরিবেশ, প্রকৃতি, জীববৈচিত্র ও কৃষি রক্ষা কর। কৃষকদের জীবন- জীবিকা নিশ্চিত কর। প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার অধিকার দাও। (১০) ভূমি অফিস ও পল্লী বিদ্যুতের অনিয়ম-হয়রানি-দুর্নীতি বন্ধ কর।