গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের দায়ে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে ১২ বছর সাজা দেন। আর কম্পানির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদসহ ৪৫ আসামিকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড। ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম গত ১২ মে এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে দণ্ডিতদের ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়।
আইন অনুযায়ী অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের সর্বোচ্চ শাস্তি ১২ বছরের কারাদণ্ড। ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীনকে সেই দণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ২০০ কোটি টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ বছরের সাজা দেওয়া হলেও হারুন-অর-রশীদকে চার বছরের কারাদণ্ড এবং সাড়ে ৩ কোটি টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। চার বছরের দণ্ড এ আইনে সর্বনিম্ন সাজা। এ রায়ের বিরুদ্ধে গত বছর ৯ জুন হারুন-অর-রশিদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহন করলেও তাকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।
পরে ২৯ জুন সে জামিন আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত তাকে জামিন না দিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। সে প্রতিবেদন দেখে গত ৩০ আগস্ট তাকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। সে জামিনের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়েছেন উচ্চ আদালত।
২০০০ সালে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড নামে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি দিয়ে এই গ্রুপের যাত্রা শুরু। পরের বছরে বিমান পরিবহন, আবাসন, মিডিয়া, পাটকল, কোল্ড স্টোরেজ, বনায়নসহ বিভিন্ন খাতে ৩৪টি কোম্পানিতে ডেসটিনির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়। পরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে চার হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে এ কম্পানির বিরুদ্ধে।
এর মধ্যে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল ডেসটিনি। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। তাতে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন। এ অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই কলাবাগান থানায় এ মামলা করে দুদক। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে গত ১২ মে এ মামলার রায় হয়।