1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :

বাংলাদেশে অকালমৃত্যুর ২০ শতাংশ বায়ুদূষণে : বিশ্বব্যাংক

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩
বাংলাদেশে প্রতিবছর মোট অকালমৃত্যুর প্রায় ২০ শতাংশই বায়ুদূষণের কারণে হয় বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বায়ুদূষণের এখন একটি অন্যতম উৎস হচ্ছে অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ। সঠিক পদ্ধতি না মানার কারণে প্রতিনিয়তই বাড়ছে বায়ুদূষণ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলেবিশ্বব্যাংক আয়োজিত ‘স্ট্রাইভিং ফর ক্লিন এয়ার পলিউশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে এই তথ্য জানানো হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষ ১০ শহরের মধ্যে ৯টিই দক্ষিণ এশিয়ার। এর মধ্যে ঢাকা অন্যতম। এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বায়ুদূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি স্ট্রোকের রোগীও বাংলাদেশে থাকবে বলেও দাবি করছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি মূলত সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার ও বিভিন্ন দপ্তর থেকে পাওয়া তথের ভিত্তিতে এই গবেষণা চালিয়েছে।

প্রতিবেদন বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এবং দরিদ্র অঞ্চলগুলোতে সূক্ষ্ম কণা, যেমন: কাচ এবং ছোট ধূলিকণার ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানের চেয়ে ২০ গুণ বেশি। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবছর আনুমানিক ২০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু ঘটে। এই ধরনের চরম বায়ুদূষণের সংস্পর্শে এলে শিশুদের মধ্যে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের প্রভাব দেখা যায়, যা স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় বৃদ্ধিসহ দেশের উৎপাদনক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং কর্মঘণ্টা নষ্ট করে।ঢাকার দূষিত বায়ুর ৩০ শতাংশ আসে ভারত থেকে 

বিশ্বব্যাংকের এই গবেষণা বলছে, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশের ওপর দিয়ে একই মেঘমালা উড়ে যায়। ওই মেঘের মধ্যে দূষিত বায়ু গিয়েও আশ্রয় নিচ্ছে, যা এই দেশগুলোতে দূষিত বায়ু ছড়িয়ে দিচ্ছে। নিজ দেশের ভেতরের দূষিত বায়ুর পাশাপাশি অন্য দেশগুলো থেকে আসা বায়ুর কারণে মানুষ নানা রোগবালাই ও কষ্টে ভুগছে। বাংলাদেশের ঢাকা শহরের দূষিত বায়ুর ৩০ শতাংশ আসে পাশের দেশ ভারত থেকে। ফলে বায়ুদূষণ রোধে দেশগুলোর মধ্যে আন্ত সম্পর্ক বাড়াতে হবে। নিজ দেশের ভেতরের বায়ুদূষণের উৎস বন্ধেও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গীকার দরকার।

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক জানান, বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর এর বড় প্রভাব রয়েছে। সঠিক পদক্ষেপ এবং নীতির মাধ্যমে বায়ুদূষণ মোকাবেলা করা সম্ভব। বাংলাদেশ এরই মধ্যে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালার অনুমোদনসহ বায়ুর মান ব্যবস্থাপনার উন্নতির জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। শক্তিশালী জাতীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি, বায়ুদূষণ রোধে আন্ত সীমান্ত সমাধান গুরুত্বপূর্ণ হবে। নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে বায়ুদূষণ কমাতে সাহায্য করছে বলেও তিনি মনে করেন। তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় বায়ুদূষণের এক-তৃতীয়াংশ শহরের মধ্যে উৎপন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক সিসিলি চিচিলি ফিরুম্যান জানান, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো যদি সমন্বিত পন্থা অবলম্বন করে তবে বায়ুদূষণের উদ্বেগজনক মাত্রা কমাতে পারে। একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে এই দেশগুলো দ্রুত ভালো ফল পেতে পারে। বাংলাদেশ এবং আরো কয়েকটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বায়ুর মান উন্নত করতে নীতি গ্রহণ করেছে।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় নগরবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিবেশদূষণের অন্যতম কারণ হলো অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ। ফলে প্রতিনিয়ত গ্রাম থেকে শহরে দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন যেসব অবকাঠামোগত নির্মাণ হয় তার ৬৫ শতাংশই সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ। এসব কাজে যদি সঠিক নীতিমালা মানা হয় তাহলে দূষণ অনেকাংশে কমবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘২০১৫-১৬ সালে একটি জরিপে আমরা দেখেছি ঢাকা শহরের ৩০ শতাংশ শিশু বায়ুদূষণের কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এখন সে সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। সরকার শুধু প্রকল্প নেয়—দুই লেনের সড়কে চার লেন করে, ফ্লাইওভার বানায়, কিন্তু বায়ুদূষণ কমানোর জন্য তেমন কোনো প্রকল্প দেখছি না।’

তিনি বলেন, ‘যানজট একটি বড় সমস্যা। এতে যেমন সময়ের অপচয় হয় এবং অর্থেরও ব্যয় হয়। সরকার যদি ভিন্ন সময়ে অফিস-আদালত শুরুর প্রক্রিয়া হাতে নেয় তাহলে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ যানজট কমানো সম্ভব।’

বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘ঢাকার বায়ু মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে। আমি নিজে গুলশানের একটি পার্কে হাঁটতে যাই; কিন্তু বায়ুদূষণের কারণে নিয়মিতভাবে ঠাণ্ডা-কাশিতে ভুগছি। ঢাকার ভেতরের বায়ুদূষণ বন্ধ করার পরও বায়ু নির্মল হবে না। কারণ ভারত থেকে দূষিত বায়ু ভেসে আসা ঠেকানো তো ঢাকা সিটি করপোরেশনের পক্ষে সম্ভব নয়।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন, ইউজিসির সদস্য মুহাম্মদ আলমগীর, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল হামিদ প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews