এই হাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার। গত দুই মাসে কমপক্ষে ৫০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। বাড়ি থেকে দোকানপাট—সর্বত্র চুরির হিড়িক। রেহাই পাননি সাংবাদিক। আতঙ্ক উপজেলাজুড়ে। দিনেও ঘরের দরজা খোলা রাখতে ভয়। মুহূর্তের জন্য কেউ ঘর খালি রাখতে চায় না।
বাড়ি ভাড়ার কথা বলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহানের পৌর এলাকার রাধানগরের বাসায় দিনের বেলায় চুরি হয়। এ ঘটনায় অবশ্য কয়েক ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করে পুলিশ। শনাক্ত করেছে জড়িত নারীসহ সংশ্লিষ্টদের।
চুরির ঘটনা ঘটে কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবুর রাধানগরের বাড়িতেও। রাতে এ ঘটনায় গ্রিল কেটে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন সেট, ক্যামেরাসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার মালপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার সপ্তাহ পেরোলেও কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে মোটরসাইকেল চুরি হয় সাংবাদিক এম এ জলিলের। রাধানগর এলাকায় প্রাইভেট পড়তে এসে নতুন একটি বাইসাইকেল খোয়ান শিক্ষার্থী মো. শাকিল। প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে কৃষকের গরুসহ অন্যান্য জিনিস। চলতি সপ্তাহে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতীয় নাগরিক স্বপন পালের মোবাইল ফোনসেট চুরি হয়।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনসুর মিশনের ভাই সোহাগ হাজারীর রাধানগরের বাড়িতে দিনদুপুরে ঢুকে ফ্রিজ থেকে মাছ ও মাংস নিয়ে যায় চোর।
একের পর এক ঘটনায়ও পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। মনোরমা শিল্পালয়ে মালিক আশিষ বিশ্বাস জানান, তাঁর দোকান থেকে ৪৪ ভরি সোনা খোয়া গেছে। দিন-রাত জনসমাগম থাকা এলাকায় তাঁর দোকান হওয়া সত্ত্বেও এ ধরনের চুরিতে তিনি বেশ হতবাক। এ বিষয়ে তিনি থানায় মামলা করেছেন।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান, ঘটনার পর তাঁরা কালো পতাকা উড়ানো এবং দোকান বন্ধ রাখার মতো কর্মসূচি দিতে চেয়েছিলেন। তবে একজন জনপ্রতিনিধির অনুরোধে সেই আন্দোলন থেকে সরে এসেছেন। এখনো কোনো মালপত্র উদ্ধার না হওয়ার তাঁরা আতঙ্কে আছেন।
আখাউড়া থানার ওসি মো. আসাদুল ইসলাম জানান, চুরির ঘটনা অনেক নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। একটি ঘটনায় চোরাই সোনাও উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তী ঘটনায় মালপত্র উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।