সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইউরোপীয় ২৮টি দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর ব্যাপারে ইইউর আগ্রহ আছে।
ইইউ আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না, জানতে চাইলে বাংলাদেশে ইইউ ডেলিগেশন প্রধান চার্লস হোয়াইটলি গতকাল রবিবার কালের কণ্ঠকে বলেছেন, নির্বাচন ‘যথেষ্ট অংশগ্রহণমূলক’ এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা (নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নিয়ে) হলে হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ (ইইউর পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেফ বোরেল) নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারের দেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনের আরো বেশ কয়েক মাস বাকি, তাই কে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে আর কে করবে না, সে সিদ্ধান্ত এখনই নেওয়া সম্ভব নয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ মন্ত্রীরা বিভিন্ন বৈঠকে আগামী নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা বলছেন। এই অবস্থানকে বিদেশিরা স্বাগত জানিয়েছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় দলগুলো অংশ নিলেও পর্যবেক্ষক মিশন পাঠায়নি ইইউ। এর কারণ হিসেবে তখন ইইউ বাজেট ঘাটতি ও অন্য দেশের নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছিল। প্রতিবছর বিশ্বের অনেক দেশে নির্বাচন হয়। সব নির্বাচন ইইউ পর্যবেক্ষণ করে না। ইইউ ওই নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠালেও বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছিল।
ইউরোপীয় এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের ওয়েবসাইটে বিদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর উদ্দেশ্য, প্রক্রিয়ার বিশদ তথ্য রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে—নির্বাচন পর্যবেক্ষণ শুধু এক দিনের কাজ নয়। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মান ক্রমাগত পুনর্মূল্যায়ন ও উন্নত করতে হয়। ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সবার জন্য সমান সুযোগ), প্রার্থীদের মধ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশ ও সমবেত হওয়া, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান এবং একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন নির্বাচন পরিচালনা সংস্থা ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন অসম্পূর্ণ। একটি প্রাণবন্ত নাগরিকসমাজ এবং বৈচিত্র্যময় গণমাধ্যমও এ ক্ষেত্রে অপরিহার্য পূর্বশর্ত।
এরপর ইইউ হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একজন সদস্যকে পর্যবেক্ষক মিশনের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। ওই মিশনের সদস্য হিসেবে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয় ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে। পর্যবেক্ষক মিশন তাদের পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রতিবেদন ইইউর কাছে উপস্থাপন করে। এ ছাড়া স্থানীয় কর্তৃপক্ষকেও তাদের পর্যবেক্ষণ জানায়।