বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও একাডেমিক ভবন ঘুরে দেখা গেছে, হলগুলোতে নেই পাউডার সিলিন্ডার, স্মোক ও হিট ডিটেকশন সিস্টেম, ফায়ার অ্যালার্ম, ফায়ার লিফট, ইমার্জেন্সি লাইটের মতো অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা। নেই জরুরি নির্গমন সিঁড়ি। বিজয় একাত্তর হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, জগন্নাথ হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও শামসুন নাহার হলে ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার থাকলেও সেগুলোর মেয়াদ ছিল না। বেগম রোকেয়া, কুয়েত মৈত্রী ও কবি সুফিয়া কামাল হলে ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার ঠিকঠাক পাওয়া গেছে। ছেলেদের বাকি ৯টি হলে কোনো ধরনের অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা নেই।
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী সউদ আহমেদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে উঁচু ইমারত গড়ে উঠলেও শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবন বাঁচাতে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি, যেন বঙ্গবাজারেরই প্রতিচ্ছবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কোনো ধরনের ফায়ার স্প্রিংকলার কিংবা ফায়ার হাইড্র্যান্ট ব্যবস্থা নেই। আবার যত অগ্নিনির্বাপক কার্বন ডাই-অক্সাইড সিলিন্ডার আছে সেগুলোর বেশির ভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ।
বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকায় এই কয়েক বছরে লাগা সব আগুনে যত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, ঢাবির যেকোনো এক হলে আগুন লাগলে তার চেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটবে। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন করা আছে, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এগুলো নষ্ট। আবার এর ব্যবহার পদ্ধতিও জানেন না শিক্ষার্থীরা। বহুতল ভবনগুলোতে জরুরি নির্গমনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে হলগুলো আসলে একপ্রকার মৃত্যুকূপই।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঢাকা জোনের উপসহকারী পরিচালক বজলুর রশিদ বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে। যেকোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা করি। কিছু দিন আগে আমরা কলা ভবন এলাকায় ফায়ার ড্রিল করেছি। শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছি।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপণের বিষয়ে আমাদের সক্ষমতা ও সামর্থ্য দুটিই খুব দুর্বল। তবে একটি জায়গায় সবল করা যায় এবং সে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করে দিচ্ছি। গত বুধবারই এই বিষয়ে নোটিশ দিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরামর্শ দিয়েছি। সবাইকে যত্নশীল ও সতর্ক থাকতে বলেছি। বিদ্যুৎ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ও গ্যাসের লাইন ব্যবহারে সচেতন হওয়া উচিত। সচেতনতা ও সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় নিয়েও পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’